সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪

বিএনপি-জামায়াত দেশের উন্নয়নকে ক্ষতিগ্রস্ত ও দেশের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন করছে: প্রধানমন্ত্রী

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বিএনপি-জামায়াত ও শিবির দেশের উন্নয়নকে ক্ষতিগ্রস্ত করার পাশাপাশি বিদেশে দেশের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন করার জন্যই দেশব্যাপী তাণ্ডব চালিয়েছে। এই ধ্বংসযজ্ঞের সঙ্গে জড়িত অপরাধীদের গ্রেফতার করে বিচারের আওতায় আনতে সহায়তা করার জন্য দেশবাসীর প্রতি আহ্বান জানান তিনি। মেট্রোরেল, বিটিভিসহ বিভিন্ন স্থাপনা ধ্বংসের প্রসঙ্গ উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, যারা এ সবের সঙ্গে জড়িত, সারা বাংলাদেশের আনাচে-কানাচে যে যেখানে আছে তাদের খুঁজে বের করুন। তাদের শাস্তির ব্যবস্থা করার জন্য সহযোগিতা করুন। আমি দেশবাসীর কাছে এই আহ্বান জানাচ্ছি।
শুক্রবার (২৬ জুলাই) সকালে গত ১৮ জুলাই কোটা বিরোধী আন্দোলনকে পুঁজি করে রামপুরাস্থ বাংলাদেশ টেলিভিশন ভবনে (বিটিভি) চালানো ধ্বংসযজ্ঞ পরিদর্শন শেষে তিনি এসব কথা বলেন। পরে বিকালে মেক হাসপাতালের জরুরি ইউনিটে যান এবং বিএনপি-জামায়াতের হামলা ও নৃশংসতার সময় আহত হয়ে সেখানে চিকিৎসাধীনদের অবস্থার খোঁজখবর নেন প্রধানমন্ত্রী।
’৯৬ সালে ২১ বছর পর সরকারে এসে এবং দ্বিতীয় মেয়াদে ২০০৯ সালে সরকার গঠন করার পর থেকে সরকার বিটিভির প্রভূত উন্নয়ন ও আধুনিক যন্ত্রপাতি সজ্জিত করেছে উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, আজকে এত বছর পর এসে দেখা গেল সেই ’৭১ সালে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর যে নারকীয় তান্ডব তারই যেন একটা বীভৎস রূপ বাংলার মানুষ দেখছে।
২০১৩ সালে তথাকথিত আন্দোলনের নামে বিএনপি-জামায়াতের তান্ডবলীলা ও ধ্বংসযজ্ঞে ৩৮শ’ যানবাহন, ২৮টি ট্রেন ও ট্রেনের বগি, লঞ্চ ও সরকারি স্থাপনায় অগ্নিসংযোগের প্রসঙ্গ টেনে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এবার কোটা সংস্কার আন্দোলনকে পুঁজি করে ব্যাপক ধ্বংসযজ্ঞ চালানো হলো। এবারের আগুন লাগানোর ধরন আগের গুলোর তুলনায় আলাদা। তারা এবার আগুন লাগাতে গান পাউডার ব্যবহার করেছে এবং কিছুক্ষণের মধ্যেই সবকিছু পুড়ে ছাই হয়ে গেছে।
পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী কিন্তু টেলিভিশনের ওপর হাত দেয়নি বা কেউই কখনো দেয়নি। কিন্তু আজকে এই টেলিভিশন সেন্টারকে যারা এইভাবে পোড়ালো, একটা কিছু নেই যে তাদের হাত থেকে রক্ষা পেয়েছে। তাহলে এরা কারা? এরা কি এদেশেরই মানুষ? এদের কি এই দেশেই জন্ম ? একটা দেশকে সম্পূর্ণভাবে ধ্বংস করার চিন্তা নিয়েই যেন তাদের এই আক্রমণ।
শেখ হাসিনা বলেন, মেট্রোরেল যেটা ছিল সারাবিশ্বের প্রতিটি বাঙালির কাছে একটা সম্পদ, সেটাকে ধ্বংস করল। যার মাধ্যমে মানুষ অল্প সময়ে এক জায়গা থেকে আরেক জায়গায় যেতে পারতো। আজ সেটা বন্ধ। আবার সেই ট্রাফিক জ্যাম, আবার সেই পূর্বের অবস্থায় মানুষকে ফেলে দিল। আর এই টেলিভিশন সেন্টারে তারা যেভাবে ধ্বংসযজ্ঞ চালিয়েছে যেসব জিনিস মানুষের সেবা করে মানুষের জন্য কাজ করে সেই জায়গাগুলোতেই আঘাত। এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়েতেও আগুন দিয়ে পোড়ালো। গাড়িগুলো, এমনকি জাপান থেকে আনা অত্যাধুনিক সিটি কর্পোরেশনের ময়লার গাড়িগুলো পুড়িয়েছে, পানি শোধনাগারে হামলা করতে গেছে, পয়ঃশোধনাগারে হামলা-এটা কি হচ্ছে? কি তাদের মানসিকতা?
শেখ হাসিনা বলেন, আমি তাই দেশবাসীকে বলবো এই ঢাকাবাসীকেই বলবো, আজ আপনাদের এই দুর্ভোগ, আমিতো লাঘব করে দিয়েছিলাম। কিন্তু যারা এটা ধ্বংস করলো আর যাদের জন্য এই দুর্ভোগ আর যাদের জন্য আজ বিদেশে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি নষ্ট হচ্ছে আমি তাদের বিচারের ভার এদেশের জনগণের ওপরই দিয়ে যাচ্ছি। যারা এদেশের মানুষের রুটি-রুজির ওপর হাত দিয়েছে, রুটি-রুজির পথ বন্ধ করে দিয়েছে, তাদের বিচার জনগণকেই করতে হবে। কারণ, এদেশের জনগণই একমাত্র শক্তি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিভ্রান্তি ছড়িয়ে মিথ্যা অপপ্রচার চালিয়ে কাউকে যেন বিভ্রান্ত করতে না পারে। আসল সত্যটা জানুন। যারা এসবের সাথে জড়িত সারা বাংলাদেশের আনাচে-কানাচে যে যেখানে আছে তাদের খুঁজে বের করুন। তাদের শাস্তির ব্যবস্থা করার জন্য সহযোগিতা করুন। দেশবাসীর কাছে আমি সেই আহ্বানই জানাই। এই দেশ আমরা অনেক কষ্ট করে পাকিস্তানিদের কাছ থেকে স্বাধীন করেছি। আজ বাংলাদেশ বিশ্বে উন্নয়নের রোল মডেল। বাংলাদেশ উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা পেয়েছে। সেই মর্যাদাকে ধ্বংস করার জন্যই এই ধ্বংসযজ্ঞ।
শেখ হাসিনা বিটিভির ধ্বংসযজ্ঞ আর আগুনে পোড়া অবস্থা দেখে স্মৃতি রোমন্থন করে বলেন, আজ অতীতের কথা মনে পড়ে আমি কতবার এখানে এসেছি। প্রত্যেক নির্বাচনের আগে এখানে ভাষণ দিতে এসেছি। নানা অনুষ্ঠানে এসেছি। আজ যে ধ্বংসযজ্ঞ দেখলাম এরপর এটা আবার কবে পুনরায় প্রতিষ্ঠা করা যাবে, জানি না।
তিনি বিটিভি’র কর্মকর্তা-কর্মচারিদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে বলেন, আপনারা জীবনের ঝুঁকি নিয়েও অনেক চেষ্টা করেছেন। এই সন্ত্রাসীদের কাছ থেকে পার পাওয়া অত্যন্ত কষ্টকর ছিল। তবুও আপনারা এই জাতীয় সম্পদকে রক্ষার চেষ্টা করেছেন।
প্রধানমন্ত্রী এই সময় অত্যন্ত আবেগাপ্লুত কন্ঠে বলেন, এইগুলো দেখে আমি আসলে আর কথা বলতে পারছি না। এক একটা জিনিস যখন গড়ে তুলতে অনেক কষ্ট করতে হয়। দেশের জনগণের উন্নয়নের জন্য দিনরাত অক্লান্ত পরিশ্রম করি। সেটা আমার দেশের মানুষেরই জন্য। একটা জিনিস এমনভাবে তৈরি করার চেষ্টা করি যাতে এইগুলো শুধু দেশে নয়, বিদেশিদের কাছেও দৃষ্টিনন্দন হয়।
আমরা দেশের যে উন্নতি করছি তার প্রতীক হিসেবে ব্যবহার হবে। প্রতিটি ক্ষেত্রে সেই জায়গাগুলো একে একে ধ্বংস করা হচ্ছে। এত দিনের কষ্টের ফসল সব শেষ করে দিতে চাচ্ছে। এটাই হচ্ছে সবচেয়ে বড় কষ্টের। দেশবাসীর কাছে এর বিচার চাই, আমি তাদের সহযোগিতা চাই।
প্রধানমন্ত্রী আজ সকাল ৯টা ১৩ মিনিটের দিকে বিটিভি ভবনে প্রবেশ করেন এবং কোটা-সংস্কার আন্দোলনের সুযোগ নিয়ে বিএনপি-জামায়াত চক্রের তান্ডবে ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত সমস্ত বিভাগ পরিদর্শন করেন। বিটিভি ভবনে ব্যাপক ধ্বংসযজ্ঞ প্রত্যক্ষ করে প্রধানমন্ত্রীকে হতাশ ও অসন্তুষ্ট দেখা গেছে। বিটিভি ভবনে ধ্বংসযজ্ঞ দেখে কর্মকর্তারা তাদের চোখের পানি ধরে রাখার চেষ্টা করার সময় বাতাস ভারী হয়ে উঠলে তাকেও অশ্রুসিক্ত হয়ে পড়তে দেখা যায়। বিটিভি’র সদর দফতর ও ভবনে ভাঙচুরের একটি ভিডিও চিত্রও প্রধানমন্ত্রীকে দেখানো হয়।
সারাদেশের তাণ্ডবলীলার খন্ডচিত্র তুলে ধরে সরকার প্রধান বলেন, সেখানে পুলিশকে হত্যা করা হয়েছে। হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে যাওয়া পুলিশ সদস্যকে হাসপাতাল থেকে টেনে বের করে রাস্তায় ফেলে কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে। র‌্যাবের গাড়ির ভেতরে র‌্যাব সদস্যকে হত্যা, সাংবাদিক হত্যা করা হয়েছে। সাধারণ মানুষ হত্যার স্বীকার হয়েছে। ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীকে হত্যা করা হয়েছে। গাজীপুরে এক কর্মীকে হত্যার পর ঝুলিয়ে রাখে। বাড়ি বাড়ি খুঁজে আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীকে হত্যা, যাত্রাবাড়িতে তাঁর মটর শোভাযাত্রার এক চালকও বাদ যায়নি। এইভাবে একদিকে হত্যাকান্ড একদিকে জ্বালাও পোড়াও। এরা কি বাংলাদেশের নাগরিক ? দেশের স্বাধীনতা বা উন্নয়নে বিশ্বাসী, সে প্রশ্নও তোলেন তিনি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, লন্ডনে আওয়ামী লীগের ওপর হামলা করা হলো। সেখানে পুলিশ এসে বিএনপি’র তিন নেতাকে গ্রেফতার করেছে। সংযুক্ত আরব আমিরাতে (ইউএই) বিক্ষোভ করাতে ৫৭ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এর মধ্যে ৩ জন যাবজ্জীবন কারাদণ্ড, ১৬ জন ১০ বছরের কারাদন্ড আর বাকীদের সেখানে রাখা হবে না। দেশে পাঠিয়ে দেওয়া হবে। তারা যে রুটি-রুজির পথ হারাল শুধু তাই নয়, যেসব বাঙালি সেখানে থাকে তাদের মুখটা আজ কোথায় গেল। কারণ, ঐ দেশে আইন আছে, কেউ মিছিল করতে পারে না কিন্তু তাদের উস্কে দেওয়া হয়েছিল লন্ডন থেকেই। সেখানে আর বাংলাদেশিদের নেওয়া হবে না জানতে পেরে তিনি তাৎক্ষণিক সেখানকার দূতাবাস এবং সে দেশের রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে কথা বলেছেন। সৌদি আরবও কঠিন আ্ইন প্রয়োগকারি দেশ। সেখানেও ২০জন গ্রেফতার হয়েছেন।
শুক্রবার সম্প্রতি দেশের বিভিন্ন স্থানে সহিংসতায় আহতদের খোঁজখবর নিতে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের জরুরি বিভাগ পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের প্রধানমন্ত্রী বলেন, মানুষের জীবন নিয়ে ছিনিমিনি খেলা বন্ধে সহিংসতায় জড়িতদের খুঁজে বের করে উপযুক্ত শাস্তি দিতে হবে। দেশবাসীর কাছে এইটুকু বলবো যে যারা অপরাধী, তাদের খুঁজে করে দিতে হবে। সকলকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে এই বর্বরতার বিরুদ্ধে; এই ধরনের জঘন্য ঘটনার বিরুদ্ধে।
শেখ হাসিনা বলেন, আমি আবারও বলবো, দেশবাসীকে বলবো, যারা এই ধরনের জঘন্য কাজ করে, তাদের কোথায় কে আছে খুঁজে বের করা। তাদের উপযুক্ত শাস্তি দেওয়া, যেন আর কখনও এ দেশের মানুষের জীবন নিয়ে কেউ ছিনিমিনি খেলতে না পারে। যেটা আমি কখনও চাইনি। কখনোই চাইনি এভাবে মানুষ আপনজন হারাবে, এভাবে মৃত্যুর মিছিল হবে। আজ বাংলাদেশে সেটাই করলো।
সহিংসতায় যারা মারা গেছেন, তাদের আত্মার মাগফিরাত এবং আহতদের দ্রুত সুস্থতা কামনা করে শেখ হাসিনা বলেন, অত্যন্ত বেদনাদায়ক অবস্থা, আজ এতগুলো মানুষ আহত-নিহত হলো। আমি তো আমার সব হারিয়েছি, বাবা-মা, ভাই সব হারিয়েছি, আমি তো জানি মানুষের হারানোর বেদনা কী? আমার চেয়ে বোধ হয় আর কেউ বেশি জানে না।
বিএনপি ও জামায়াত-শিবিরের সমালোচনা করে শেখ হাসিনা বলেন, এই জামায়াত-শিবির, বিএনপি, ছাত্রদল, তারাই এই সুযোগটা নিয়ে, কোটা আন্দোলনের সুযোগটা নিয়ে দেশব্যাপী এই ধ্বংসাত্মক কাজ করে যাচ্ছে। এদের মধ্যে কোনও মনুষ্যত্ববোধ নেই, দেশের প্রতি কোনও মায়া-মমতা নেই, দেশের প্রতি কোনও দায়িত্ববোধ নেই। আর মানুষকে এরা মানুষ হিসেবেই গণ্য করে না। আমার প্রশ্ন, এতে অর্জনটা কী হলো? কতগুলো মানুষের জীবন চলে গেলো। কতগুলো পরিবার ক্ষতিগ্রস্ত হলো।
শেখ হাসিনা বলেন, সেই ’৭১ সালের কথা মনে পড়ে, ২০১৩-তে ৩ হাজার ৮০০ মানুষ, মানুষকে পোড়ানো, মেরে ফেলা, আবার ২০১৪-তে সেই একই ঘটনা। ২০২৩-এর ২৮ অক্টোবর, পুলিশকে যেভাবে মেরেছে, এবারও সেই পুলিশকে মারা না শুধু, মেরে লাশ ঝুলিয়ে রাখা। আওয়ামী লীগের (কর্মী) গাজীপুরের, তাকে মেরে ঝুলিয়ে রাখা। একই বর্বরতা, একই জঘন্য। কোনও মনুষ্যত্ববোধ নেই। দেশের মানুষ ও আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে সবাইকে আহ্বান করবো, এই যে বর্বরতা, এই যে সন্ত্রাস-জঙ্গি এবং মানুষকে হত্যা, এটা তো সম্পূর্ণ জঙ্গি কাজ। মানুষের হাত কাটা, পা কাটা, রগ কাটা। চট্টগ্রামে আমাদের ছাত্রলীগের ছেলেদের ছয় তলা থেকে ফেলে দেওয়া, তাদের রগ কেটে দেওয়া। পড়ে যাওয়ার পরও তাদের ওপর হামলা। এটা কোন ধরনের বর্বরতা?’
আহতদের চিকিৎসার কোন ঘাটতি হয়নি এবং তাদের চিকিৎসায় যা যা প্রয়োজন, সব করার ঘোষণা দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, (আহতদের) চিকিৎসার জন্য যা যা প্রয়োজন সরকার করে যাচ্ছে এবং করবে। চিকিৎসা শেষে তাদের অন্তত আয়-রুজির ব্যবস্থা যাতে হয়, সেটাও আমরা করবো। আমি মানুষকে মানুষ হিসেবে দেখি। এখানে দলমত-নির্বিশেষে সবার জন্য আমি কাজ করি। আমি যা করি সব মানুষের জন্য করি। কে আমাকে সমর্থন করে, কে করে না, আমি সেটা চিন্তা করি না। কারণ আমি জাতির পিতা শেখ মুজিবুর রহমানের কন্যা। মানুষ আমাকে ভোট দিয়ে প্রধানমন্ত্রী করেছে তাদের সেবা করতে। সেভাবেই আমি সেবা করি।
শান্তিপূর্ণ পরিবেশ ও দেশের সমৃদ্ধির জন্য বিভিন্ন পদক্ষেপের কথা উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, আমি চাচ্ছিলাম দেশে শান্তি থাকবে, দেশের মানুষের উন্নতি হবে, দেশের মানুষ সুন্দরভাবে বাঁচবে। আমি সব দিকে ব্যবস্থা করেছি। তারা মানুষের সেবা করার যা যা সবই নষ্ট করবে, সবই ধ্বংস করে দেবে, সবই পোড়াবে। কতবার আমাকে মারার চেষ্টা করেছে। তারপরও আমি সেই শোক, ব্যথা, বাবা-মা, ভাই সব হারানোর বেদনা ভুলে, নিজের ওপর এত বড় আঘাত মোকাবিলা করে দেশের জন্য কাজ করে যাচ্ছি; মানুষ যেন ভালো থাকে। কিন্তু সেখানে এমন একটা পরিস্থিতি সৃষ্টি করা এবং তারপর মানুষগুলোর ওপর হামলা করা…মানুষের সেবা করার প্রতিষ্ঠানগুলো ধ্বংস করা। এর চেয়ে কষ্টের আর কিচ্ছু হয় না।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, এই যে একটা অস্বাভাবিক পরিস্থিতি সৃষ্টি করা। আর হাসপাতালে আক্রমণ…কোভিড হাসপাতাল ছিল, সেটা পুড়িয়ে দিয়েছে, স্বাস্থ্য অধিদফতর, চিকিৎসা; যেখানে মানুষের সেবা, সেখানেই আঘাত হানা এর চেয়ে জঘন্য কাজ আর কিছু হয় না।
সরকার কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের সব দাবি মেনে নিয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, আমরা তো সব দাবি মেনেই নিয়েছি। তারপর আবার কেন? সেটাই আমার প্রশ্ন। এটা কি জঙ্গিবাদকে সুযোগ করে দেওয়ার জন্য? দেশবাসীকে বলবো, আপনারা দোয়া করেন যেন এই জঙ্গিবাদ ও জুলুমের হাত থেকে মানুষ মুক্তি পায়; মানুষের জীবনে শান্তি আসে।
এর আগে প্রধানমন্ত্রী ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে চিকিৎসাধীন সাম্প্রতিক সহিংসতায় আহতদের খোঁজখবর নেন এবং তাদের সঙ্গে কথা বলেন।
এ সময় প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী ডা. সামন্ত লাল সেন, স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ প্রতিমন্ত্রী ডা. রোকেয়া সুলতানা, স্থানীয় সংসদ সদস্য আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম।

সম্পর্কিত পোস্ট