শনিবার, ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪

নতুন সেনাপ্রধান ওয়াকার-উজ-জামান

বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর প্রধান হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন লেফটেন্যান্ট জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান। তিনি বর্তমানে সেনাবাহিনীর চিফ অফ জেনারেল স্টাফ (সিজিএস) পদে দায়িত্ব পালন করছেন। জেনারেল পদে পদোন্নতিসহ আগামী ২৩ জুন বিকেল থেকে তিনি আনুষ্ঠানিকভাবে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী প্রধানের দায়িত্বভার গ্রহণ করবেন।
মঙ্গলবার (১১ জুন) প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের উপসচিব নাহিদা পারভীন স্বাক্ষরিত এক প্রজ্ঞাপনে এ তথ্য জানানো হয়। এছাড়াও আন্ত:বাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর) থেকেও এ তথ্য নিশ্চিত করা হয়েছে।
আইএসপিআর জানিয়েছে, আগামী ২৩ জুন বিকেল থেকে সেনাবাহিনীর সিজিএস লেফটেন্যান্ট জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামানকে জেনারেল পদবীতে পদোন্নতি প্রদানপূর্বক ৩ বছরের জন্য সেনাবাহিনী প্রধান পদে নিয়োগ প্রদান করা হয়েছে। বর্তমান সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল এস এম শফিউদ্দিন আহমেদের স্থলাভিষিক্ত হবেন ওয়াকার-উজ-জামান। একই সঙ্গে ওইদিন বিকেল থেকে অবসরে যাবেন বর্তমান সেনাপ্রধান।
আইএসপিআর এর সহকারী পরিচালক রাশেদুল আলম খান স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে আরো জানানো হয়, লেফটেন্যান্ট জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান ১৯৮৫ সালের ২০ ডিসেম্বর ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টের সদস্য হিসেবে ১৩তম দীর্ঘমেয়াদি কোর্সের সঙ্গে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীতে কমিশন লাভ করেন। সামরিক জীবনের শুরু থেকেই বিভিন্ন কোর্সে ভাল ফলাফলের ক্রমধারায় তিনি মিরপুর ডিফেন্স সার্ভিসেস কমান্ড ও স্টাফ কলেজ থেকে সাফল্যের সঙ্গে ‘গ্র্যাজুয়েশন’ সম্পন্ন করেন। পরবর্তীতে তিনি যুক্তরাজ্যের জয়েন্ট সার্ভিসেস কমান্ড এন্ড স্টাফ কলেজ থেকেও ‘গ্রাজুয়েট’ হিসেবে স্বীকৃতি লাভ করেন। এছাড়াও তিনি জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের আওতায় প্রথম শ্রেণীতে মাস্টার্স অব ডিফেন্স স্টাডিজ (এমডিএস) সম্পন্ন করেন এবং যুক্তরাজ্যের কিংস কলেজ, ইউনিভার্সিটি অব লন্ডন থেকে মাস্টার্স অব আর্টস ইন ডিফেন্স স্টাডিজ ডিগ্রী অর্জন করেন। তার সুদীর্ঘ ৩৯ বছরের বর্ণাঢ্য সামরিক জীবন কমান্ড, স্টাফ ও প্রশিক্ষকের অভিজ্ঞতায় পরিপূর্ণ।
আইএসপিআর জানায়, সেনাসদর সামরিক সচিবের শাখায় তিনি সহকারী সামরিক সচিব, উপ-সামরিক সচিব এবং সামরিক সচিব (এমএস) হিসেবে বিভিন্ন মেয়াদে দীর্ঘদিন দায়িত্ব পালন করেন। সেনাসদরের জিএস শাখার চিফ অব জেনারেল স্টাফ (সিজিএস) হিসেবে দায়িত্বভার গ্রহণের আগে তিনি প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের অধীনে সশস্ত্র বাহিনী বিভাগের (এএফডি) প্রিন্সিপাল স্টাফ অফিসার (পিএসও) হিসেবে কর্মরত ছিলেন। লেফটেন্যান্ট জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান জাতিসংঘের ব্যানারে মিলিটারি অবজার্ভার হিসেবে এংগোলাতে এবং সিনিয়র অপারেশন অফিসার হিসেবে লাইবেরিয়াতে দায়িত্ব পালন করেন। সেনাবাহিনীতে তার কৃতিত্বপূর্ণ অবদানের জন্য তিনি ‘অসামান্য সেবা পদক’ (ওএসপি) এ ভূষিত হন। এছাড়া তিনি বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর প্রতিনিধি হিসেবে দেশে ও বিদেশে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক সেমিনার, সিম্পোজিয়াম ও কনফারেন্সে অংশগ্রহণ করেছেন এবং বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করেছেন। ব্যক্তিগত জীবনে তিনি এবং সারাহনাজ কমলিকা জামান দুই কন্যা সন্তানের (সামিহা রাইসা জামান এবং শাইরা ইবনাত জামান) গর্বিত জনক-জননী।
আইএসপিআর জানিয়েছে, লেফটেন্যান্ট জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান চাকরি জীবনে ১৭ ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টের উপ-অধিনায়ক ও অধিনায়কের দায়িত্ব পালন করেন। তিনি তৎকালীন বিডিআর বিদ্রোহ দমনে নিষ্ঠা ও বিচক্ষণতার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করে ভূয়সী প্রশংসা অর্জন করেন। পরবর্তীতে তিনি দুই বছরেরও বেশি সময় ৪৬ স্বতন্ত্র পদাতিক ব্রিগেডের কমান্ডার এবং তিন বছর নবম পদাতিক ডিভিশনের জিওসি হিসেবে তিনি টানা তিন বছর অত্যন্ত সফলভাবে বিজয় দিবস প্যারেড-২০১৪, ২০১৫ ও ২০১৬ এর প্যারেড কমান্ডারের দায়িত্ব পালন করেন। এই বিরল কৃতিত্বের স্বীকৃতিস্বরূপ তিনি ‘সেনা গৌরব পদক’ (এসজিপি) এ ভূষিত হন। লেফটেন্যান্ট জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান জাতিসংঘের ব্যানারে মিলিটারি অবজার্ভার হিসেবে এংগোলাতে এবং সিনিয়র অপারেশন অফিসার হিসেবে লাইবেরিয়াতে দায়িত্ব পালন করেন। সেনাবাহিনীতে তার কৃতিত্বপূর্ণ অবদানের জন্য তিনি ‘অসামান্য সেবা পদক’ (ওএসপি) এ ভূষিত হন।

সম্পর্কিত পোস্ট