সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪

ঢামেকে চিকিৎসককে মারধর, আসামী গ্রেফতারে ২৪ ঘন্টা আলটিমেটাম

ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে অবহেলায় রোগীর মৃত্যুকে কেন্দ্র করে এক চিকিৎসক মারধরের শিকার হয়েছে। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে মেডিকেল শিক্ষার্থী ও চিকিৎসকরা অভিযুক্তদের গ্রেফতার শাস্তির দাবিতে ২৪ঘন্টা আলটিমেটাম দিয়েছেন।  গ্রেফতারে ব্যর্থ হলে ঢামেক হাসপাতালে সাটডাউনের ঘোষনা দিয়েছেন।
শনিবার (৩১ আগস্ট) রাত সারে ৯টার দিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ ক্যাম্পাসে এই ঘোষনা দেন চিকিৎসক ও শিক্ষার্থীরা।
শিক্ষার্থী ও চিকিৎসকরা বলেন, মাঝে মধ্যেই হেনস্তা ও মারধরের শিকার হন চিকিৎসকরা। রোগী মারা গেলে অবহেলা, ভুল চিকিৎসায় মারা গেছে এমন অভিযোগ শুনা যায়। এমনই ঘটনা ঘটেছে হাসপাতালের একটি ওয়ার্ডে। অবহেলায় রোগীর মৃত্যু হয়েছে এমন অভিযোগ এনে ইমরান নামে এক চিকিৎসককে মারধর করে কিছু শিক্ষার্থী। কিন্তু ওই রোগীর বিষয়ে তিনি কিছুই জানতেন না। কয়েকদিন আগেও জরুরী বিভাগে এক চিকিৎসক হেনস্তার শিকার হোন। এরকম চলতে থাকলে আমরা কিভাবে কাজ করবো। যদি অবহেলা বা ভুল চিকিৎসায় রোগী মারাও যায় আমাদের কতৃপক্ষ আছে। তাদের অভিযোগ দিতে হবে। কেন সরাসরি গায়ে তুলবে।
তারা বলেন, আমরা ২৪ ঘন্টা সার্ভিস দেই। আমরা হেরেজমেন্টের শিকার হতে চাইনা। আমাদের কাজের উপযুক্ত পরিবেশ দিতে হবে। আমরা স্যারদের সাথে বসেছিলাম সেখানে পরিচালক মহোদয় ছিলেন, উনারা আমাদের কাছে ২৪ঘন্টা সময় চেয়েছে। আমরাও সময় দিয়েছি। ২৪ঘন্টার মধ্যে সিসিটিভির ফুটেজ দেখে অভিযুক্তদের সনাক্ত করে শাস্তি নিশ্চিত না করলে সব চিকিৎসক মিলে হাসপাতালে স্ট্রাইক করবো (শাটডাউন)। আমরা যারা হাসপাতালে কাজ করছি তারা যেন কঠোর নিরাপত্তার ভিতর দিয়ে কাজ করতে পারি তা নিশ্চিত করতে হবে।
কনিবার রাত ১০টা থেকে ঢাকা মেডিকেলসহ দেশের সকল হাসপাতালে চিকিৎসকদের পুর্নঃনিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে। খুব দ্রুততম সময়ের ভিতরে সেনাবাহিনী মোতায়েন করতে হবে। ২৪ ঘন্টার মধ্যে অভিযুক্তকে সনাক্ত করে শাস্তি নিশ্চিত ও নিরাপত্তা বাস্তবায়ন না হলে আমরা এক যোগে কর্মবিরতীতে যাবো।
এসময় কলেজর ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ অধ্যাপক ডা. কামরুল আলম শিক্ষার্থীদের সাথে একত্মতা ঘোষনা করে বলেন, তারা দুইভাবে অপরাধ করেছে একটা ফিজিক্যাল এসলট, আরেকটা সরকারী কাজে বাধা দান। আমাদের একটু সময় দিলে দ্রুতই তাদের বিরুদ্ধ ব্যবস্থা নেওয়া যাবে।
এরআগে রাজধানীর ক্যান্টনমেন্ট এলাকায় মোটরসাইকেলের মুখোমুখি সংঘর্ষে আহসানুল ইসলাম দিপ্ত (২৪) নামে এক শিক্ষার্থী চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যায়। এই ঘটনায় চিকিৎসার অবহেলা মৃত্যুর অভিযোগ এনে এক চিকিৎসককে মারধর করে শিক্ষার্থীরা। শনিবার বিকালে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে জরুরী বিভাগের ২য় তলায় চিকিৎসক মারধরের ঘটনা ঘটে। এই ঘটনায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সদস্য ও ঢাকা মেডিকেল কলেজের পরিচালক চিকিৎসক, সেনাবাহিনীর কর্মকর্তা হাসপাতালের সভাকক্ষে কয়েক ঘন্টা মিটিং করেন।
নিহত শিক্ষার্থীর বড় বোন সানজিদা আফরিন জানান, তাদের বাড়ি গাইবান্ধা সদরে। বাবার নাম শহিদুল ইসলাম। বর্তমানে মোহাম্মদপুর এলাকায় ভাড়া থাকতো। দীপ্ত বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব বিজনেস অ্যান্ড টেকনোলজি (বিইউবিটি) নামে একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে সিভিল ইঞ্জিনিয়ার এর শিক্ষার্থী ছিল।
শুক্রবার রাতে মোটরসাইকেল চালিয়ে কুর্মিটোলা যাওয়ার পথে ক্যান্টনমেন্ট ঢাকা ময়মনসিংহ রোডে দুর্ঘটনায় গুরুতর আহত হয়। পরে পথচারীরা ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করে। শনিবার দুপুরের দিকে খবর পেয়ে ঢাকা মেডিকেলে এসে জানতে পারি চিকিৎসাধীন অবস্থায় আজ সকালে দীপ্ত  মারা গেছে।
ক্যান্টনমেন্ট থানার উপপরিদর্শক (এসআই) আগস্টিন মিলটন ডি কস্তা বলেন, সড়ক দুর্ঘটনায় মারা যায় ওই শিক্ষার্থী। স্বজনদের কোন অভিযোগ না থাকায় মরদেহ বিনা ময়নাতদন্তে স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।

সম্পর্কিত পোস্ট