সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪

উপজেলা নির্বাচনে তৃণমূল নেতাদের ঠেকাতে পারছে না বিএনপি

উপজেলা নির্বাচনে তৃণমূল নেতাদের ঠেকাতে পারছে না বিএনপি। কড়া সতর্কবার্তা দেওয়ার পরও অনেকে মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার না করে ভোটের মাঠে রয়েছেন। বিএনপি এখন তাদেরকে বহিস্কার করছে। সবশেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত তিন প্রার্থীকে কেন্দ্র থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে।
মঙ্গলবার (২৪ এপ্রিল)  বিএনপির পক্ষ থেকে এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করে আসন্ন ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে অংশগ্রহণের সুনির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে মুন্সীগঞ্জ জেলার টংগীবাড়ী উপজেলার আড়িয়ল ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মঞ্জু শেখ ফারুখকে বিএনপির প্রাথমিক সদস্য পদসহ সব পর্যায়ের পদ থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে।
এর আগে গত ২১ এপ্রিল পটুয়াখালী জেলার সদর থানা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মনির রহমান এবং কক্সবাজার জেলার ঈদগাহ উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আলমগীর তাজ জনিকে প্রাথমিক সদস্য পদসহ সব পর্যায়ের পদ থেকে বহিষ্কার করা হয়।
গত সোমবার রাতে স্থায়ী কমিটির বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়েছে- উপজেলা নির্বাচনে অংশগ্রহণকারীদের কোনো ছাড় দেওয়া হবে না। নমনীয়তা দেখাতে নারাজ হাইকমান্ড। পরবর্তী ধাপেও যারা অংশ নিবেন তাদের বিরুদ্ধে একই সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে। বিএনপি মনে করে, আওয়ামী লীগ সরকারের অধীনের সুষ্ঠু নির্বাচন হতে পারে না। নির্বাচনে গেলে তৃণমূলের নেতাকর্মীদের ওপর হামলা-মামলা আরও বৃদ্ধি পাবে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বিএনপি উপজেলা নির্বাচন বর্জনের ঘোষণা দিলেও প্রথম ধাপে দলের পদধারী, সাবেক ও সমর্থক মিলিয়ে ৩৮ জন নেতা অংশ নিয়েছেন। এদের মধ্যে থানা-উপজেলার বিএনপির পদধারী ২০ জন, বিভিন্ন সময়ে বহিষ্কৃত বা অব্যাহতিপ্রাপ্ত ১১ জন এবং সমর্থক বা নেতাদের আত্মীয়-স্বজন ৯ জন রয়েছেন।
প্রথম ধাপের নির্বাচনে বিএনপির প্রার্থীরা হলেন যারা
ময়মনসিংহের ধোবাউড়া উপজেলায় বিএনপির সাবেক সহসভাপতি শামসুর রশিদ, ফুলপুর পৌরসভার সাবেক সাধারণ সম্পাদক এমরান হাসান, হালুয়াঘাটে ময়মনসিংহ উত্তর জেলার সদস‌্য আবদুল হা‌মিদ, পিরোজপুরের ইন্দুরকানি উপজেলার সাবেক সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ ফায়জুল কবির তালুকদার, ফরিদপুর সদরের সাবেক সভাপতি রউফ উন নবী ও যুবদলের সাবেক নেতা কে এম নাজমুল ইসলাম, সুনামগঞ্জের শাল্লা উপজেলার সভাপতি নগেন্দ্র চন্দ্র সরকার, নওগাঁর মহাদেবপুর উপজেলার সাংগঠনিক সম্পাদক সাজ্জাদ হোসেন, রাজশাহীর গোদাগাড়ীতে জেলা যুবদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক সাজেদুর রহমান খান, শেরপুরের ঝিনাইগাতীর সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক মো. আমিনুল ইসলাম, কিশোরগঞ্জে জেলার সাংগঠনিক সম্পাদক মো. নাজমুল আলম, কুমিল্লার মেঘনা উপজেলার আহ্বায়ক রমিজ উদ্দিন, নাঙ্গলকোট উপজেলা ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি মাজহারুল ইসলাম, চাঁপাইনবাবগঞ্জের গোমস্তাপুরের সাবেক নেতা আশরাফ হোসেন ও ভোলাহাটের আহ্বায়ক বাবর আলী বিশ্বাস, সিলেটের বিশ্বনাথের সাবেক সহসভাপতি মোহাম্মদ সুহেল আহমদ চৌধুরী, সাবেক সাধারণ সম্পাদক গৌছ খান, যুক্তরাজ্য বিএনপির সহসাংগঠনিক সম্পাদক মো. সেবুল মিয়া, যুক্তরাজ্য বিএনপির নেতা সফিক উদ্দিন, দিনাজপুরের ঘোড়াঘাট উপজেলার সহসভাপতি সারওয়ার হোসেন, নাটোরের নলডাঙ্গার সাবেক সদস্য সরদার আফজাল হোসেন, নাটোর সদরে জেলার সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক গোলাম সারোয়ার, ফরিদপুরের চরভদ্রাসনে উপজেলা যুবদলের সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক ফারুক হোসেন মৃধা, নওগাঁর, ধামইরহাটে আয়েন উদ্দিন, মহাদেবপুরে দলের সহসভাপতি আবদুস সাত্তার, সাংগঠনিক সম্পাদক সাজ্জাদ হোসেন, ব্রাক্ষণবাড়িয়ার সরাইল উপজেলায় ভাইস চেয়ারম্যান পদে উপজেলা যুবদলের সাবেক সহসভাপতি হানিফ আহমেদ এবং মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে জেলা জিয়া পরিষদের সাধারণ সম্পাদক শামীমা আক্তার নির্বাচন করছেন।
বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলু সময়ের আলোকে বলেন, সতর্ক করার পরও কয়েকজন মনোনয়ন ফরম প্রত্যাহার করেননি। তাদের বিরুদ্ধে কেন্দ্র থেকে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তবে রাজশাহী বিভাগে বেশিরভাগ নির্বাচন থেকে সরে এসেছেন।
দলের আরেক সাংগঠনিক সম্পাদক মো. মোস্তাক মিয়া সময়ের আলোকে বলেন, দুয়েকজন প্রত্যাহার করেছে। আর কয়েকজন করেনি। তাদেরকে আমরা বারবার কেন্দ্রের সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছি। এখন বহিস্কার ছাড়া বিকল্প নেই।

সম্পর্কিত পোস্ট