সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪

লঞ্চে আগুন দুর্ঘটনা না নাশকতা তদন্তে বেরিয়ে আসবে: তথ্যমন্ত্রী

  • নিজস্ব প্রতিবেদক

লঞ্চ দুর্ঘটনা নিয়ে বিএনপি ও সমমনা দলগুলোর বক্তব্য তাদের রাজনৈতিক দেউলিয়াপনার বহিঃপ্রকাশ বলে মন্তব্য করেছেন তথ্যমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ।

শনিবার (২৫ ডিসেম্বর ২০২১) সন্ধ্যায় ঢাকার রামপুরায় বিটিভি ভবনে বাংলাদেশ টেলিভিশনের ৫৮ বর্ষে পদার্পণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য দানের পূর্বে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী এ কথা বলেন।

গত বৃহস্পতিবার রাতে ঝালকাঠির সুগন্ধা নদীতে যাত্রীবাহী লঞ্চে অগ্নিকাণ্ডে হতাহতের ঘটনাকে বিএনপি নেতারা ‘সরকারের দুঃশাসনের ফল’ এমন মন্তব্য প্রসঙ্গে তিনি এ কথা বলেন।

দুর্ঘটনাটিকে অত্যন্ত দুঃখজনক বলে অভিহিত করে নিহতদের আত্মার শান্তি এবং আহতদের দ্রুত আরোগ্য কামনা করে তথ্যমন্ত্রী বলেন, এ ক্ষেত্রে তদন্ত হচ্ছে এবং এটি দুর্ঘটনা না নাশকতা সেটি তদন্তে বেরিয়ে আসবে।

যারা দোষী সাব্যস্ত হবে, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ইতিমধ্যে নিহতদের পরিবারের জন্য নৌপরিবহন মন্ত্রণালয় ও জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে প্রাথমিক সাহায্য দেওয়া এবং আহতদের সুচিকিৎসা নিশ্চিত করা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী বিষয়টি মনিটর করছেন।

‘কিন্তু এ বিষয়ে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল সাহেব এবং মান্না সাহেবসহ অন্য নেতারা যেসব বক্তব্য রাখছেন, সেগুলো তাঁদের রাজনৈতিক দেউলিয়াত্ব থেকেই বলছেন’—বলেন ড. হাছান মাহমুদ। তাহলে উন্নত দেশগুলোসহ পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে এবং এ দেশে আগেও যেসব দুর্ঘটনা ঘটেছে, সে বিষয়ে তাঁরা কী বলবেন প্রশ্ন রেখে তিনি বলেন, এর সাথে তো রাজনীতির কোনো সম্পর্ক নেই।

হাছান মাহমুদ বলেন, ‘সব কিছুর সাথে রাজনীতি নিয়ে আসা অবান্তর। কেউ যদি বলেন, মান্না সাহেব ছয়বার দলবদল করেছেন, সেটিও কি সুশাসনের অভাবে! মির্জা ফখরুল সাহেবসহ অন্য বিএনপি নেতারাও যাঁরা খোলস বদলেছেন, সেটিও কি সুশাসনের অভাবে! এসব বক্তব্য রাজনৈতিক দেউলিয়াপনার বহিঃপ্রকাশ ছাড়া কিছু নয়।’

বিটিভির ৫৮ বছরে পদার্পণ উপলক্ষে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেন, ‘বাংলাদেশ টেলিভিশন ১৯৬৪ সালে যাত্রা শুরু করেছিল। এই উপমহাদেশে তথা সমগ্র বিশ্বে এটি প্রথম বাংলা ভাষার টিভি চ্যানেল। ভারতেও টেলিভিশন চালু হয় আমাদের পরে। সুতরাং বিটিভি একটি প্রাচীন চ্যানেল।

প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার হাত ধরে দেশে এখন ৪৫টি টিভি চ্যানেলের লাইসেন্স দেওয়া আছে, ৩১টি টিভি চ্যানেল সম্প্রচারে আছে, বাকিগুলো সম্প্রচারের অপেক্ষায়।’

সম্প্রচারমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশে বেসরকারি টেলিভিশনগুলো যাঁরা পরিচালনা করছেন এবং প্রথিতযশা যেসব টিভি সাংবাদিকরা রয়েছেন, তাঁদের অনেকেরই হাতেখড়ি বাংলাদেশ টেলিভিশনে। তাই বিটিভি হচ্ছে টেলিভিশন চ্যানেলের আঁতুড়ঘর। এখন বিটিভির চারটি চ্যানেল সম্প্রচারে আছে এবং আগামী সংসদ নির্বাচনের আগেই আমরা আরো ছয়টি চ্যানেল চালু করতে যাচ্ছি।

বিটিভি, বিটিভি চট্টগ্রাম এবং সংসদ বিটিভি-এই তিনটি টেরেস্ট্রিয়াল চ্যানেল কেবল নেটওয়ার্ক ছাড়া এবং কেবল নেটওয়ার্কেও সারা দেশে সবাই দেখতে পায়। একই সাথে মোবাইল অ্যাপসের মাধ্যমে সারা বিশ্বে সবাই দেখতে পায়।

এ সময় দেশ গঠনে এবং আবহমান বাংলার সংস্কৃতি লালনের জন্য বাংলাদেশ টেলিভিশনে নানা অনুষ্ঠান প্রচারিত হয়ে আসছে এবং আজকে এইচডি সম্প্রচার উদ্বোধনসহ বিটিভিকে আরো এগিয়ে নেওয়ার নানা পরিকল্পনা রয়েছে বলে জানান তথ্যমন্ত্রী।

পরে মন্ত্রী হাছান মাহমুদ বাংলাদেশ টেলিভিশনের ৫৮তম বর্ষে পদার্পণ উপলক্ষে বিটিভি ভবনে বঙ্গবন্ধু কর্নার, রংতুলিতে বঙ্গবন্ধু চিত্রকর্ম ও এইচডি সম্প্রচার কার্যক্রম উদ্বোধন করেন।

বাংলাদেশ টেলিভিশনের মহাপরিচালক সোহরাব হোসেনের সভাপতিত্বে তথ্য ও সম্প্রচার সচিব মো. মকবুল হোসেন বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন।

মন্ত্রণালয়সংশ্লিষ্ট দপ্তর প্রধানগণ, বিটিভির সাবেক মহাপরিচালক ম. হামিদ, বেসরকারি টেলিভিশনগুলোর পরিচালকবৃন্দ, দেশবরেণ্য শিল্পীরা অনুষ্ঠানে অংশ নেন।

সম্পর্কিত পোস্ট