বৃহস্পতিবার, ১৪ নভেম্বর ২০২৪

ট্রাম্পকে নিয়ে পেন্টাগনের কর্মকর্তারা উদ্বিগ্ন

ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রেসিডেন্ট এর দায়িত্ব গ্রহনের পর অনেক কিছুই বদলে যাবে এমনটা আশঙ্কা করছে বিভিন্ন পদে থাকা কর্মকর্তারা। রয়েছেন তাদের মধ্যে উদ্বেগ, এমনকি দেশটির প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারাও রয়েছেন চিন্তায়। তবে জানা জায়, ট্রাম্প যদি বেআইনি কোনো নির্দেশ দেন, তা অনেকেই মানবেন না।

শনিবার (৯ নভেম্বর) আমেরিকার প্রতিরক্ষা কর্মকর্তাদের বরাত দিয়ে সিএনএনের খবর বলছে, ট্রাম্প হঠাৎকরে দেশের ভেতরে সেনা সদস্য নামাতে বললে কিংবা ব্যাপক পরিসরে কর্মীদের চাকরিচ্যুত করলে প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় কীভাবে তা সামাল দেবে, সেটা নিয়ে অনানুষ্ঠানিক আলোচনা শুরু করেছেন পেন্টাগনের কর্মকর্তারা।

ট্রাম্প এর আগে বলেছিলেন, দেশীয় আইনশৃঙ্খলার জন্য তিনি সেনাসদস্যদের ব্যবহার করবেন এবং যারা অভিবাসী আছেন তাদেরকে গণহারে ফেরত পাঠানোর কাজে নিয়োজিত করবেন। এ ছাড়া তিনি কেন্দ্রীয় সরকারের অনেককে চাকরিচ্যুতসহ যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় সুরক্ষা অবকাঠামো থেকে ‘দুর্নীতিগ্রস্ত ব্যক্তিদের বের করে দেবেন।

ট্রাম্পের সঙ্গে এর আগে কাজ করা অনেক ঊর্ধ্বতন সামরিক কর্মকর্তা তার কর্তৃত্ববাদী আচরণের বিষয়টি তুলে ধরেছেন। আগের মেয়াদে তার সঙ্গে সামরিক বাহিনীর শীর্ষ কর্মকর্তাদের প্রায়ই মতের অমিল ছিল। তৎকালীন জয়েন্ট চিফ অব স্টাফ জেনারেল মার্ক মাইলি ট্রাম্পের পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহারের সক্ষমতাতেও লাগাম টেনে দিয়েছিলেন। যদিও এখন তিনি অবসরপ্রাপ্ত।

ট্রাম্প একাধিকবার যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক জেনারেলদের ‘দুর্বল’ ও ‘অকার্যকর নেতা’ হিসেবে অভিহিত করেছেন। আর সেই কারণেই হয়তো পেন্টাগনের কর্মকর্তাদের মধ্যে এখন আলোচনা চলছে। তারা নিজেদের মধ্যে সম্ভাব্য কিছু পরিস্থিতি তুলে ধরছেন এবং সে রকম পরিস্তিতির মুখোমুখি হলে তাৎক্ষনিক কি করবেন, তা ঠিক করছেন।

এক প্রতিরক্ষা কর্মকর্তা বলেছেন, ‘আমরা সবচেয়ে প্রতিকূল পরিস্থিতির কথা মাথায় রেখে প্রস্তুতি নিচ্ছি ও পরিকল্পনা করছি। বাস্তবতা হলো আমরা এখনো জানি না পুরো বিষয়টি কোন দিকে মোড় নেবে।’

ট্রাম্প আইনবিরুদ্ধ কোনো নির্দেশ দিলে কীভাবে তা সামাল দেওয়া হবে, সে বিষয়ে পেন্টাগনের অনেকেই চিন্তাভাবনা করছেন। এক প্রতিরক্ষা কর্মকর্তা বলেছেন, ‘সেনারা আইনগতভাবেই আইনবিরুদ্ধ নির্দেশ মানবেন না। কিন্তু প্রশ্ন হলো, সে ক্ষেত্রে কি হবে- আমরা কী ঊর্ধতন সামরিক নেতাদের পদত্যাগ করতে দেখব? নাকি তারা এটিকে নিজেদের লোকজনের বিরুদ্ধে দাঁড়ানো হিসেবে দেখবেন?’

ট্রাম্প এবার কাকে পেন্টাগনের দায়িত্ব দেবেন, তা এখনো অস্পষ্ট। সাবেক এক প্রতিরক্ষা কর্মকর্তা বলেন, আগের মেয়াদে ‘হোয়াইট হাউস ও প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের মধ্যে সম্পর্ক অত্যন্ত খারাপ ছিল। ফলে আমি মনে করি তারাও এবার খুব ভালো ভাবেই ভাবছে- কাকে দায়িত্ব দেওয়া যায়।

এদিকে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষামন্ত্রী লয়েড অস্টিন বলেছেন, ‘আমি মনে করি আমাদের নেতারা যাই হোক না কেন, সঠিক সিদ্ধান্ত নেবেন। আমি এটিও বিশ্বাস করি যে কংগ্রেস আমাদের সামরিক বাহিনীর জন্য সঠিক পদক্ষেপগুলোই নেবেন।

তবে লয়েড অস্টিন কয়েকবার সামরিক বাহিনীতে রাজনৈতিক হস্তক্ষেপের ঝুঁকি নিয়ে সতর্ক করেছেন। এ ছাড়া গত বুধবার তিনি এক বার্তায় জানিয়েছেন, যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক বাহিনী শুধু আইনগত নির্দেশ মানবে।

সূত্র: সিএনএন

সম্পর্কিত পোস্ট