সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪

‘কিলার ড্রোন’

জয়স্টিকের মতো একটি ডিভাইস নাড়িয়ে ড্রোন নিয়ন্ত্রণ করছেন একজন মানুষ, এত দিন এমনটাই দেখতে পাওয়া যেত। তবে এবার পাওয়া গেল ভিন্ন খবর। কোনো নির্দেশনা ছাড়াই প্রথমবারের মতো একজন মানুষকে তাড়া করে হামলা চালিয়েছিল অস্ত্রযুক্ত ভয়ংকর এক ‘কিলার ড্রোন’। জাতিসংঘের নিরাপত্তা কাউন্সিলের প্রতিবেদনের বরাত দিয়ে এমনটাই জানিয়েছে নিউ সায়েন্টিস্ট সাময়িকী।

 

গত বছর লিবিয়ায় সংঘর্ষকালের ঘটনা এটি। ২০২০ সালের মার্চের সে ঘটনায় কারগু-২ মডেলের একটি কোয়াডকপ্টার নিজে নিজেই একজন মানুষের ওপর হামলা করে। সে সময় লিবিয়ান ন্যাশনাল আর্মির খলিফা হাফতারের নেতৃত্বাধীন একদল সৈনিকের সঙ্গে লিবিয়ার সেনাবাহিনীর সংঘর্ষ চলছিল। পিছু হটার সময় হাফতারের এক সৈনিককে আঘাত করে ড্রোনটি।

নিউইয়র্ক পোস্টের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সে সময় ড্রোনটি স্বয়ংক্রিয় মোডে ছিল। অর্থাৎ মানুষের নিয়ন্ত্রণে ছিল না। সাধারণত সন্ত্রাসবিরোধী অভিযানে ব্যবহার করা হয় তুরস্কের তৈরি কারগু-২ মডেলের ড্রোন।

 

জাতিসংঘের নিরাপত্তা কাউন্সিলের লিবিয়াবিষয়ক বিশেষজ্ঞ প্যানেলের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ‘প্রাণঘাতী স্বয়ংক্রিয় অস্ত্রটি লক্ষ্যে হামলা করার জন্য প্রোগ্রাম করা। এর জন্য ডেটা আদান–প্রদানেরও প্রয়োজন নেই। অর্থাৎ একদম সত্যিকার “ফায়ার, ফরগেট অ্যান্ড ফাইন্ড” (নির্দেশনা ছাড়া লক্ষ্যে হামলা করার সক্ষমতা)।’

 

ওই প্রতিবেদনে মানুষবিহীন ড্রোনবিষয়ক নিরাপত্তা উপদেষ্টা জ্যাক ক্যালেনবর্নের উদ্ধৃতি দেওয়া হয়েছে। তিনি বলেছেন, ‘কোনো নির্দেশনা ছাড়া মানুষের ওপর ড্রোনের হামলার এটা সম্ভবত প্রথম ঘটনা।’

 

তবে স্বয়ংক্রিয় ড্রোনের ভবিষ্যৎ নিয়েও শঙ্কা প্রকাশ করেছেন ক্যালেনবর্ন। তিনি প্রশ্ন রাখেন, ‘কোনো কিছু শনাক্ত করার ব্যবস্থা কতটা ভঙ্গুর? কতবার এটা লক্ষ্য শনাক্তে ভুল করবে?’

 

আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা হিউম্যান রাইটস ওয়াচ তথাকথিত ‘কিলার রোবট’ বন্ধের আহ্বান জানিয়েছে। সম্পূর্ণ স্বয়ংক্রিয় অস্ত্রের উদ্ভাবন, উৎপাদন এবং ব্যবহারে আগে থেকে নিষেধাজ্ঞা জারির জন্য প্রচারণাও চালাচ্ছে সংস্থাটি।

 

সম্পর্কিত পোস্ট