শনিবার, ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪

সংস্কারের পথ ধরে নির্বাচন :তারেক রহমান

সংস্কারের পথ ধরে নির্বাচনী রোডম্যাপে যাবে বাংলাদেশ এরকম প্রত্যাশা ব্যক্ত করে তারেক রহমান বলেছেন, আমি বলতে চাই, ক্ষমতার পরিবর্তন মানে শুধু রাষ্ট্রের ক্ষমতার হাত বদল নয়। ক্ষমতার পরিবর্তন মানে রাষ্ট্র ও রাজনীতির গুনগত পরিবর্তন। তাই প্রতিটি রাজনীতি নেতা-কর্মীদের মাঝে আমার প্রয়োজন। রাজনীতির গুনগত পরিবর্তনের জন্য রাজনৈতিক দলের নেতা-কর্মীদের আচার-আচরণের গুনগত পরিবর্তন জরুরী।

মঙ্গলবার (১৭ সেপ্টেম্বর) বিকালে নয়া পল্টনে বিএনপির সমাবেশে দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান নেতা-কর্মীদের উদ্দেশ্যে এসব কথা বলেন। তিনি বলেন, আমরা কোনো প্রলোভন কিংবা কোনো উস্কানিতে বিভ্রান্ত না হয়ে জ্ঞানভিত্তিক রাষ্ট্র এবং সমাজের নেতৃত্ব দানের জন্য নিজেকে প্রস্তুত করুন।

তারেক রহমান বলেন, শত শহীদের রক্তস্নাত এই রাজপথে আজ আপনাদের এই স্বতঃস্ফূর্ত উপস্থিতির অর্থ জনগণের বৈষম্যহীন বাংলাদেশ গড়ার এই যাত্রা পথে বাংলাদেশের পক্ষের শক্তিকে আরও কিছু পথ পাড়ি দিতে হবে।

বিএনপির উদ্যোগে ‘আন্তর্জাতিক গণতন্ত্র দিবস’ উপলক্ষে এই গণসমাবেশের করে। ঢাকা মহানগরের বিভিন্ন থানা ও ওয়ার্ড ছাড়াও গাজীপুর, নরসিংদী, মুন্সিগঞ্জ, মানিকগঞ্জ, নারায়ণগঞ্জ, টাঙ্গাইল জেলা থেকেও নেতা-কর্মীরা ব্যানার-ফেস্টুন নিয়ে এই সমাবেশে অংশ নেয়।

বিকাল আড়াইটায় নটরড্যাম কলেজ থেকে কাকরাইলের নাইটেঙ্গল রেস্তোরার মোড় পর্যন্ত হাজার হাজার নেতা-কর্মীর উপস্থিতিতে সমাবেশটি জনসমুদ্রে রূপ নেয়। অংশ নেওয়া কর্মীদের অনেকের হাতে ছিলো জিয়াউর রহমান, খালেদা জিয়া ও তারেক রহমান প্রতিকৃতি সম্বলিত প্ল্যাকার্ড।

তারেক রহমান বলেন, কেউ যদি মনে করে একটি পরিণত এবং নিরাপদ বাংলাদেশের জন্য আরও নতুন রাজনৈতিক দলের প্রয়োজন রয়েছে তাতেও দেশের কিছু নেই। শেষ পর্যন্ত জনগনই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে। জনগণ কাকে সমর্থন জানাবে কিংবা কাকে সমর্থন দেবে না এটি তার নিজস্ব বিষয়। এই কারণে বিএনপি বরাবর জনগণের ভোটের অধিকারের ওপর জোর দিয়েছে। বিএনপি মনে করে একমাত্র অবাধ সুষ্ঠু নির্বাচনের মাধ্যমে রাষ্ট্র, রাজনীতি এবং রাজনৈতিক বন্দোবস্তের সঙ্গে জনগণের প্রত্যক্ষ অংশীদারিত্ব প্রয়োজন।

তিনি বলেন, গণঅভ্যুত্থান কিংবা সংস্কার কার্যক্রম নিয়ে রাজনীতির মাঠে নানারকম কথাবার্তা হচ্ছে।গণতান্ত্রিক রাজনীতিতে এটি একটি স্বাভাবিক এবং গ্রহণযোগ্য নীতি। প্রত্যেকে তাদের নিজ নিজ দৃষ্টিভঙ্গি প্রকাশ করবে এটিই স্বাভাবিক। এ নিয়ে বিচলিত হওয়ার কোনো কিছু নেই।

ছাত্র-জনতার বিপ্লবে শেখ হাসিনা সরকারের পতন, ‘মাফিয়া চক্র’ দেশের রাজনীতি, অর্থনীতি ও গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানগুলো ধ্বংস করে দেয়া, জনগণের ঋণভারে জর্জরিত করার চিত্র তুলে ধরে তারেক রহমান বলেন, অন্যায়, অনিয়ম, অরাজকতার বিরুদ্ধে গণবিস্ফোরণে মাফিয়া চক্রের প্রধান দেশ ছেড়ে পালানোর পর দেশের মাফিয়ার শাসন-শোষণের অবসান ঘটেছে। প্রকৃত স্বৈরাচারের পলায়নের মধ্য দিয়ে একটি গণতান্ত্রিক, মানবিক বাংলাদেশ গড়ার কাজে প্রধান বাধা হয়ত দূর হয়েছে।

নির্বাচন কমিশন, জনপ্রশাসন এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সংস্কার করে একটি নির্বাচিত সরকার প্রতিষ্ঠার কাজকে প্র অগ্রাধিকার হিসেবে নিয়ে এগিয়ে যেতে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রতি আহ্বান জানান বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান। ছাত্র-জনতা বিপ্লব ও গণতান্ত্রিক আন্দোলনের শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেন দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান।

সভাপতির বক্তব্যে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, এই অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের যারা দায়িত্বে আছেন তাদেরকে অনুরোধ করতে চাই, এখনো আমলাদের মধ্যে, সরকারের মধ্যে সেই ফ্যাসিবাদী সরকারের অনেক প্রেত্মতা উস্কানি দিচ্ছে। তারা সমস্ত যে প্রচেষ্টা আমাদের গণতন্ত্র ফিরিয়ে দেয়া…. কাজ নস্যা করার জন্য তারা বসে আছে।

দলের প্রচার সম্পাদক সুলতান সালাউদ্দিন টুকু, ঢাকা মহানগর উত্তরের আমিনুল হক ও দক্ষিণের তানভীর আহমেদ রবিনের যৌথ পরিচালনায় সমাবেশে স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন, মির্জা আব্বাস, আবদুল মঈন খান, এজেডএম জাহিদ হোসেন, ভাইস চেয়ারম্যান জয়নাল আবেদীন, আসাদুজ্জামান রিপন, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য আমান উল্লাহ আমান, আবদুস সালাম, কেন্দ্রীয় নেতা খায়রুল কবির খোকন, হাবিব উন নবী খান সোহেল, শহিদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি, শামসুর রহমান শিমুল বিশ্বাস, কাজী সাইয়্যেদুল আলম বাবুল, ঢাকা জেলার নিপুণ রায় চৌধুরী, গাজীপুরের ফজলুল হক মিলন, নারায়ণগঞ্জের শওকত হোসেন সরকার, মুন্সিগঞ্জের কামরুজ্জামান রতন, টাঙ্গাইলের হাসানুজ্জামিল শাহিন প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।

অঙ্গসংগঠনের মধ্যে ঢাকা মহানগর দক্ষিণের রফিকুল আলম মজনু, যুব দলের এম মোনায়েম মুন্না, কৃষক দলের হাসান জাফির তুহিন, শ্রমিক দলের আনোয়ার হোসেইন, মহিলা দলের সুলতানা আহমেদ, মুক্তিযোদ্ধা দলের সাদেক আহমেদ খান, স্বেচ্ছাসেবক দলের রাজীব আহসান, জাসাসের হেলাল খান, মৎস্যজীবী দলের আব্দুর রহিম, তাঁতি দলের আবুল কালাম আজাদ, ছাত্র দলের রাকিবুল ইসলাম রাকিব প্রমুখ বক্তব্য দেন।

সম্পর্কিত পোস্ট