- বিশেষ প্রতিনিধি
১৪ বছরের কম বয়সী শিশুকে কাজে নিয়োগের ক্ষেত্রে আইনে নিষেধাজ্ঞা থাকলেও মানছেনা অনেক শিল্পপ্রতিষ্ঠান। দেশে করোনায় পরিস্থিতিতে শিশু শ্রমিকের সংখ্যা বেড়েছে।
মহামারির আগে দেশে উল্লেখযোগ্য শিশু শ্রমিক থাকলেও তারা সরকারি বা এনজিও পরিচালিত স্কুলেও পড়াশুনা করতো। কিন্তু মহামারিতে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান দীর্ঘ সময় বন্ধ থাকায় এবং পরিবারে আর্থিক অনটনের কারণে দরিদ্র এই শিশুরা পুরো সময় কাজে নিয়োজিত হয়েছে, ফলে স্কুলে ফিরে যাওয়া তাদের পক্ষে আর সম্ভব নয়।
মহামারি করোনার কারণে নাজমা আক্তার নামে এক নারী কাজ হারিয়েছেন। খোঁজও নিচ্ছেন না তার স্বামী। তাই কোনো উপায় না পেয়ে মগবাজার রেললাইনের পাশে পসরা নিয়ে বসেছে নাজমা। সাথে আছে ছোট্ট শিশু আফছানাও।
বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর জরিপে জানা যায়, ২০১৬ সালের ১ মার্চ পর্যন্ত দেশে সাড়ে ৩৪ লাখ শিশু কর্মরত ছিল। এর মধ্যে প্রায় ১৭ লাখ শিশুর কাজ শিশু শ্রমের আওতায় পড়ে। আর ঝুঁকিপূর্ণ কাজে নিয়োজিত ছিল ১২ লাখ ৮০ হাজার শিশু।
২০২০ সালের পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের অধীনে এবং আইএলওর অর্থায়নে দেশে শিশু শ্রম নিয়ে আরেকটি জরিপ হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু মহামারির কারণে এ কাজটি শুরু হয়নি।
বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা অ্যাকশন ফর সোশ্যাল ডেভেলপমেন্টের উদ্যোগে ‘কোভিড-১৯-এর প্রভাবে ঢাকায় কর্মরত শ্রমজীবী শিশুদের অবস্থা যাচাই’ শীর্ষক জরিপ থেকে জানা যায়, করোনায় অনেক শিশু পেশা পরিবর্তন করেছে। যেসব শিশু আগে কাজ করত এমন ৩৬ দশমিক ৬ শতাংশের এখন কাজ নেই। আর এমন ৩১ শতাংশের ওপর শিশুগুলোর পরিবার নির্ভরশীল। এদের মধ্যে ৩২ শতাংশ মহামারিতে কোনো সরকারি-বেসরকারি সাহায্যও পায়নি।
বাংলাদেশ শিশু অধিকার ফোরামের পরিচালক আবদুছ সহিদ মাহমুদ বলেন, ২০২১ সালের মধ্যে ঝুঁকিপূর্ণ শিশুশ্রম মুক্ত বাংলাদেশ গড়তে চাইলেও সরকার তা পারবে না। শিশুশ্রম বন্ধে সরকার ২৮৪ কোটি টাকার প্রকল্পও গ্রহণ করেছিল। উদ্দেশ্য ছিল, ১ লাখ শ্রমিককে ঝুঁকিপূর্ণ শ্রম থেকে সরিয়ে আনা, এটি বাস্তবায়ন করার কথা ছিল বিভিন্ন বাছাইকৃত এনজিওর।
২০২১ সালে এই প্রকল্পের কাজ শেষ হওয়ার কথা থাকলেও এখনো এনজিওর বাছাইয়ের কাজই শেষ হয়নি।