চট্টগ্রামে হেফাজতে ইসলামের বিক্ষোভ সমাবেশে বক্তারা বলেছেন, ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে ঐক্য কোনো ধরনের উসকানিতে বিনষ্ট করা যাবে না। ইসকন জঙ্গি সংগঠন। হিন্দু সম্প্রদায় তাদের কোনো ফাঁদে পা দেবেন না। ইসকনকে বাংলাদেশ থেকে নিষিদ্ধ করতে হবে। অন্যথায় হেফাজত ইসলাম বাংলাদেশ আরও বড় কর্মসূচি দিতে বাধ্য হবে।
শুক্রবার (৮ নভেম্বর) জুমার নামাজের পর চট্টগ্রাম নগরীর আন্দরকিল্লা শাহী জামে মসজিদ প্রাঙ্গণে বিক্ষোভ সমাবেশে হেফাজতের নেতারা এসব কথা বলেন। নগরীর টেরিবাজারের কাছে হাজারি গলিতে মুসলিম দোকানদারের ওপর হামলা-ভাঙচুরের প্রতিবাদে এই বিক্ষোভ সমাবেশ আয়োজন করা হয়। হেফাজত ইসলামের মহানগর কমিটির উদ্যোগে আয়োজিত সমাবেশে বিপুল নেতাকর্মী অংশ নেন। সমাবেশে আরও বক্তব্য রাখেন সংগঠনের কেন্দ্রীয় কমিটির নেতারা।
সমাবেশে হেফাজতে ইসলামের ছাত্র ও যুব বিষয়ক সম্পাদক মাওলানা কামরুল ইসলাম কাশেমী বলেন, হেফাজত ইসলামের দায়িত্ব¡ হচ্ছে মুসলিম সমাজের কাছে তার করণীয় অবগত করা। যখন কোনো মুমিন আক্রান্ত হয় তখন তার পাশে অন্য মুমিনকে দাঁড়াতে হবে। যদি না দাঁড়ায় তবে আল্লাহর পক্ষ থেকে আজাব আসে। আমরা সবাই একটা শান্তিপূর্ণ সমাজ কামনা করি। এ দায় থেকে হেফাজত ইসলাম বিক্ষোভ সমাবেশের আয়োজন করেছে।
সবাইকে ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, আমাদের প্রধান দায়িত্ব ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে ঐক্য ধরে রাখা। কোনো কারণে কোনো উসকানিতে তা যেন বিনষ্ট না হয়। আমাদের একতা নষ্ট করতে ভেতরে- বাইরে থেকে ষড়যন্ত্র হচ্ছে। নৈরাজ্য ব্যবস্থা সৃষ্টি করেছিল ফ্যাসিবাদ। ছাত্র-জনতা অভ্যুত্থানের মাধ্যমে তা নস্যাৎ করে দিয়েছে। আমরা ১৬ বছর নৈরাজ্যকর অবস্থাতে ছিলাম। এখন যে মুক্ত বাতাসে কথা বলতে পারছি। এই অধিকার যেন আবার হারিয়ে না ফেলি।
সব ক্রাইসিসে আওয়ামী লীগ জড়িত উল্লেখ করে তিনি বলেন, ফ্যাসিবাদ পতনের পর থেকে বাংলাদেশে যত ক্রাইসিস সামনে এসেছে সবগুলোর পেছনে আওয়ামী লীগ জড়িত। তাদের দোসর ভারতীয় এজেন্টরা জড়িত। যখনই আমরা কোনো বিশৃঙ্খলা দেখব ঐক্যবদ্ধভাবে সেগুলো প্রতিহত করব। এই বিশৃঙ্খলা প্রতিহত করার মধ্য দিয়ে আমাদের একতা অটুট থাকবে।
তিনি বলেন, ইসকন একটি জঙ্গি সংগঠন। ইসকন কোনো ধর্মীয় সংগঠন নয়। একটি আন্তর্জাতিক জঙ্গি সংগঠন। ইসকনকে বিভিন্ন দেশে ইতিমধ্যে নিষিদ্ধ করা হয়েছে। ইসকন সনাতনের কোনো ধর্মীয় সংগঠন নয়। ইসকন একটি ইহুদি ও খ্রিস্টানদের লালিত জঙ্গি সংগঠন। তাই আমাদের হিন্দু ভাইদের দৃষ্টি আর্কষণ করছি আপনারা ইসকনের ফাঁদে পা দেবেন না।
ইসকন হিন্দু সম্প্রদায়ের শত্রু জানিয়ে তিনি বলেন, আমরা দেখতে পেয়েছি আমাদের সনাতন ভাইয়েরা ইসকনের মাধ্যমে নির্যাতিত হয়েছেন। আমি কয়েকটি উদাহরণ দিচ্ছি। ইসকনের অন্যতম নেতা চিন্ময় কৃষ্ণ দাস, হাটহাজারী মেখলের পুন্ডরিক ধামের প্রধান। সেখানে এই ইসকনরা আমাদের হিন্দু ভাইদের উচ্ছেদ করে দিয়েছে। ৫০ জন হিন্দু ভাইকে উচ্ছেদ করে তাদের জায়গা-জমি জবরদখল করে নিয়েছে। সেখানে উদয়ন নামে আমাদের হিন্দু ভাইদের একটি সংগঠন ছিল।
এই চিন্ময় কৃষ্ণ দাস উদয়ন সংগঠনটিকে উচ্ছেদ করে দিয়েছে। সেখানে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের একটি বিদ্যানিকেতন ছিল তারা সেটিও উচ্ছেদ করে দিয়েছে। হিন্দুদের সব পূজা আগে সেখানে হতো। এখন সেখানে লালার পূজা হয়। অন্য কোনো পূজা হয় না সেখানে। এই ইসকনরা শুধু বাংলাদেশের শত্রু নয়, শুধু ইসলামের শত্রু নয়Ñওরা আমাদের সনাতন ভাইদেরও শত্রু। এই ইসকনকে বাংলাদেশ থেকে নিষিদ্ধ করতে হবে। অন্যথায় হেফাজত ইসলাম বাংলাদেশ আরও বড় কর্মসূচি দিতে বাধ্য হবে।