ভারতের ডম্বুর বাঁধ খুলে দেওয়ায় গোমতী নদী দিয়ে পানির প্রবাহ বেড়ে ভয়াবহ বন্যা সৃষ্টি হয়েছে কুমিল্লা জেলাজুড়ে। জেলার মোট ১৭টি উপজেলার মধ্যে ১৪টি উপজেলা বন্যায় আক্রান্ত হয়েছে। এসব উপজেলার প্রায় ১০ লাখ মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন।
বৃহস্পতিবার (২২ আগস্ট) রাতে পিস বাংলাকে বন্যার বিষয়টি নিশ্চিত করেন কুমিল্লার অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) পঙ্কজ বড়ুয়া।
তিনি জানান, বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা পর্যন্ত জেলার ১২টি উপজেলায় বন্যার পানি প্রবেশ করেছিল। রাত ১০টার পর আরও দুটি উপজেলা প্লাবিত হয়।
পঙ্কজ বড়ুয়া জানান, জেলার যে ১৪ উপজেলা বন্যাকবলিত হয়েছে- আদর্শ সদর, বুড়িচং, ব্রাহ্মণপাড়া, দেবিদ্বার, মুরাদনগর, সদর দক্ষিণ, লালমাই, চৌদ্দগ্রাম, লাকসাম, নাঙ্গলকোট, মনোহরগঞ্জ, বরুড়া, তিতাস এবং দাউদকান্দি উপজেলা বন্যাকবলিত হয়েছে। তবে, চান্দিনা, হোমনা ও মেঘনা উপজেলায় এখনও বন্যার পানি প্রবেশ করেনি।
তিনি বলেন, বন্যাকবলিত ১৪ উপজেলার শত শত হেক্টর ফসলি জমি পানিতে ডুবে গেছে। অনেক পরিবারের একমাত্র আয়ের উৎস মাছের ঘের, গবাদি পশুর খামার, হাঁস-মুরগির খামার তলিয়ে গেছে। স্মরণকালের বন্যায় নিদারুণ কষ্টে পড়েছেন সাধারণ মানুষ।
বন্যা কবলিত সবচেয়ে বেশি নাজুক পরিস্থিতিতে পড়েছে চৌদ্দগ্রাম উপজেলা। এখানে শতাধিক গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। সেখানে গত দুদিন ধরে বিদ্যুৎ, ইন্টারনেট ও মোবাইল নেটওয়ার্ক বিচ্ছিন্ন হয়ে আছে। উপজেলার প্রায় আড়াই লাখ মানুষ বন্যার কবলে পড়েছেন। এছাড়াও নাঙ্গলকোট, মনোহরগঞ্জ, দেবিদ্বার আদর্শ সদর ও বুড়িচং উপজেলায়ও ভয়াবহতা ছড়াচ্ছে বন্যার পানি।
জেলা ত্রাণ কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, ক্ষতিগ্রস্ত উপজেলাগুলোর জন্য ১৪ লাখ আর্থিক বরাদ্দ এবং ৩৫০ মেট্রিক টন চাল বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।
অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক বলেন, বন্যা দুর্গতদের সহায়তায় সেনাবাহিনী ও বিজিবি সদস্যরাও কাজ করছে। জেলা প্রশাসন সর্বোচ্চ সতর্কতার সাথে পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছে।