জার্মানির মধ্য-বামপন্থি চ্যান্সেলর ওলাফ শলৎজের নেতৃত্বাধীন ক্ষমতাসীন তিনদলীয় জোট সরকার ভেঙে গেল। ক্ষমতাসীন তিন দলের এই ‘ট্রাফিক লাইট’ জোটের মধ্যে রয়েছে- ফ্রি ডেমোক্র্যাটিক পার্টি (এফডিপি), সোশ্যাল ডেমোক্র্যাটিক পার্টি (এসপিডি) ও গ্রিন পার্টি। এখন আস্থা ভোটের দাবি তুলেছেন মধ্য-ডানপন্থি বিরোধী নেতা ক্রিশ্চিয়ান ডেমোক্র্যাটিক ইউনিয়নের (সিডিইউ) প্রধান ও সাবেক চ্যান্সেলর অ্যাঞ্জেলা মের্কেলের দলের নেতা ফ্রিডরিখ মের্জ।
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ান এ খবর জানিয়েছে। ট্রাম্প প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ার পর ইউরোপের সবচেয়ে বড় অর্থনীতির দেশ জার্মানিতে রাজনৈতিক অস্থিরতা দেখা দিয়েছে।
বুধবার (৬ নভেম্বর) রাতে মন্ত্রিসভার সঙ্গে সংকটকালীন বৈঠকে বসেন শলৎস। বৈঠকের পরই লিন্ডনারকে অর্থমন্ত্রীর পদ থেকে সরিয়ে দেন তিনি।
মূলত আগামী বছরের বাজেটের বিশাল ঘাটতি পূরণের বিষয়ে কোনো সমঝোতা না হওয়ায় দ্রুত নির্বাচন আহ্বান জানিয়েছিলেন অর্থমন্ত্রী ক্রিশ্চিয়ান লিন্ডনার। এর পরিপ্রেক্ষিতেই তাকে বরখাস্ত করা হয়।
চ্যান্সেলর ওলাফ শলৎস অভিযোগ করেন, অর্থমন্ত্রী লিন্ডনার প্রায়ই গুরুত্বপূর্ণ আইনগুলোর পথে বাধা সৃষ্টি করেছেন, বিশেষ করে ব্যয় সংক্রান্ত নিয়ম শিথিল করতে অনীহা দেখিয়েছেন। এই কারণে ইউক্রেনকে আরও সহায়তা প্রদানের জন্য যে অর্থ প্রয়োজন, সেটিও নিশ্চিত করা সম্ভব হয়নি। লিন্ডনার পাল্টা অভিযোগ এনে বলেন, চ্যান্সেলর প্রকৃত অর্থনৈতিক সমস্যাগুলোকে উপেক্ষা করছেন।
লিন্ডনার বলেন, ‘শলৎস আমাদের দেশের জন্য একটি নতুন অর্থনৈতিক জাগরণের প্রয়োজনীয়তা দীর্ঘদিন ধরে বুঝতে ব্যর্থ হয়েছেন।’
জোটের অপর শরিক গ্রিন পার্টি এ পরিস্থিতিতে দুঃখ প্রকাশ করলেও বিদ্যমান আংশিক সরকারে থাকার আগ্রহ প্রকাশ করেছে। তারা জানিয়েছে, বিশেষ করে ডোনাল্ড ট্রাম্পের মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের পর ইইউ এবং বিশেষত জার্মানির পদক্ষেপ গ্রহণের ক্ষমতা প্রদর্শন জরুরি। সূত্র: রয়টার্স
শলৎস ঘোষণা করেছেন, আগামী ১৫ জানুয়ারি সংসদে আস্থা ভোট অনুষ্ঠিত হবে। জার্মান সংবিধান অনুযায়ী, যদি শলৎস যথেষ্ট সমর্থন না পান তবে তিনি রাষ্ট্রপতিকে সংসদ ভেঙে নতুন নির্বাচনের আহ্বান জানাতে পারেন, যা ২০২৫ সালের মার্চে অনুষ্ঠিত হতে পারে।