শনিবার, ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪

নির্বাচিত সরকার ছাড়া উন্নয়ন ও অগ্রগতি সম্ভব নয় : তারেক রহমান

ছাত্র-জনতার জুলাই বিপ্লবে স্বৈরাচারী সরকারের পতন হলেও তাদের দোসররা বসে নেই এবং তারা নানা ষড়যন্ত্র করছে অভিযোগ করে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেছেন, এ কারণে সবাইকে সজাগ ও সতর্ক থাকতে হবে। আর দেশকে এগিয়ে নিতে হলে রাজনৈতিক অধিকার প্রতিষ্ঠার পাশাপাশি দেশের অর্থনৈতিক মুক্তির জন্য সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করতে হবে।
সোমবার (২৩ সেপ্টেম্বর) বিকালে কিশোরগঞ্জের পুরাতন স্টেডিয়ামে জুলাই বিপ্লবে শহিদ ও আহতদের স্মরণে জেলা বিএনপি আয়োজিত গণসমাবেশে ভার্চুয়াল মাধ্যমে যুক্ত হয়ে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
তারেক রহমান বলেন, দলমত নির্বিশেষে সবাইকে নিয়ে দেশের উন্নয়ন করতে হবে। শহিদদের আত্মত্যাগ ধরে রাখতে হলে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার কোনো বিকল্প নেই। জনগণের নির্বাচিত সরকার ছাড়া দেশের উন্নয়ন ও অগ্রগতি সম্ভব নয়। এ জন্য দরকার ভোটের মাধ্যমে নির্বাচিত জনগণের সরকার। এই অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্যই জুলাই বিপ্লবে হাজারো ছাত্র-জনতা শহিদ হয়েছেন।
বিএনপির কেন্দ্রীয় সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক ও কিশোরগঞ্জ জেলা বিএনপির সভাপতি শরীফুল আলামের  সভাপতিত্বে আয়োজিত গণসমাবেশে তারেক রহমান আরও বলেন, বাংলাদেশ একটি সম্ভাবনাময় দেশ। এখানে প্রয়োজন কেবল সঠিক পরিকল্পনা। জনগণের ভোটে নির্বাচিত সঠিক নেতৃত্ব। যাদের জাবাবদিহি থাকবে জনগণের কাছে। রাজনৈতিক ক্ষমতা অর্জনের মাধ্যমে আমরা দেশবাসীর সামনে সেই সুযোগ সৃষ্টি করে দিতে পারি।  আমাদের সামনে সেই সুযোগ এসেছে, তাকে কাজে লাগাতে হবে। আমাদেরে ঐক্যবদ্ধ প্রচেষ্টাই কেবল তা সম্ভব করে তুলতে পারে।
বিকাল ৩টায় গণসমাবেশ শুরু হওয়ার কথা থাকলেও শুরু হয় ৪টায়। প্রচ- রোদ ও গরম উপেক্ষা করে বিএনপির হাজার হাজার নেতাকর্মী ব্যানার-পোস্টার নিয়ে মিছিল করে গণসমাবেশে যোগ দেন। কিছুক্ষণের মধ্যেই পুরো সভাস্থল কানায় কানায় ভরে যায়। স্টেডিয়ামের বাইরেও শত শত জনতাকে দাঁড়িয়ে থেকে তারেক রহমানের বক্তব্য শুনতে দেখা যায়।
তারেক রহমান কিশোরগঞ্জের সার্বিক উন্নয়ন ও কর্মসংস্থান পরিকল্পনা নিয়ে বলেন,  এ জেলায় দেশের ১৬ ভাগ ধান উৎপন্ন হয়। আমরা কৃষকদের সহযোগিতা দিলে এ উৎপাদন আরও বাড়ানো সম্ভব। এটি ২৫ ভাগে নিয়ে যাওয়া সম্ভব। তা ছাড়া এখানকার ইটনা, মিঠামইন ও অষ্টগ্রামে মাছের বিপুল সম্ভাবনা রয়েছে।
আমরা ক্ষমতায় গেলে হাওর নিয়ে এমন পরিকল্পনা করব, যেন দেশের চাহিদা মিটিয়ে মাছ বিদেশেও রফতানি করা সম্ভব হয়। এ খাতে সৃষ্টি হয় বিপুল কর্মসংস্থান। এ সময় তিনি অষ্টগ্রামের বিখ্যাত পনিরের অর্থনৈতিক সম্ভাবনার কথা বলেন। পনিরকে বিশ্ববাজারে নিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা আমার রয়েছে, যোগ করেন তারেক রহমান।
বিএনপি ক্ষমতায় গেলে গ্রাম থেকে জেলা পর্যায় পর্যন্ত প্রতিটি পরিবারের জন্য একটি করে ফ্যামিলি কার্ড করে দেওয়ার কথা জানিয়ে বলেন, এগুলো বরাদ্দ দেওয়া হবে নারীদের মাঝে। যেন সমাজ ও পরিবারে তাদের ক্ষমতায়ন হয়। এ ফ্যামিলি কার্ডের মাধ্যমে প্রতিটি পরিবারকে উল্লেখযোগ্য পরিমাণ খাদ্য সহায়তা দেওয়া হবে। যাতে পরিবারগুলো উপকৃত হয়।
তারেক রহমান আরও বলেন, আমরা ৩১ দফা কর্মসূচি দিয়েছি। ভবিষ্যতে জনগণের সমর্থন পেলে সবাইকে নিয়ে দেশ পরিচালনা করব।
সমাবেশে অন্যান্যের মধ্যে বক্তৃতা করেন, দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান, বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা অ্যাডভোকেট ফজলুর রহমান, দলের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক ইমরান সালেহ প্রিন্স, যুবদলের কেন্দ্রীয় নেতা আকিল অহমেদ, কিশোরগঞ্জ জেলা বিএনপির সহ-সভাপতি অ্যাডভোকেট জালাল উদ্দিন, আমিনুল ইসলাম রতন, রেজাউল করিম খান চুন্নু, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক খালেদ সাইফুল্লাহ সোহেল, সাংগঠনিক সম্পাদক হাজি মো. ইসরাইল।
এ ছাড়াও সভায় কেন্দ্রীয় ও স্থানীয় নেতৃবৃন্দসহ বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে নিহতদের স্বজন ও  আহতরা বক্তব্য দেন। সঞ্চালনা করেন জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মো. মাজহারুল ইসলাম।
সভার শুরুতে জেলায় জুলাই বিপ্লবে শহিদ পরিবারের সদস্য, আহত ও ক্ষতিগ্রস্তদের দলের পক্ষ থেকে আর্থিক সহায়তা দেওয়া হয়।

সম্পর্কিত পোস্ট