ঘুরতে কার না ভালো লাগে। দেশ ভ্রমণ তো বটেই, পাশাপাশি বিদেশ ভ্রমণের সুযোগ খোঁজা ভ্রমণপিপাসু মানুষের সংখ্যাও কম নেহাত নয়। তবে দেশ ভ্রমণের বিস্তর পার্থক্য আছে। বিদেশ ভ্রমণ অনেকটা জটিল ও কষ্টসাধ্য।
অনেকেই হয়তো জানেন না এক ভিসায়ই আপনি সেনজেনভুক্ত ইউরোপের ২৬টি দেশ ভ্রমণ করতে পারেন। সেনজেন বলতে বুঝায় ইউরোপ মহাদেশের ৫০টি দেশের মধ্যে ২৬টি দেশকে বুঝি। ২৬টি দেশই স্বাধীন ও সার্বভৌম রাষ্ট্র। তাদের নিজস্ব পৃথক ভাষা, মুদ্রা ও রাজধানী আছে।
এই ২৬টি দেশ ভিসা পলিসির ক্ষেত্রে একই নীতি অবলম্বন করে থাকে, যাকে আমরা সেনজেন ভিসা বলি। যদি ২৬টি দেশের কোনো একটি দেশের ট্যুরিস্ট বা কনফারেন্স ভিসা পেয়ে যান, তবে সেনজেনের ২৬ দেশেই ভ্রমণ করতে পারবেন।
২৬ দেশের নাম হচ্ছে-অস্ট্রিয়া, বেলজিয়াম, চেক রিপাবলিক, ডেনমার্ক, এস্তোনিয়া, ফিনল্যান্ড, ফ্রান্স, জার্মানি, গ্রিস, হাঙ্গেরি, আইসল্যান্ড, ইতালি, লাটভিয়া, লিয়েসথেন্সটাইন, লিথুনিয়া, লুক্সেমবার্গ, মালটা, নেদারল্যান্ডস, নরওয়ে, পোল্যান্ড, পর্তুগাল, স্লোভেকিয়া, স্লোভেনিয়া, স্পেন, সুইডেন এবং সুইজারল্যান্ড।
বাংলাদেশে সেনজেনভুক্ত ২৬টি দেশের মধ্যে সাতটি দেশের এম্বাসি আছে। সাতটি দেশ হলো-সুইডেন, ফ্রান্স, ডেনমার্ক, জার্মান, ইতালি, স্পেন এবং সুইজারল্যান্ড। আর ১৫টি দেশের এম্বাসি বাংলাদেশে নেই, তবে সুইডেন, ফ্রান্স, ডেনমার্ক, জার্মান, ইতালি এম্বাসির সঙ্গে যুক্ত হয়ে কাজ করে থাকে।
ভ্রমণ ভিসা প্রাপ্তির জন্য যা প্রয়োজন
ভিসার জন্য আবেদনকৃত দেশের দূতাবাসের ওয়েবসাইট থেকে ভিসা আবেদন ফরম ডাউনলোড করে ইংরেজি বড় হাতের অক্ষরে পূরণ করতে হবে। পাসপোর্টের যেসব পৃষ্ঠায় আপনার ব্যক্তিগত তথ্য আছে, সেসব পৃষ্ঠার স্পষ্ট ফটোকপি। সফর শেষেও পাসপোর্টের মেয়াদ অন্তত তিন মাস থাকতে হবে। রঙিন চশমা পরা কিংবা মাথা ঢাকা অবস্থায় ছবি তোলা যাবে না। পাসপোর্ট, পাসপোর্ট সাইজের দুই কপি রঙিন ছবি জমা দিতে হবে, তবে ছবির ব্যাকগ্রাউন্ড সাদা হবে। নির্দিষ্ট পরিমাণ আবেদন প্রক্রিয়াকরণ ফি জমা দিতে হবে, যা অফেরতযোগ্য।
ভ্রমণ ভিসার ক্ষেত্রে স্পন্সর থাকলে স্পন্সরের পাসপোর্ট বা আইডি কার্ডের মূল কপি ও ফটোকপি এবং বিগত তিন মাসের বেতনের প্রমাণপত্র আর স্পন্সর না থাকলে হোটেল বুকিংয়ের প্রমাণপত্র, ছুটির মেয়াদ উল্লেখ করে চাকরিদাতা প্রতিষ্ঠানের দেওয়া সনদ, বিগত ছয় মাসের ব্যাংক অ্যাকাউন্টের বিবরণী ইত্যাদি।
ব্যবসায়িক ভিসার ক্ষেত্রে
আমন্ত্রণপত্র, আমন্ত্রণকারী ভ্রমণ ব্যয় বহন করলে তার প্রমাণপত্র, ব্যবসার রেজিস্ট্রেশন এবং ট্রেড লাইসেন্সের কপি, হোটেল বুকিংয়ের কাগজপত্রের কপি।
চিকিৎসার জন্য ভ্রমণের ক্ষেত্রে বাংলাদেশি চিকিৎসকের দেওয়া সনদ, বিদেশি যে চিকিৎসক বা হাসপাতালে দেখানো হবে সেখানকার প্রমাণপত্র, যেখানে চিকিৎসার আনুমানিক খরচ এবং সময়ের উল্লেখ থাকবে, রোগী বা রোগীর আত্মীয়ের সামর্থ্যরে প্রমাণপত্র এবং ব্যয় অগ্রিম প্রদান করা হয়েছে তার প্রমাণপত্র। শিশুরা ভ্রমণ করতে চাইলে আলাদা একটি ফরম পূরণ করে জমা দিতে হবে, সঙ্গে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে দেওয়া ছুটির অনুমতিপত্র দিতে হবে।