সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের চার সদস্যের আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণা

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের চার সদস্যের নতুন আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণা করা হয়েছে। যা দ্রুততম সময়ের মধ্যে এ পূর্ণাঙ্গ কেন্দ্রীয় আহ্বায়ক কমিটিকে করা হবে।

মঙ্গলবার (২২ অক্টোবর) রাজধানীর কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ কমিটি ঘোষণা করেন সমন্বয়ক সারজিস আলম।

কমিটিতে সমন্বয়ক হাসনাত আবদুল্লাহকে আহ্বায়ক ও সমন্বয়ক আরিফ সোহেলকে সদস্যসচিব করা হয়েছে। এতে মুখ্য সংগঠক আবদুল হান্নান মাসউদ এবং মুখপাত্র করা হয়েছে উমামা ফাতেমাকে।

কমিটি করা প্রসঙ্গে সারজিস আলম বলেন, প্রথমত: যারা ভুয়া সমন্বয় পরিচয় দিচ্ছেন, বিভিন্ন অপকর্মে জড়িত হচ্ছে তাদের যেন আমরা আইন এবং শাস্তির আওতায় নিয়ে আসতে পারি। দ্বিতীয়ত: বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ভিতরে থেকেও যদি তাদের মধ্যে কোনো অসৎ উদ্দেশ্য থাকে তাহলে যেন তাদের বহিষ্কার করে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারি। তৃতীয়ত: আমাদের এ যুদ্ধটি এখনো শেষ হয়ে যায়নি, আমরা যদি আমাদের এ স্পিরিট ধরে রেখে সামনে এগিয়ে যেতে চাই এবং সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে সামনের যুদ্ধটি আরও কঠিন হবে, সেজন্য আমাদের আরও সুসংগঠিত হতে হবে।

তিনি আরও বলেন, এ অভ্যুত্থান ছিল সব ছাত্র-জনতার একটি অভ্যুত্থান। আমাদের জায়গা থেকে আমরা চাই যারা এ অভ্যুত্থানে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছেন, গুরুত্বপূর্ণ জায়গা থেকে, জীবন বাজি রেখে এ অভ্যুত্থানটি বিভিন্ন পয়েন্ট থেকে সুসংগঠিত করার চেষ্টা করেছেন তাদের খুঁজে বের করে নিয়ে আসতে। সে যে প্রতিষ্ঠানেরই হোক, যে ক্ষেত্রেরই হোক। সে জায়গা থেকে ওই মানুষগুলোকে খুঁজে নিয়ে সুসংগঠিত করার জন্যই আমাদের এ প্রাথমিক কাঠামো।

সারজিস আলম আহ্বায়ক কমিটির চার সদস্যের নাম ঘোষণার পর বলেন, আমাদের স্পষ্ট বার্তা এ চারজনের টিমটি বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের হয়ে পুরো বাংলাদেশে কাজ করবে, তাদের উদ্দেশ্য হচ্ছে পুরো বাংলাদেশে যে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো আছে- সরকারি, বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয়, মাদরাসা, সাত কলেজ, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়, অন্যান্য স্কুল-কলেজ-দেশের প্রতিটি জেলা-উপজেলায় যারা এ অভ্যুত্থান ঘটাতে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ এবং সংগঠকের ভূমিকা পালন করেছেন তাদের একটি কাঠামোর মধ্যে নিয়ে এসে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন সুসংগঠিত করা।

আমরা আমাদের জায়গা থেকে দ্রুততম সময়ের মধ্যে এই চারজনের আহ্বায়ক কমিটিকে একটি পূর্ণাঙ্গ কমিটিতে রূপান্তরের মাধ্যমে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনকে পুরো বাংলাদেশের সামনে একটি সুসংগঠিত কাঠামোর মধ্যে নিয়ে আসতে চাই।

সংবাদ সম্মেলনে সমন্বয়ক আবদুল কাদের বলেন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ব্যানার শুধু কোটা সংস্কারে থাকেনি। ফ্যাসিবাদের পতন ত্বরান্বিত করতে এ ব্যানারে ঐক্যবদ্ধ হয়েছে ছাত্র-জনতা। আমরা মনে করি এ ব্যানারের কার্যক্রম এখানেই শেষ হওয়ার সুযোগ নেই। গণ অভ্যুত্থান-পরবর্তী রাষ্ট্র সংস্কারের যে দায়দায়িত্ব তা এ ব্যানারের ওপর পড়ে।

যারা সমন্বয়ক পরিচয় দিয়ে বিভিন্ন অপকর্ম করে বেড়ান তাদের চিহ্নিত করতে সারা দেশে আন্দোলনকারীদের সুসংগঠিত করতে আমরা এ আহ্বায়ক কমিটি গঠন করেছি।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক কমিটির বিষয়ে আবদুল কাদের বলেন, আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণার মধ্য দিয়ে আমাদের বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক কমিটি বিলুপ্ত হয়ে গেছে। আমরা শিগগিরই সারা দেশে আন্দোলনকারীদের সংগঠিত করতে জেলা পর্যায়ে কমিটি ঘোষণা করব।

হাসনাত আবদুল্লাহ বলেন, আন্দোলনকারীদের সুসংগঠিত করা আমার প্রধানতম দায়িত্ব। সারা দেশে ফ্যাসিবাদ নানাভাবে উত্থানের চেষ্টা করছে। মুজিববাদ সমূলে উৎপাটন করার জন্য আমি আহ্বায়ক হিসেবে দায়িত্ব পালন করে যাব।

তিনি আরও বলেন, এ ছাড়া আমাদের এক দফার যে দাবি ছিল ফ্যাসিবাদ ব্যবস্থার বিলোপ ও নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্ত; এ নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্ত ত্বরান্বিত করতে আমি কাজ করে যাব।

সমন্বয়ক আবু বাকের মজুমদার বলেন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের যে চার সদস্যের আহ্বায়ক কমিটি গঠন করা হয়েছে সেটা ১৫৮ সদস্যের মতামতের ভিত্তিতে করা হয়েছে। এর উদ্দেশ্য পুরো দেশকে সংগঠিত করা এবং একই সঙ্গে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় কমিটি পুনর্গঠিত করা।

এ চারজনের নেতৃত্বে এবং বাকিদের সহযোগিতায় সেটা করা হবে, সঙ্গে পরবর্তী কাজ পরিচালনা করা হবে এবং এ কমিটিতে জেনজিকে প্রাধান্য দেওয়া হবে। ইয়ুথ স্পিরিট ধারণ করে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন কাজ করবে।

সম্পর্কিত পোস্ট