মঙ্গলবার, ২৪ ডিসেম্বর ২০২৪

ভারতের কাছে টি-টোয়েন্টি সিরিজও হারলো বাংলাদেশ

ব্যাটিং-বোলিং ব্যর্থতায় এক ম্যাচ হাতে রেখেই ভারতের কাছে তিন ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজ হারলো সফরকারী বাংলাদেশ।

বুধবার (০৯ অক্টোবর) সিরিজের দ্বিতীয় ম্যাচে বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন ভারতের কাছে ৮৬ রানে হেরেছে বাংলাদেশ। টি-টোয়েন্টিতে ভারতের কাছে এটিই বড় ব্যবধানে হারের লজ্জা টাইগারদের। এর আগে টেস্ট সিরিজেও হোয়াইটওয়াশ হয়েছিল বাংলাদেশ।

এ ম্যাচে প্রথমে ব্যাট করে ২০ ওভারে ৯ উইকেটে ২২১ রান করে ভারত। বাংলাদেশের বিপক্ষে টি-টোয়েন্টিতে এটিই সর্বোচ্চ দলীয় রান টিম ইন্ডিয়ার। জবাবে ২০ ওভারে ৯ উইকেটে ১৩৫ রান করে ম্যাচ হারে টাইগাররা। সিরিজের প্রথম ম্যাচ ৭ উইকেটে হেরেছিলো বাংলাদেশ।

টস জিতে ফিল্ডিংয়ে নেমে স্পিনার মেহেদি হাসান মিরাজকে দিয়ে বোলিং ইনিংস শুরু করে সুবিধা করতে পারেনি টাইগাররা। প্রথম ওভারে ৩টি চারে ১৫ রান দেন মিরাজ।

দ্বিতীয় ওভারে পেসার তাসকিন আহমেদকে এনে সাফল্য পায় বাংলাদেশ। ভারতের ওপেনার সঞ্জু স্যামসনকে ১০ রানে বিদায় দেন তাসকিন। পরের ওভারে তানজিম হাসানও উইকেট তুলে নেন। আরেক ওপেনার অভিষেক শর্মাকে ১৫ রানে বোল্ড করেন তানজিম।

পাওয়ার প্লের শেষ ওভারে প্রথমবারের মত আক্রমনে এসে উইকেট শিকারের তালিকায় নাম তুলেন মুস্তাফিজুর রহমান। ভারতের অধিনায়ক সূর্যকুমার যাদবকে ৮ রানে থামিয়ে দেন ফিজ। পাওয়ার প্লেতে ৪৫ রানে ৩ উইকেট হারিয়ে চাপে পড়ে ভারত।

নবম ওভারে ভারতের চতুর্থ উইকেট পতনের সুযোগ তৈরি করেছিলো বাংলাদেশ। কিন্তু স্পিনার মাহমুদুল্লাহ রিয়াদের বলে আম্পায়ার্স কলে লেগ বিফোর থেকে বেঁচে যান নীতিশ কুমার রেড্ডি। জীবন পেয়ে রিঙ্কু সিংকে নিয়ে বাংলাদেশের বোলারদের উপর চড়াও হন নীতিশ।

স্পিনার রিশাদ হোসেনের ওভারে ৩টি ছক্কা ও ১টি চারে ২৪ রান তুলেন নীতিশ ও রিঙ্কু। ঐ ওভারেই ভারত ১’শ রান স্পর্শ করে। মারমুখী মেজাজ ধরে রেখে ২৭ বলে টি-টোয়েন্টিতে প্রথম হাফ-সেঞ্চুরি তুলে নেন নীতিশ। ১৩তম ওভারে মিরাজের বলে তিনটি ছক্কা ও ১টি চারে ২৬ রান তুলে রিঙ্কুর সাথে জুটিতে ১’শ পূর্ণ করেন নীতিশ।

১৪তম ওভারে নীতিশ ও রিঙ্কুর ৪৯ বলে ১০৮ রানের বিধ্বংসী জুটি ভাঙেন মুস্তাফিজ। চতুর্থ উইকেটে বাংলাদেশের বিপক্ষে টি-টোয়েন্টিতে এটিই সর্বোচ্চ রানের জুটি। ৪টি চার ও ৭টি ছক্কায় ৩৪ বলে ৭৪ রান করেন নীতিশ। এরপর ২৬ বলে টি-টোয়েন্টিতে তৃতীয় অর্ধশতক করেন রিঙ্কু। হাফ-সেঞ্চুরির পর ইনিংস বড় করতে পারেননি তিনি। তাসকিনের শিকার হন ৫টি চার ও ৩টি ছক্কায় ৫৩ রান করা রিঙ্কু।

১৭তম ওভারে ১৮৫ রানে রিঙ্কু ফেরার পর ভারতকে ৯ উইকেটে ২২১ রানের বিশাল সংগ্রহ এনে দেন হার্দিক পান্ডিয়া ও রিয়ান পরাগ।

বাংলাদেশের বিপক্ষে টি-টোয়েন্টিতে এই প্রথবারের মত ২শ রান করলো ভারত। বাংলাদেশের বিপক্ষে কোন দলের এটি দ্বিতীয় সর্বোচ্চ দলীয় রান। সব মিলিয়ে ১৫টি ছক্কা মেরেছেন ভারতের ব্যাটাররা। পান্ডিয়া ২টি করে চার-ছক্কায় ১৯ বলে ৩২ এবং পরাগ ২টি ছক্কায় ৬ বলে ১৫ রান করেন। রিশাদ ৫৫ রানে ৩ উইকেট নেন। ভারতীয় ইনিংসের শেষ ওভারে ৮ রানে ৩ উইকেট নেন রিশাদ। এছাড়া তাসকিন-মুস্তাফিজ ও তানজিম ২টি করে উইকেট নেন।

সিরিজে সমতা ফেরাতে ২২২ রানের বিশাল টার্গেটে খেলতে নেমে সপ্তম ওভারে ৪৬ রানে ৪ উইকেট হারায় বাংলাদেশ। দুই ওপেনার পারভেজ হোসেন ইমন ১৬, লিটন দাস ১৪, অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত ১১ এবং তাওহিদ হৃদয় ২ রানে আউট হন।

পঞ্চম উইকেটে ২৭ বলে ৩৪ রানের জুটিতে দলের উইকেট পতন ঠেকান মিরাজ ও মাহমুদুল্লাহ। ১টি চারে ১৬ রান করে মিরাজ ফেরার পর দ্রুত আরও ২ উইকেট হারায় টাইগাররা। জাকের আলি ১ ও রিশাদ হোসেন ৯ রানে বিদায় নিলে ৯৩ রানে সপ্তম উইকেট পতনে লড়াই থেকে ছিটকে পড়ে বাংলাদেশ।

এক প্রান্ত আগলে বাংলাদেশের হারের ব্যবধান কমানোর চেষ্টা করেন ক্যারিয়ারের শেষ টি-টোয়েন্টি সিরিজ খেলতে নামা মাহমুদুল্লাহ। ১৯তম ওভারে নবম ব্যাটার হিসেবে সাজঘরে ফিরেন তিনি। ৩টি ছক্কায় ৩৯ বলে দলের পক্ষে সর্বোচ্চ ৪১ রান করেন মাহমুদুল্লাহ। শেষ পর্যন্ত ২০ ওভারে ৯ উইকেটে ১৩৫ রান করলে টেস্টের মত টি-টোয়েন্টি সিরিজ হারও নিশ্চিত হয় বাংলাদেশের। নীতিশ ও বরুণ চক্রবর্তী ২টি করে উইকেট নেন।

আগামী ১২ অক্টোবর হায়দারাবাদে সিরিজের তৃতীয় ও শেষ টি-টোয়েন্টি খেলতে নামবে বাংলাদেশ ও ভারত।

স্কোর কার্ড :
ভারত : ২২১/৯, ২০ ওভার (নীতিশ ৭৪*, রিঙ্কু ৫৩, রিশাদ ৩/৫৫)।
বাংলাদেশ : ১৩৫/৯, ২০ ওভার (মাহমুদুল্লাহ ৪১, পারভেজ ১৬, বরুণ ২/১৯)।
ফল : ভারত ৮৬ রানে জয়ী।
সিরিজ : তিন ম্যাচ সিরিজে ২-০ ব্যবধানে এগিয়ে ভারত।

সম্পর্কিত পোস্ট