মঙ্গলবার, ২৪ ডিসেম্বর ২০২৪

সাইবার নিরাপত্তা আইনটি বাতিল ছাড়া বিকল্প কোন পদ্ধতি নেই : টিআইবি

ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) নির্বাহী পরিচালক ইফতেখারুজ্জামান বলেন, সাইবার নিরাপত্তা আইনটি বাতিল ছাড়া বিকল্প কোন পদ্ধতি নেই। অতিদ্রুততার সঙ্গে এটি বাতিলযোগ্য বলে ঘোষণা দিতে হবে। যাদের নামে এই পর্যন্ত যত মামলা হয়েছে সবগুলোকে বাতিল করতে হবে। সেক্ষেত্রে বিলম্ব করা যাবে না।

মঙ্গলবার (৮ অক্টোবর) জাতীয় প্রেসক্লাবের তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া হলে ‘বাতিলযোগ্য সাইবার নিরাপত্তা আইন: জনগণের প্রত্যাশা’ বিষয়ক গোলটেবিল বৈঠকে তিনি এসব কথা বলেন।

তিনি বলেন, সাইবার নিরাপত্তা আইনের মাধ্যমে নির্যাতিত হয়েছে তাদের ন্যায্য ক্ষতিপূরণ দিতে হবে। এই আইনের মাধ্যমে সবাইকে হয়রানি ছাড়া আর কিছু দিতে পারেনি। যেসকল ব্যক্তি ডিজিটাল আইনের নামে অপব্যবহার করেছে জড়িত সবাইকে জবাবদিহিতা নিশ্চিতে বাধ্য করা জরুরি। নয়তো পরবর্তীতে আবারও এই ধরনের পরিস্থিতি তৈরি হতে পারে। ব্যক্তির পাশাপাশি যে সকল প্রতিষ্ঠান জড়িত ছিল তাদেরও জবাবদিহিতার আওতায় আনতে হবে।

সাইবার নিরাপত্তা আইনকে ব্যবহার করে গোয়েন্দা সংস্থাগুলো বেশি হয়রানি করেছে। তাই তাদের নিয়ন্ত্রণ জরুরি। পরবর্তী নতুন আইন হলেও সাইবার সিকিউরিটি নামটি থাকতে পারবে না। কারণ বর্তমান এই আইন সাধারণ মানুষের নিরাপত্তা হরন করেছে।

সাইবার নিরাপত্তা আইনে শিকার হওয়া ভিকটিমরা জানান, তারা রাজনৈতিক প্রতিহিংসার শিকার হয়েছে। বিগত সরকারের সময় এই আইনের কারণে মানসিকতাসহ বিভিন্নভাবে হয়রানি হতে হয়েছে। পরবর্তীতে  যে আইনই হোন যেন হয়রানি না হয় সেদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। এটি মূলত দমন প্রতিক্রিয়া থেকে শুরু হয়। অনেকেই মুক্তিযুদ্ধের চেতনার সঙ্গে এই আইনের সম্পর্ক বের করেন। দুটি ভিন্ন বিষয়। এই আইনে যারাই গ্রেফতার ও হয়রানি হয়েছেন তারা মানসিক সমস্যায় রয়েছেন। সারা জীবনেও এথেকে বের হতে পারে না।

গোলটেবিল বৈঠকে বক্তারা বলেন, বাংলাদেশে সাইবার নিরাপত্তা নামে আইনকে বাদ দিয়ে সাইবার সুরক্ষা আইন নামের নতুন আইন প্রণয়ন ও  বিগত সরকার যে নিপীড়নমূলক আইন নাগরিকদের বিরুদ্ধে করেছে তা ব্যবহার বন্ধ করে নতুন সাইবার সুরক্ষা আইন করতে। সাইবার নিরাপত্তা আইন ২০২৩ প্রণয়ন প্রক্রিয়া ও বাস্তবায়নে নাগরিকদের অংশগ্রহণ এবং দায়বদ্ধতা ছিল। নেতিবাচক ফল সরাসরিভাবে মানবাধিকার ও গণমাধ্যমের সংগঠনসমূহ এবং কর্মীবৃন্দ ভোগ করেছেন।

ধারণাপত্রে বলা হয়েছে যে, একই বিষয়বস্তুকে কেন্দ্র করে একাধিক মামলা করার প্রবণতা তৈরি হয়। বিচার-পূর্ব কারাবাসকে শাস্তি হিসাবে গণ্য করার কোনো সুযোগ নেই, তাই বিচার-পূর্ব কারাবাসের সময় সম্পর্কে বিভিন্ন দেশে সুনির্দিষ্ট নীতি রয়েছে। যদি তদন্তকারী সংস্থা নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে প্রতিবেদন দাখিল করতে ব্যর্থ হয়, তাহলে জামিন পাওয়া অভিযুক্তের অধিকার হিসেবে বিবেচিত হবে।

আরও বলা হয়, আইনের প্রয়োগ করতে দেয়ার কারণে নাগরিকদের বিচারিক হয়রানি বেড়েছে। আইনের দৃষ্টিতে সবাই সমান কিন্তু সাইবার নিরাপত্তা আইনে অপরাধের বিপরীতে ধারাসমূহে যে শাস্তির বিধান করা হয়েছে তার অধিকাংশই মাত্রাতিরিক্ত, অসম, অনুপাতহীন এবং অসামঞ্জস্যপূর্ণ। অবশ্যই রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে ক্ষমা প্রার্থনা করবে এবং রাষ্ট্র প্রয়োজনীয় ও পর্যাপ্ত ক্ষতিপূরণ প্রদান করবে।

সম্পর্কিত পোস্ট