সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪

সৈয়দ আশরাফ ছিলেন সজ্জন ও সৃজনশীল, দুঃসময়ে ছিলেন অকুতোভয় : হানিফ

  • বিশেষ প্রতিনিধি

সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম বাংলাদেশের রাজনীতিতে একজন অত্যন্ত সজ্জন, সৃজনশীল মানুষ ছিলেন। তার আচরণ, কথাবার্তা ছিল পরিশিলীত। দুঃসময়ে তিনি ছিলেন অকুতোভয়।

সোমবার (৩ জানুয়ারি ২০২২) আওয়ামী লীগের প্রয়াত সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশরাফুল ইসলামের তৃতীয় মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল আলম হানিফ এসব কথা বলেন।

হানিফ বলেন, রাজনৈতিক অঙ্গনে কখনও কারও মনে আঘাত দিয়ে কথা বলা, কাউকে কোনো কটূক্তির নজির ছিল না। একজন মানুষের মধ্যে যে সভ্য আচার-আচরণ, সেগুলো সৈয়দ আশরাফের কাছ থেকে অনুকরণীয় ছিল।

জাতির অনেক ক্রান্তিলগ্নে সৈয়দ আশরাফের ভূমিকা চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবে। সব শ্রেণি ও পেশার মানুষের কাছে অত্যন্ত জনপ্রিয় ছিলেন। তিনি সারাজীবন অনুকরণীয় হয়ে থাকবেন।

বিশেষ করে ওয়ান ইলেভেনের সময় ২০০৭ সালে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় যখন দুই নেত্রীকে গ্রেপ্তারের মধ্য দিয়ে দেশের রাজনীতিতে যখন ষড়যন্ত্র শুরু হয়েছিল সেই সময়ে সৈয়দ আশরাফের ভূমিকা বাংলাদেশের ইতিহাসে স্মরণীয় হয়ে থাকবে।

তিনি বলেন, ২০১৩ সালের ৫ মে হেফাজতের তাণ্ডবের সময় সৈয়দ আশরাফের কঠোর ও বলিষ্ঠ নেতৃত্ব হেফাজতের ভীত কাঁপিয়ে দিয়েছিল। সৈয়দ আশরাফুল ইসলামের সময়োপযোগী দায়িত্বশীল কর্মকাণ্ডের মধ্যে রাজনীতিতে সুদৃঢ় অবস্থান তৈরি করেন।

মাহবুবউল আলম হানিফ বলেন, নির্বাচন কমিশন গঠনে সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতার কারণে রাষ্ট্রপতি রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সংলাপের আহবান করেছেন। বিএনপি যখন ক্ষমতায় ছিল তখন তারা একক ক্ষমতাবলে নির্বাচন কমিশন গঠন করেছিল। কারও সঙ্গে আলাপের প্রয়োজনীয়তা অনুভব করেনি।

কিন্তু আমরা গণতন্ত্রে বিশ্বাস করি বিধায় রাষ্ট্রপতি সব রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলাপ আলোচনা করেই রাজনৈতিক দলের মতামত ও পরামর্শ নিয়ে সার্চ কমিটির মাধ্যমে একটা ভালো নির্বাচন কমিশন গঠন করার জন্য সংলাপ আহ্বান করেছেন।

সেই সংলাপে যদি কেউ অংশ না নেয়, সেটি তাদের দায়িত্বহীনতার পরিচয় দেবে। আমার বিশ্বাস সবাই অংশ নেবে। এ ক্ষেত্রে দু-একটি দল যদি সংলাপে অংশ না নেয়, তাও রাষ্ট্রপতিকে নির্বাচন কমিশন গঠন করতেই হবে সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতার কারণে।

এতে সংকট সৃষ্টি হবে না। হয়তো সবার অংশগ্রহণ থাকলে যেটা সর্বজনীন হতো তা হয়তো কিছুটা ঘাটতি দেখা যেতে পারে। নির্বাচন কমিশন গঠন হবে সাংবিধানিক বাধ্যতা অনুযায়ী।

অনেক রাজনৈতিক দল বলেছেন, আগামী অধিবেশনেই আইনটি করা সম্ভব এ বিষয়ে সাংবাদিকরা জানতে চাইলে হানিফ বলেন, যে আইন বিগত ৪০ বছরে হয়নি, সেই আইন হঠাৎ করে এক মাসের মধ্যে হয়ে যাবে? এটা যারা বলছেন তারা যৌক্তিক কথা বলেননি।

যারা বলছেন তারা রাষ্ট্রক্ষমতায় থাকতে করেননি কেন? তারা তো অনেকবারই ছিলেন। স্বাধীনতার ৫০ বছরের মধ্যে আওয়ামী লীগ এ পর্যন্ত সব মিলিয়ে ২১ বছর ক্ষমতায়, বাকি ২৯ বছরই ছিল কিন্তু বিভিন্ন রাজনৈতিক দল।

তারা রাষ্ট্র ক্ষমতায় থাকতে করেনি কেন? আমরা বলেছি নির্বাচন কমিশন আইন করা হয়নি। অতীতে হয়তো কেউ উদ্যোগ নেয়নি। বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ আইনটির কথা ভাবছে।

বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়ার বিদেশে চিকিৎসা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আমরাও চাই বেগম খালেদা জিয়া শুধু একজন রাজনৈতিক নেত্রীই নন, সাধারণ মানুষ হিসেবেও অসুস্থতা থেকে সুস্থ হয়ে ঘরে ফিরুক

তবে এটাও মনে রাখতে হবে আইন সবার জন্য সমান। কোনো ব্যক্তি বিশেষের জন্য আইন হয়নি বা বাংলাদেশে সেই বিধানও নেই। আইন পরিবর্তনেরও সুযোগ নেই। তার বিদেশে চিকিৎসার জন্য একটা পথ খোলা আছে; আইনের মাধ্যমে সেটা হচ্ছে তিনি যদি রাষ্ট্রপতির কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করেন। দণ্ড মওকুপ হলে তিনি বিদেশ যেতে পারবেন।

এ সময় আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া ও সৈয়দ আশরাফের বোন সৈয়দা জাকিয়া নূর, শাহজাদা মহিউদ্দিন, রাশেদুল মাহমুদ উপস্থিত ছিলেন।

 

সম্পর্কিত পোস্ট