শনিবার, ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪

বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে নিহত সাংবাদিক পরিবারকে আর্থিক অনুদান

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে নিহত ৫ সাংবাদিক পরিবারকে আর্থিক অনুদান দেওয়া হয়েছে।
রোববার (২২ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবে এক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্রের ‘লাভ শেয়ার বিডি-ইউএস’-এর পক্ষ থেকে ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে নিহত ৫ সাংবাদিক পরিবারকে আর্থিক এক লাখ করে টাকা সহায়তা প্রদান করা হয়।
এ সময় স্বৈরাচার হাসিনা সরকারের পতনে সাংবাদিক সমাজের ভূমিকা ও বর্তমান করণীয় শীর্ষক এক আলোচনা সভাও অনুষ্ঠিত হয়। সভায় বক্তারা বলেন, বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের মধ্যদিয়ে গণঅভ্যুত্থান হয়েছে। তোপের মুখে ফ্যাসিবাদী হাসিনা সরকার দেশ থেকে পালিয়েছে। কিন্তু প্রতিদিন ছোট ছোট ঘটনা ঘটছে। এসব ঘটনা দেশি-বিদেশি ষড়যন্ত্রের অংশ। রক্তের বিনিময় অর্জিত এই গণঅভ্যুত্থান ষড়যন্ত্রের কাছে নষ্ট হতে দেওয়া যাবে না। সেজন্য সবাইকে সতর্ক ও সজাগ থাকতে হবে।
জাতীয় প্রেসক্লাবের সভাপতি কবি হাসান হাফিজের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে মুখ্য আলোচক ছিলেন জাতিসংঘ ও স্টেট ডিপার্টমেন্টে কর্মরত যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী সাংবাদিক মুশফিকুল ফজল আনসারী। অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন, জাতীয় প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি কামাল উদ্দিন সবুজ, সাবেক সাধারণ সম্পাদক ইলিয়াস খান, বর্তমান সাধারণ সম্পাদক আইয়ুব ভূঁইয়া, বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের সাবেক সভাপতি ও সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্টের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এম আব্দুল্লাহ, ডিইউজের সভাপতি শহিদুল ইসলাম, সাধারণ সম্পাদক খুরশিদ আলম, সাবেক সভাপতি কবি আব্দুল হাই শিকদার, বিএফইউজের ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব বাছির জামাল, ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সাবেক সভাপতি মোরসালিন নোমানী, আমার দেশ পত্রিকার বার্তা সম্পাদক জাহেদ চৌধুরী প্রমুখ।
মুখ্য আলোচনায় বিশিষ্ট সাংবাদিক মুশফিকুল ফজল আনসারী বলেন, আমরা এখানে বসে অনেক সুন্দর সুন্দর কথা বলছি। কিন্তু হাসপাতালে এখন আহতরা অসহায় ভাবে জীবন যাপন করছে। অনেকের শরীর থেকে পা আলাদা হয়ে গেছে। অনেকের চোখ নষ্ট হয়ে গেছে। অনেকের বিদেশে চিকিৎসা করার সামর্থ্য নেই। তবুও তাদের মুখ স্বস্তির হাসি। কারণ দেশ থেকে ফ্যাসিবাদীর বিদায় হয়েছে।
বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে আহত নিহত সাংবাদিকদের ডাটাবেজ তৈরির আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনে অনেক সাংবাদিক আহত হয়েছে। অনেকে নিহত হয়েছে। কে কোথায় কিভাবে নিহত হয়েছে তার সঠিক ডাটাবেজ তৈরি করতে হবে। তাদের পরিবার কিভাবে চলছে সেগুলো খোঁজখবর নেওয়া উচিত। এজন্য প্রেসক্লাবের সবাইকে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে হবে।
ড. মোহাম্মদ ইউনুসকে সরকার প্রধানের দায়িত্ব দেওয়া দেশের জন্য স্বস্তির উল্লেখ করে তিনি বলেন, দেশে অনেক বড় পরিবর্তন হচ্ছে। তবে কিছু ছন্দপতন আছে। কারণ বাংলাদেশের মানুষের আকাঙ্ক্ষা অনেক বিস্তর। গত ১৫ বছর এই আকাঙ্ক্ষার বাস্তবায়ন হয়নি। মানুষের এসব সমস্যা চিহ্নিত করে সমাধান করতে হবে। এজন্য সবাই এক সাথে কাজ করতে হবে।  কারণ এখনও দেশী বিদেশি ষড়যন্ত্র আমাদের বিরুদ্ধে চলছে। এ ষড়যন্ত্র চিহ্নিত করতে হবে এবং সমাধান উদ্যোগ নিতে হবে।
নিহত ৫ সাংবাদিক পরিবারকে আর্থিক অনুদান:  ঢাকা টাইমস সিনিয়র রিপোর্টার হাসান মেহেদী, ফ্রিল্যান্স সাংবাদিক তাহির জামান প্রিয়, গাজীপুরের দৈনিক ভোরের আওয়াজ পত্রিকার সাংবাদিক শাকিল হোসেন, দৈনিক নয়া দিগন্ত পত্রিকার সিলেট প্রতিনিধি আবু তাহের মোহাম্মদ তুরাব এবং দৈনিক খবরপত্র পত্রিকার রায়গঞ্জ প্রতিনিধি প্রদীপ কুমার ভৌমিক। অনুষ্ঠানে তিন জনের পরিবারকে সরাসরি এক লাখ টাকা করে অর্থ প্রদান করা হয়।

সম্পর্কিত পোস্ট