সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪

আওয়ামী লীগে কোন দুর্ভিক্ষ নেই যে বিএনপিকে ভাঙতে হবে: ওবায়দুল কাদের

আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে বিএনপিকে ভাঙ্গার অভিযোগ নিয়ে এক বিএনপি নেতার বক্তব্যের জবাবে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, আওয়ামী লীগে কোন দুর্ভিক্ষ নেই যে বিএনপিকে ভাঙতে হবে।
মঙ্গলবার (১৯ মার্চ) রাজধানীর ২৩ বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে  এসব কথা বলেন তিনি।
ওবায়দুল কাদের বলেন, বিএনপিকে আমরা কেন ভাঙতে যাব? আমাদের কি কোন দুর্বলতা আছে, যে বিএনপি থেকে লোক এনে সে ঘাটতি পূরণ করতে হবে। আওয়ামী লীগের বহু লোক। গত নির্বাচনে দেখেছেন প্রার্থিতা ফরম নিতে কত ভিড়।

তিনি বলেন, বিএনপির নেতারা ক্লান্ত, কর্মীরা হতাশ। এ অবস্থায় গালিগালাজ করা ছাড়া তাদের করার কিছু নেই। দলটি এখন ইফতার পার্টির নামে সরকারের অন্ধ সমালোচনা করছে। বিএনপি ইফতার পার্টি করে, এটাকে ইফতার পার্টি বলবো নাকি গীবত পার্টি বলবো। আওয়ামী লীগের গীবত করার জন্যই ইফতার পার্টি। স্রষ্টার প্রশংসার জন্য নয়, ইফতার পার্টির নামে ঢালাওভাবে সরকারের সমালোচনা করে।

আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, এখানে বিএনপি মিথ্যা বললে, জবাব তো দিতেই হবে। তারা মিথ্যা কথা বলা বন্ধ করুক। তাহলে ক্ষমা চাওয়ার প্রয়োজন নেই। আমরা গায়ে পড়ে কিছু বলতে যাব না।

গত জাতীয় নির্বাচনে কিংস পার্টির সৃষ্টি নিয়ে সরকারের ভূমিকা আছে কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রী বলেন, সরকারি দল কিংস পার্টি করতে যাবে কেন? নির্বাচনকে সামনে রেখে রাজনৈতিক দলের এখানে অনেক ফুল ফোটে। কোনটা কিংস পার্টি, কোনটা প্রজা পার্টি এ সম্পর্কে আমাদের কিছু জানা নেই। আমরা প্রত্যেককে রাজনৈতিক দল হিসেবে দেখি। নির্বাচন কমিশন তাদের নিবন্ধন দেয়।

এ সময় আওয়ামী লীগের এমপি ক্রিকেটার সাকিব আল হাসানের নির্বাচনের আগে কিংস পার্টি খ্যাত বিএনএমে যোগদানের বিষয়ে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, আমি বিষয়টি মিডিয়ায় দেখেছি। এ সম্পর্কে আমার কিছু জানা ছিল না। এখন সাকিব আওয়ামী লীগের টিকিটে মাগুরা থেকে নির্বাচন করেছে, জয়লাভও করেছে। নমিনেশন পার্টির কাছে যাওয়ার সময় সে দলের প্রাথমিক সদস্য। তার আগে তো সাকিব আমাদের দলের কেউ ছিল না। নমিনেশন দেওয়ার সময় প্রাথমিক সদস্য পদ দিতে হয়। এর আগের বিষয়টা জানিনা।

বাংলাদেশের গণতন্ত্র উদ্ধারে প্রতিবেশি বন্ধু রাষ্ট্রের সহযোগিতা চাওয়া নিয়ে বিএনপির এক নেতার বক্তব্যর বিষয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, তারা বন্ধু রাষ্ট্র বলতে ভারতকে বুঝিয়েছে। গণতন্ত্র তো আমাদের ঠিকই আছে। নির্বাচনও হয়েছে। বিএনপি’র বন্ধিপ্রতিম দেশের কাছে সাহায্য চাওয়ার অর্থ তাদের ক্ষমতায় বসিয়ে দেওয়া। নির্বাচন ছাড়া তাদের কেউ ক্ষমতায় বসাবে এটা তো হতে পারে না। ক্ষমতায় বসাবে দেশের জনগণ। জনগণের সমর্থন ছাড়া সরকার পরিবর্তন সম্ভব নয়।

বাংলাদেশের গণতন্ত্রের মানদণ্ড নিয়ে মার্কিন নির্বাচনী পর্যবেক্ষক দলের প্রতিবেদন নিয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, আমাদের দেশের গণতন্ত্রের বিষয়ে আমাদের একটা মানদণ্ড আছে। পৃথিবীর কেউ পারফেক্ট নয়। আমরাও সেই দাবি করি না। আমেরিকার এক সাবেক প্রেসিডেন্ট  বলেছেন, আমি নির্বাচিত না হলে রক্ত বন্যা বয়ে যাবে। এটা কোন গণতন্ত্র?

নির্বাচিত প্রেসিডেন্টকে সাবেক প্রেসিডেন্ট আজ পর্যন্ত মেনে নেয়নি। কাজে মানদণ্ড বোধা মুশকিল। আমাদের দেশে ২১ বছর সামরিক শাসক এবং তার অনুসারীরা ক্ষমতায় ছিল। দেশে গণতন্ত্রের চর্চা ছিল না। গণতন্ত্রের নামে যারা ক্ষমতায় বসেছে তারা ১৫ ফেব্রুয়ারি মার্কা প্রহসনের নির্বাচন করেছে। রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে হা না ভোট আরেকটা প্রহসন। যারা ওয়ান ইলেভেনের সময় ১ কোটি ২৩ লাখ ভুয়া ভোটার করেছে পরবর্তী নির্বাচনের জন্য। সেখান থেকে অস্বাভাবিক সরকার দুই বছর ক্ষমতায় থেকেছে। কাজে আমাদের মানদণ্ড ভিন্নতর।

২৯ পণ্যের মূল্য নির্ধারণ প্রসঙ্গে মন্ত্রী বলেন, সরকারের বেধে দেওয়া কিছু পণ্যের দাম এরই মধ্যে কমেছে। অন্যান্য পণ্যের দামও মানুষের ক্রয়ক্ষমতার মধ্যে রাখতে সরকারের চেষ্টার কোন কমতি নেই। অপেক্ষা করুন। চেষ্টা করলে ফল পাওয়া যাবে।

এ সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক বিএম মোজাম্মেল হক, মির্জা আজম, দপ্তর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া, উপ দপ্তর সম্পাদক সায়েম খান প্রমুখ।

সম্পর্কিত পোস্ট