বৃহস্পতিবার, ২৭ জুন ২০২৪

কষ্টিপাথরে কিনে প্রতারিত, ক্ষুব্ধ হয়ে অপহরণ, চক্রের ৭ সদস্য গ্রেফতার

কষ্টিপাথরে কিনে প্রতারিত হয়ে প্রতারকের ভায়রাকে অপহরণের ঘটনায় ৭ জনকে গ্রেফতার করেছে র‌্যাব। তারা হলেন, মুক্তিপণ আদায়কারী চক্রের মূলহোতা হাজী ওয়াজী উল্লাহ্ খোকন (৬৫), মো. আরিফ হোসেন (৫৫), সাইফ উদ্দিন আহমেদ মিলন (৬২), সিরাতুল মোস্তাকিম (৫৮), মো. রুহুল আমিন (৬০), মো. জাকির হোসেন (৩০), ও মো. স্বাধীন (৫২)।
র‌্যাব জানায়, অবৈধ কষ্টিপাথরের মূর্তি ও বিভিন্ন ধাতব মুদ্রার ব্যবসা করেন ঝালকাঠির বাসিন্দা মোস্তফা হাওলাদার। অন্যদিকে ঢাকার বাসিন্দা খোকন হাজী ঠিকাদার পরিচয়ের আড়ালে এসব চোরাচালনী পণ্য কিনে ভারতে পাচার করে আসছিলেন। তিনি মোস্তফার কাছ থেকে প্রায় ৯৫ লাখ টাকায় মূর্তি ও ধাতব মুদ্রা কিনে প্রতারিত হন। পরে মোস্তফার কোনো হদিস না পেয়ে টাকা আদায় করতে নারায়ণগঞ্জ থেকে মোস্তফার ভায়রা ভাই আনোয়ারের হোসেন খানকে (৪৪) অপহরণ করে তার চক্রের সদস্যরা।
শুক্রবার (৩ মে) রাজধানীর কারওয়ানবাজার র‍্যাব মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানানো হয়। এর আগে বৃহস্পতিবার রাতে অপহরণকারী চক্রের মূলহোতা খোকন হাজীসহ সাত জনকে ঢাকার দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থেকে গ্রেফতার করে র‍্যাব-৩। তাদের কাছ থেকে রিভলবার, ৮ রাউন্ড গুলি ও শটগান উদ্ধার করা হয়। এ সময় অপহৃত আনোয়ারকে উদ্ধার করা হয়।
আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে র‍্যাব-৩ এর অধিনায়ক লে. কর্নেল মো. ফিরোজ কবীর বলেন, গত বুধবার আনোয়ারকে অপহরণ করে কেরানীগঞ্জ থানার চুনকুটিয়া এলাকায় খোকন হাজীর মালিকানাধীন ‘চুনকুটিয়া রিয়েল এস্টেট লিমিটেড’ অফিসের আটকে রাখে। তার ওপর পাশবিক নির্যাতন চালিয়ে পরিবারের কাছে ৯৫ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে। আনোয়ারের জীবন বাঁচাতে ১৭ লাখ ৫০ হাজার টাকা একটি ব্যাংক হিসাব নাম্বারে পাঠায়। এরপরও নির্যাতন চালাতে থাকে। তারা লাশ নদীতে ভাসিয়ে দেওয়ার হুমকি দেয়।
জিজ্ঞাসাবাদের বরাতে র‍্যাব-৩ এর অধিনায়ক জানান, খোকন হাজী ২০১৫ সাল থেকে দেশের মূল্যবান কষ্টিপাথরের মূর্তি ও দুষ্প্রাপ্য পিতলের ধাতব মুদ্রা ভারতে পাচার করে আসছিল। তার এ অপকর্মের সহযোগী ছিল ভারতীয় এক নাগরিক যার নাম মিলন চক্রবর্তী। যিনি নিজেকে একটি বিখ্যাত ভারতীয় কোম্পানীর এজেন্ট হিসেবে পরিচয় দিতেন। কষ্টিপাথরের মূর্তি ও দুষ্প্রাপ্য পিতলের ধাতব মুদ্রার মূল ক্রেতা ছিল মিলন চক্রবর্তী। খোকন হাজী ২০১৫ থেকে ২০১৭ সালের মধ্যে কষ্টিপাথরের মূর্তি ও ধাতব মুদ্রার ৭টি চালান ভারতে পাচার করেন। খোকন হাজীর কষ্টিপাথরের মূর্তি ও ধাতবমুদ্রা সংগ্রহের কাজে নাঈম (৩৫), মোস্তফা হাওলাদার(৫০) ও রবি নামের কয়েকজন সহযোগী বিভিন্ন গ্রুপে ভাগ হয়ে কাজ করতো। বিনিময়ে তাদের মাসে ৩০ হাজার টাকা করে বেতন দিত খোকন।
র‍্যাব জানায়, খোকন হাজীর মতিঝিল এলাকায় তার একটি ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান রয়েছে। ঠিকাদারী ব্যবসার আড়ালে খোকন হাজী দীর্ঘদিন ধরে অবৈধ কষ্টিপাথরের মূর্তি ও দুষ্প্রাপ্য ধাতব মুদ্রার কারবার করে আসছিল। এই অপহরণের ঘটনার সঙ্গে জড়িত তার সহযোগীরাও অবৈধ কষ্টিপাথর ও ধাতব মুদ্রার কারবারের জড়িত।

সম্পর্কিত পোস্ট