শনিবার, ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪

বিক্ষোভে উত্তাল ইসরাইল, ধর্মঘটের ডাক শ্রমিকদের

গাজা উপত্যকা থেকে ছয় জিম্মির মরদেহ উদ্ধারের পর ইসরাইলজুড়ে বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়েছে। এর মধ্যে দেশটির শীর্ষ ট্রেড ইউনিয়ন হিস্ট্রাড্রট দেশজুড়ে ধর্মঘটের নির্দেশ দিয়েছে। রোববার এ ঘোষণা দেওয়া হয়। খবর এএফপির
গত বছরের ৭ অক্টোবর ইসরাইলে হামলা চালায় ফিলিস্তিনের মুক্তি আন্দোলনের সশস্ত্র সংগঠন হামাস। সে সময় ২৫১ জনকে জিম্মি করা হয়। এরইমধ্যে কিছুসংখ্যক বন্দি মুক্ত হয়েছেন, কেউ কেউ হত্যার শিকার হয়েছেন। কয়েকজনকে উদ্ধারেও সমর্থ হয়েছে ইসরাইল। শনিবার দক্ষিণ গাজার রাফা এলাকায় একটি সুড়ঙ্গ থেকে ছয় জিম্মির মরদেহ উদ্ধার করে ইসরাইলি সেনারা।
ইসরাইলের সামরিক বাহিনীর মুখপাত্র রিয়ার অ্যাডমিরাল দানিয়েল হাগার বলেছেন, ‘প্রাথমিক মূল্যায়ন অনুযায়ী, আমরা সেখানে পৌঁছানোর অল্প সময় আগে হামাসের সদস্যরা তাদের নিষ্ঠুরভাবে হত্যা করেছে।’
মরদেহ উদ্ধার হওয়া জিম্মিদের নাম প্রকাশ করেছে ইসরাইল। তারা হলেন-কারমেল গ্যাট, অ্যাডেন ইয়েরুশালমি, হার্শ গোল্ডবার্গ-পলিন, আলেকসান্দার লোভানভ, আলমগ সারুসি এবং ওরি ড্যানিনো। এএফপি গতকাল সোমবার জানিয়েছে, জিম্মিদের মরদেহ উদ্ধারের পর তেল আবিবসহ বিভিন্ন শহরে রোববার হাজারো ইসরাইলি রাস্তায় নেমে আসে। প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর সরকারের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ করেন তারা। জিম্মিদের মুক্তির জন্য অবিলম্বে চুক্তির দাবি জানান।
গত বছরের নভেম্বরে এক সপ্তাহের যুদ্ধবিরতির মধ্যে বেশ কয়েকজন জিম্মিকে মুক্তি দেওয়া হয়েছিল। তবে জিম্মিদের স্বজনদের বিশ্বাস, এখনও যারা জিম্মি আছেন, তাদের মুক্ত করতে ইসরাইল সরকারের পক্ষ থেকে কার্যকর কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি।
ইসরাইলি প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ) জানায়, গাজায় হামাসের হাতে এখনও ৯৭ জন জিম্মি আছে। মৃত্যু হয়েছে ৩৩ জনের।
কাতারে অবস্থানরত হামাসের কর্মকর্তা ইজ্জাত আল-রিশক বলেন, জায়নবাদীদের বোমার আঘাতে ওই জিম্মিরা নিহত হয়েছেন। তবে এ দাবি নাকচ করে দিয়েছে ইসরাইলি সেনাবাহিনী। ইসরাইলি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র শিরা সলোমন দাবি করেন, খুব কাছ থেকে গুলি করে ছয় জিম্মিকে হত্যা করা হয়েছে।
জিম্মি ও নিখোঁজ ব্যক্তিদের পরিবারগুলোকে নিয়ে গঠিত ফোরাম বলছে, জিম্মিদের ফিরিয়ে আনতে আলোচনার মাধ্যমে জরুরি একটি চুক্তি করার প্রয়োজন ছিল। ফোরামের এক বিবৃতিতে বলা হয়, কয়েক মাসের মধ্যস্থতা প্রচেষ্টায় বিলম্ব আর অজুহাত না দেখালে ওই ছয় জিম্মি হয়তো এখনও বেঁচে থাকতেন।
একটি চুক্তিতে পৌঁছাতে জিম্মিদের পরিবার ইসরাইলজুড়ে সাধারণ বিক্ষোভের ডাক দেয়। এর পরপরই ইসরাইলের শক্তিশালী ট্রেড ইউনিয়ন হিস্ট্রাড্রট গতকাল সোমবার থেকে সর্বাত্মক ধর্মঘট পালনের নির্দেশ দেয়। হিস্ট্রাড্রটের চেয়ার আর্নন ভার-ডেভিড তার বিবৃতিতে বলেন, ‘শুধু আমাদের হস্তক্ষেপই তাদের (সরকার) নাড়া দিতে পারে। জিম্মি মুক্তিতে রাজনৈতিক কারণে একটি চুক্তির অগ্রগতি হচ্ছে না। এটা অগ্রহণযোগ্য।’
এর আগে রোববার তেল আবিবে বিক্ষোভকারীরা একটি মহাসড়ক অবরোধ করেন। এ সময় তারা কর্তৃপক্ষের বাধার মুখে পড়েন। পুলিশ এক বিবৃতিতে বলেছে, বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে বাধ্য হয়েছে তারা।

সম্পর্কিত পোস্ট