বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেছেন, এই দেশের কোটি কোটি মানুষ চেয়েছিল দেশটি স্বৈরাচারমুক্ত হোক। মানুষ কিছুদিন আগেও কথা মানুষের বলার অধিকার ছিল না। এই দেশের মানুষ আত্মত্যাগ করে সেই অধিকার অল্প সময়ের মধ্যেই অর্জন করেছে। আমরা আংশিক সফল হয়েছি। যে পর্যন্ত ভোটের অধিকার নিশ্চিত না হবে সে পর্যন্ত বিএনপির আন্দোলন অব্যাহত থাকবে।
শনিবার (২১ সেপ্টেম্বর) বিকালে সিরাজগঞ্জের এনায়েতপুর ইসলামিয়া উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে এক স্মরণসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে ভার্চুয়ালী তিনি এসব কথা বলেন। স্মরণসভায় ব্যাপক লোকের সমাগম ঘটে। তারেক রহমান বলেন, দেশকে স্বৈরাচারমুক্ত করেছি। আমাদের যে লক্ষ তার অল্প একটু অর্জন করেছি। আমাদের আরও অনেক পথ যেতে হবে। আমরা যদি মানুষের ভোটের অধিকার নিশ্চিত করে জবাবদিহিতামূলক সরকার গঠন করতে চাই। আর এজন্যই এত আন্দোলন, এত ত্যাগ।
তারেক রহমান বলেন, আমি বিভিন্ন সময়ে চেষ্টা করেছি বাংলাদেশের গ্রামের মানুষের কাছাকাছি যাবার জন্য। দেশকে স্বনির্ভর করে তুলতে সম্মিলিতভাবে কাজ করতে হবে।বাংলাদেশ সামগ্রিকভাবে একটি সম্ভাবনাময় দেশ উল্লেখ করে বলেন, বাংলাদেশ মানুষের সামনে বিপুল সম্ভাবনা। আঞ্চলিক উৎপাদন সম্ভাবনার উপর আমাদের গুরুত্ব দিতে হবে।
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, আমরা জাতির কাছে ৩১ দফা উপস্থাপন করেছি। এখানে অনেক কিছু আছে। আজকে যদি দেশকে এগিয়ে নিতে হয় তাহলে শুধু যে সংস্কার চেয়েছি তা করলেই হবে না, দেশকে অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বী করতে হবে। শুধু রাজনৈতিক মুক্তিই সব সুফল বয়ে আনবে না। দেশ সামগ্রিকভাবে সম্ভাবনাময় হিসেবে গড়ে তুলতে হবে। এ দেশকে যদি আমরা ঐক্যবদ্ধ করতে পারি তাহলেই তাহলে অবশ্যই অর্থনৈতিক মুক্তি সম্ভব।
সিরাজগঞ্জবাসীর উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, আমরা যদি আশেপাশে তাকাই তাহলে দেখতে পাই বেলকুচি, চৌহালীর কামারখন্দের নাম আসলেই তাত শিল্পের কথা আছে। বিএনপি ক্ষমতায় আসার সাথে সাথে কৃষি, তাত শিল্প, পাট শিল্পকে সমৃদ্ধ করার জন্য ব্যাপক পরিকল্পনা গ্রহণ করেছিলো।
বিএনপির লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য মানুষের পাশে দাঁড়ানো। ইনশাআল্লাহ বাংলাদেশের মানুষের ভোটে ক্ষমতায় আসলে বিএনপি তাঁতশিল্পের পাশে এসে দাঁড়াবে। এই শিল্পকে কিভাবে সারা পৃথিবীতে ছড়িয়ে যায় সেবিষয়ে গুরুত্ব দিবো।
এরআগে স্মরণসভা চলাকালীন সময়ে দলটির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বক্তব্য দেওয়ার সময় মুষলধারে বৃষ্টি শুরু হলে সভাটি ১ঘন্টা বন্ধ থাকে। স্মরণ সভায় প্রধান বক্তা হিসেবে (ভার্চ্যুয়ালী) বক্তব্য রাখেন দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন দলটির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী এবং জেলা বিএনপির সভানেত্রী রোমানা মাহমুদ।
ছাত্রজনতার সরকার পতন আন্দোলনে নিহতদের স্মরণে অনুষ্ঠিত সভায় বেলকুচি, চৌহালী এবং এনায়েতপুর থানা বিএনপির উদ্যােগে এ স্মরণ সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় কয়েক কিলোমিটার দূরে চৌহালী উপজেলা থেকে ট্রলার এবং ছোট ছোট নৌকা দিয়ে যুমুনা নদী পার হয়ে কয়েক হাজার নেতাকর্মী এ স্মরণসভায় যোগ দেন। এছাড়াও সিরাজগঞ্জের বিভিন্ন উপজেলা থেকে নৌকাপথে, সড়কপথে বিপুলসংখ্যক নেতাকর্মী এতে অংশগ্রহণ করেন। এ স্মরণসভাকে কেন্দ্র করে যমুনা সেতু থেকে এনায়েতপুর পর্যন্ত লাগানো হয়েছে অসংখ্য তোরণ, ব্যানার এবং ফেস্টুন।
বিএনপির রাজশাহী বিভাগীয় সহ সাংগঠনিক সম্পাদক আমিরুল ইসলাম খান আলিমের সভাপতিত্বে বেলকুচি উপজেলা বিএনপির সদস্য সচিব বনি আমিন ও এনায়েতপুর থানা বিএনপির সদস্য সচিব মঞ্জু সিকদারের সঞ্চালনায় এতে বক্তব্য দেন জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক সাইদুর রহমান বাচ্চু, উপদেষ্টা ডা. এমএ মুহিত, বেলকুচি উপজেলার আহবায়ক নুরুল ইসলাম গোলাম, পৌর বিএনপির আহবায়ক আলতাব প্রামাণিক, এনায়েতপুর থানা বিএনপির আহবায়ক মন্টু সরকার, চৌহালী উপজেলার সভাপতি জাহিদ মোল্লা, সাধারণ সম্পাদক ময়নাল ক্বারী, জেলা যুবদলের সভাপতি মির্জা আব্দুল জব্বার বাবু, স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি আব্দুল্লাহ আল কায়েস, ছাত্রদলের সভাপতি জুনায়েদ হোসেন সবুজ, মহিলা দলের সভানেত্রী সাবিনা ইয়াসমিন হাসি প্রমুখ।