ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী সশস্ত্র সংগঠন হামাসের প্রধান নেতা ইয়াহিয়া সিনওয়ারকে হত্যার পর ইরান জানিয়েছে, এতে প্রতিরোধ বাহিনীগুলোর চেতনা আরও শক্তিশালী হবে। অন্যদিকে লেবাননের সশস্ত্র গোষ্ঠী হিজবুল্লাহ জানিয়েছে, ইসরায়েলের বিরুদ্ধে চলমান যুদ্ধকে নতুন ও গতিশীল ধাপে নিয়ে যাওয়া হবে।
২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে চালানো হামলার মাস্টারমাইন্ড হিসেবে বিবেচনা করা হয় ইয়াহিয়া সিনওয়ারকে। এরপর থেকেই অবরুদ্ধ গাজায় অভিযান পরিচালনা করছে ইসরায়েলি বাহিনী।
বৃহস্পতিবার (১৭ অক্টোবর) ইসরায়েলি বাহিনী জানিয়েছে, গত বুধবার পরিচালিত এক অভিযানে সিনওয়ার নিহত হয়েছেন এবং তার মরদেহ শনাক্ত করার প্রক্রিয়া শেষে এ তথ্য নিশ্চিত করা হয়েছে। যদিও হামাসের পক্ষ থেকে এখন পর্যন্ত এ ব্যাপারে কিছু জানানো হয়নি। তবে সংগঠনটির সূত্রগুলো বলছে, যেসব ইঙ্গিত দেখা যাচ্ছে তাতে মনে হচ্ছে ইসরায়েলের সেনাবাহিনী সিনওয়ারকে হত্যা করেছে।
ইসরায়েলি সামরিক বাহিনীর বিবৃতিতে বলা হয়েছে, গত বছরের পর থেকে এবং সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ) এবং শিন বেটের (ইসরায়েলের অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা সংস্থা) যৌথ অভিযানগুলোর মাধ্যমে সিনওয়ারের চলাচল সীমিত করা হয়। এই তৎপরতার ফলেই তাকে হত্যা করা সম্ভব হয়েছে।
সিনওয়ারের লাশের তিনটি ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়। এতে দেখা যাচ্ছে, তিনি একটি ভবনের ধ্বংসস্তূপের নিচে পড়ে আছেন। তার মাথায় গভীর ক্ষত রয়েছে। ওই সময় সিনওয়ার নিরাপত্তা ভেস্ট এবং হাতে একটি ঘড়ি পরা ছিলেন। রাফার এই বাড়িতেই প্রবেশ করেছিলেন সিনওয়ার। বাড়িটির ধ্বংসস্তূপ থেকে তার লাশ বের করে নিয়ে যায় ইসরায়েলি সেনারা।
বিবিসি ছবিগুলো যাচাই-বাছাই করে বলেছে, মরদেহটির চোখের ভ্রু, চোখের নিচের একটি দাগ এবং দাঁতের সঙ্গে সিনওয়ারের আগের ছবির সম্পূর্ণ মিল রয়েছে। এর অর্থ, এটি সিনওয়ারেরই মরদেহ ছিল।
এদিকে, হামাসের প্রধান ইয়াহিয়া সিনওয়ারকে হত্যার ঘটনায় প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন পশ্চিমা দেশগুলো। এটিকে ইসরায়েলের জন্য বড় সাফল্য বলে মনে করছে এসব দেশ। পাশাপাশি মধ্যপ্রাচ্যে যুদ্ধবিরতির সম্ভাবনা জোরদার করবে বলে প্রত্যাশা করছে দেশগুলো। হামাস প্রধানকে হত্যার খবরে বিবৃতি দিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ও ভাইস প্রেসিডেন্ট কমলা হ্যারিস।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বলেছেন, ইসরায়েল, যুক্তরাষ্ট্র এবং বিশ্বের জন্য আজ একটি শুভদিন। ইয়াহিয়া সিনওয়ার নিহত হওয়ায় গাজার বুকে হামাসের ক্ষমতার অবসান ঘটবে। একটি রাজনৈতিক মীমাংসার সুযোগ তৈরি হবে। এতে ইসরায়েল ও ফিলিস্তিনিরা একটি ভালো ভবিষ্যৎ উপহার পাবে।