আওয়ামী লীগসহ ১১টি দলকে রাজনৈতিক কার্যক্রম চালানোর অনুমতি না দেয়ার নির্দেশনা চাওয়া ও বিগত তিনটি নির্বাচনের বৈধতা প্রশ্নে দায়েরকৃত রিট পিটিশন না চালানোর কথা জানিয়েছেন রিট আবেদনকারীদের আইনজীবী।
বিচারপতি ফাতেমা নজীব ও বিচারপতি শিকদার মাহমুদুর রাজীর সমন্বয়ে গঠিত একটি হাইকোর্ট ডিভিশন বেঞ্চে আজ রিট দুটি না চালানোর কথা জানান রিট আবেদনকারীদের সিনিয়র এডভোকেট আহসানুল করিম। এরপর আদালত রিট আবেদন দুটি উত্থাপিত হয়নি বলে খারিজ করে দেন।
এ সময় আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি এটর্নি জেনারেল নূর মুহাম্মদ আজমী ও আখতার হোসেন মো. আবদুল ওয়াহাব।
একটি রিটে আওয়ামী লীগসহ ১১টি দলকে কোনো রাজনৈতিক কর্মকা- চালিয়ে যেতে অনুমতি না দিতে অন্তর্বর্তীকালীন নির্দেশনা চাওয়া হয়েছিল। রিট আবেদনে নির্বিচার মানুষ হত্যা, গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠান ধ্বংস করা, বেআইনি প্রক্রিয়ায় অসাংবিধানিকভাবে রাষ্ট্রক্ষমতা দখলের অভিযোগ আনা হয়েছিল দলগুলোর বিরুদ্ধে।
এছাড়া, দশম, একাদশ ও দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের বৈধতা নিয়ে অপর একটি রিট করেন তিন রিটকারি। যেখানে বিগত তিন নির্বাচনের গেজেট বাতিল চাওয়া হয়। এছাড়া ওইসব নির্বাচনে এমপিদের সকল সুযোগ সুবিধা বাতিল করে তা প্রত্যাহারের নির্দেশনা চাওয়া হয়। একই সাথে ওই সব নির্বাচনের এমপিদের বিরুদ্ধে কেন রাষ্ট্রদ্রোহীতার অভিযোগ আনা হবে না, সে বিষয়ে রুল চাওয়া হয়েছিল।
হাইকোর্টে পৃথক রিট আবেদন দুটি করেছিলেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতা সারজিস আলম, আবুল হাসনাত (হাসনাত আবদুল্লাহ) ও হাসিবুল ইসলাম।
এদিকে ছাত্রলীগকে ‘সন্ত্রাসী সংগঠন’ হিসেবে নিষিদ্ধ ঘোষণা করে গত ২৩ অক্টোবর রাতে প্রজ্ঞাপন জারি করে সরকার। প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, সেহেতু সরকার ‘সন্ত্রাস বিরোধী আইন, ২০০৯’ এর ধারা ১৮ এর উপ-ধারা (১) প্রদত্ত ক্ষমতাবলে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠন ‘বাংলাদেশ ছাত্রলীগ’-কে নিষিদ্ধ ঘোষণা করল এবং এই আইনের তফসিল-২ এ ‘বাংলাদেশ ছাত্রলীগ’ নামীয় ছাত্র সংগঠনকে নিষিদ্ধ সত্ত্বা হিসেবে তালিকাভুক্ত করল। ইহা অবিলম্বে কার্যকর হবে।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন এবং জাতীয় নাগরিক কমিটি ২৩ অক্টোবর এক সংবাদ সম্মেলন থেকে ছাত্রলীগকে নিষিদ্ধ করতে আল্টিমেটাম দিয়ে কর্মসূচি ঘোষণা করেছিল। এরপরপরই সংগঠনটিকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করল সরকার। এছাড়াও বিভিন্ন সংগঠন ও শ্রেণী পেশার মানুষ সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে ছাত্রলীগকে নিষিদ্ধের দাবি জানিয়ে আসছিল।
বৈষম্য বিরোধী ছাত্র জনতার গণঅভ্যুত্থানে গত ৫ আগস্ট পদত্যাগ করে দেশ থেকে পালিয়ে যান সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা। এর মধ্য দিয়ে ১৫ বছরের অধিক সময় টানা ক্ষমতায় থাকা আওয়ামী লীগ সরকারের পতন হয়।