চাঁদপুর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (চাঁবিপ্রবি) উপাচার্য ড. নাসিম আখতার এবং অস্থায়ী রেজিস্ট্রারকে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে পদত্যাগ দাবি করে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শিক্ষার্থীরা।
রোববার (১১ আগস্ট) দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসে এক সংবাদ সম্মেলনে শিক্ষার্থীরা এই দাবি করেন।
সংবাদ সম্মেলন শিক্ষার্থীদের পক্ষে দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী মো. সিয়াম হোসেন খান লিখিত বক্তব্যে জানান, বৈষম্যবিরোধী ছাত্রদের গণ-অভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতন হয়েছে। এই আন্দোলনে নিষ্পাপ শিশু থেকে শুরু করে নিরপরাধ মানুষ পুলিশ ও ছাত্রলীগের সন্ত্রাসীদের হামলায় শহীদ হয়েছে।
লিখিত বক্তব্যে বলেন, আমরা শহীদদের শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করছি, সেইসঙ্গে তাদের আত্মার মাগফেরাত কামনা করছি। অধিকার আদায়ে এই আন্দোলনে চাপের মুখেও ছাত্র সমাজ সক্রিয় ছিলাম।
তিনি আরও বলেন, গত ১৪ জুলাই চাঁদপুরে প্রথম শান্তিপূর্ণভাবে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন কর্মসূচি পালন করি। উক্ত কর্মসূচিতে স্থানীয় ছাত্রলীগের ক্যাডার দ্বারা বাধার সম্মুখীন হই। আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা অস্থায়ী ক্যাম্পাসের সামনে শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি পালন করতে সড়কে অবস্থান নিই। ওই সময় আমাদের নিরাপত্তা না দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ড. নাসিম আখতার বিরোধিতা করেছেন।
সিয়াম হোসেন খান লিখিত বক্তব্যে বলেন, উপাচার্য ছাত্রলীগের ক্যাডার বাহিনীকে সঙ্গে নিয়ে আন্দোলনকারীদের হুমকি-ধমকি দিয়েছেন। এতেও তিনি ক্ষান্ত হননি। আমাদের নিরাপত্তা না দিয়ে তিনি আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের নাম ও মোবাইল নম্বর জাতীয় নিরাপত্তা গোয়েন্দা সংস্থার হাতে দিয়েছেন। পরে গোয়েন্দা সংস্থার লোকজন ফোন করে আমাদের হুমকি দেয়। তাই আমরা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ড. নাসিম আখতারের পদত্যাগ চাই।
তিনি বলেন, উপাচার্য আমাদের শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি বলপ্রয়োগ করে বন্ধ করেছেন এবং আমাদের নিরাপত্তা দিতে পুরোপুরি ব্যর্থ হয়েছেন। তিনি আমাদেরকে নিরাপত্তা দেওয়ার চেষ্টাও করেননি। যে কারণে আমারা শিক্ষার্থীরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি, আমাদের এই উপাচার্যকে আর দায়িত্বে দেখতে চাই না। অনতিবিলম্বে তার পদত্যাগ চাই। আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে তাকে পদত্যাগ করতে হবে।
আরেক শিক্ষার্থী তাজনীন তাজ ছোঁয়া বলেন, আমরা শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তার জন্য হল চাই। বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের সমর্থক অস্থায়ী রেজিস্ট্রারের পদত্যাগ চাই এবং অনতিবিলম্বে নতুন স্থায়ী রেজিস্ট্রার নিয়োগ দিতে হবে। খুব দ্রুত স্থায়ী ক্যাম্পাসের জন্য ব্যবস্থা গ্রহণ নিয়ে শিক্ষার্থীদের নির্ভরযোগ্য নিশ্চয়তা দিতে হবে। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতি বিভাগে বিভাগীয় প্রধান চাই, শিক্ষার্থীদের হল নিশ্চিত করে প্রক্টর নির্বাচন করতে হবে।
ছোঁয়া আরও বলেন, প্রতিটি ক্লাস রুমে শীতাতপ নিয়ন্ত্রণ ও স্মার্ট বোর্ডের ব্যবস্থা করতে হবে। বিশ্ববিদ্যালয়ে পর্যাপ্ত ল্যাবের ব্যবস্থা করতে হবে এবং লাইব্রেরি সমৃদ্ধ করতে হবে। শিক্ষার্থীদের যাতায়াতের জন্য বাস দিতে হবে। বর্তমান উপাচার্যের কাছে এই বিষয়ে বার বার বলা হলেও তিনি আমাদের আশ্বাস দিয়ে ব্যর্থ হয়েছেন।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন চাঁদপুর প্রেসক্লাবের সভাপতি শাহাদাত হোসেন শান্ত, সাবেক সাধারণ সম্পাদক আল ইমরান শোভন প্রমুখ।।