সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪

ই-কমার্স নিরাপদ ডট কমের সিইও শাহরিয়ার গ্রেপ্তার

  • নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রতারণার মাধ্যমে টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগে ই-কমার্স কোম্পানী নিরাপদ ডট কমের সিইও শাহরিয়ার খানকে গ্রেফতার করেছে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) গোয়েন্দা বিভাগের (ডিবি) সাইবার অ্যান্ড স্পেশাল ক্রাইম বিভাগ।

মঙ্গলবার (১৩ মঙ্গলবার ২০২১) সাইবার অ্যান্ড স্পেশাল ক্রাইম বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার মোহাম্মদ শরীফুল ইসলাম সাংবাদিকদের জানান, গত রোববার (১১ জুলাই ২০২১) রাজধানীর শান্তিনগর এলাকা থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়।

তিনি বলেন, ‘প্রতারণার শিকার জনৈক ইশতিয়াক আহমেদ বাদী হয়ে আদাবর থানায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে একটি মামলা করেন। থানা পুলিশের পাশাপাশি ডিবির সাইবার ক্রাইম বিভাগ এই মামলার ছায়া তদন্ত শুরু করে। তদন্তে অভিযোগের সত্যতা পাওয়ায় গত রোববার রাজধানীর শান্তিনগর এলাকায থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়।’

মোহাম্মদ শরীফুল ইসলাম জানান, গ্রেফতারের সময় তার হেফাজত থেকে প্রতারণার কাজে ব্যবহৃত ৫টি কম্পিউটার, ২টি ল্যাপটপ, ২টি হার্ড ডিস্ক, বিভিন্ন ব্যাংকের ১৩টি চেক বই, ১৩টি ডেভিড ও ক্রেডিড কার্ড, ২৩টি সিম কার্ড, সার্ভারের তথ্য ও অন্যান্য কাগজপত্র উদ্ধার করা হয়।

এই কর্মকর্তা আরো জানান, ‘গ্রেফতারকৃত শাহরিয়ার ২০২০ সালের আগস্ট মাসে নিরাপদ ডট কম নামে একটি অনলাইন ভিত্তিক ই-কমার্স সাইট খুলেন। পরে বিভিন্ন চটকদার বিজ্ঞাপনের মাধ্যমে সাধারণ গ্রাহকদের আকৃষ্ট করে তাদের কাছ থেকে একটি পেমেন্ট গেটওয়ের (এসএসএল কমার্স) মাধ্যমে অগ্রিম অর্থ হাতিয়ে নেন। তারা ৫০% ডিসকাউন্টে মোবাইল ফোন সেট, কম্পিউটার, ল্যাপটপ, ফ্রিজ, ওভেনসহ অন্যান্য ইলেক্ট্রনিক্স আইটেম ৩০ দিনের মধ্যে হোম ডেলিভারি দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে গ্রাহকদের প্রলোভিত করে।’

তিনি জানান, এই ই-কমার্স সাইটের গ্রাহক সংখ্যা প্রায় ৪ হাজার এবং এক মাসের মধ্যে তারা প্রায় ১২ হাজার অর্ডার পায়। এর মাধ্যমে প্রায় ৭ থেকে ৮ কোটি টাকা তার ব্যাংক হিসাবে যুক্ত হয়। যারা পণ্য অর্ডার করেছেন, তাদের মধ্যে বেশিরভাগই ছাত্র ও অল্প বেতনের চাকরিজীবী। প্রাথমিক অবস্থায় তারা কিছু পণ্য ডেলিভারি করে এবং সেই গ্রাহকদের দিয়ে তাদের পেজে পজিটিভ রিভিউ পোস্ট করিয়ে সাধারণ গ্রাহকদের মধ্যে বিশ্বাস স্থাপন করে।

পুলিশ জানায়, পরবর্তীতে অধিক সংখ্যায় অর্ডার এবং অগ্রিম অর্থ পেলে তারা পণ্য ডেলিভারি না দিয়ে গ্রাহকদের সঙ্গে প্রতারণা শুরু করে। অনেক দিন পেরিয়ে গেলে গ্রাহকরা যখন বুঝতে পারেন, তারা প্রতারণার শিকার হয়েছেন, তখন বিভিন্ন সামাজিক মাধ্যম ও মিডিয়ার মাধ্যমে এর প্রতিকার দাবি করতে থাকেন। যারা চাপ প্রয়োগ করতে পেরেছেন, তাদের টাকা রিফান্ডের কথা বলে ব্যাংক চেক প্রদান করলেও টাকা উত্তোলন করতে পারেননি। বারবার চেক ডিজঅনার হওয়ার অভিযোগ আসতে থাকলে, এই প্রতারক গ্রাহকদের সঙ্গে সকল ধরনের যোগাযোগ বন্ধ করে দিয়ে লাপাত্তা হয়ে যান। এ ঘটনায় ভুক্তভোগীদের পক্ষে জনৈক ইশতিয়াক আহমেদ বাদী হয়ে আদাবর থানায় ওই মামলা দায়ের করেন।

 

সম্পর্কিত পোস্ট