যুক্তরাষ্ট্রের নির্বাচন-সম্পর্কিত মিথ্যা তথ্য, ডিপফেক ও ভিত্তিহীন তত্ত্ব শেয়ার হচ্ছে দেদার। এই কাজে দিনের অধিকাংশ সময় ব্যয় করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সের (সাবেক টুইটার) কিছু ব্যবহারকারী। আর এর মাধ্যমে প্ল্যাটফর্মটি থেকে ‘হাজার হাজার ডলার’ উপার্জন করছে অনেকে। বিবিসির এক বিশেষ প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে। তারা জানিয়েছে, এসব বিষয় নিয়ে কোনো মন্তব্য করেনি এক্স।
শুক্রবার (১ নভেম্বর) বিবিসির প্রতিবেদক এমন কয়েক ডজন অ্যাকাউন্ট খুঁজে পেয়েছে, যেগুলো অন্যদের কনটেন্ট দিনের বিভিন্ন সময়ে শেয়ার করে। এগুলোর মধ্যে সত্য, মিথ্যা, ভুয়া ও বানোয়াট কনটেন্ট রয়েছে। নিজের অ্যাকাউন্টের রিচ বাড়ানোর জন্য এসব কনটেন্ট শেয়ার করা হয়। আর এভাবে আয়ও হয়।
আর কিছু ব্যবহারকারী বলছেন, তাদের এবং অন্যান্য অ্যাকাউন্ট থেকে উপার্জন কয়েকশ থেকে কয়েক হাজার ডলার পর্যন্ত হতে পারে। তারা বিভিন্ন ফোরাম এবং গ্রুপ চ্যাটে একে অপরের পোস্ট শেয়ার করার বিষয়টি সমন্বয় করেন। এক্স ব্যবহারকারী বলেন, ‘এটা একে অপরকে সাহায্য করার একটি উপায়!’ এই নেটওয়ার্কগুলোর মধ্যে কিছু ডোনাল্ড ট্রাম্পকে সমর্থন করে, অন্যরা কমলা হ্যারিসের সমর্থক।
আবার এমন অনেকে আছেন, যারা কোনো প্রার্থীকেই সমর্থন করেন না। অবশ্য সমর্থক প্রোফাইলগুলো দাবি করে, তারা কোনো প্রার্থীর অফিসিয়াল ক্যাম্পেইনের সঙ্গে সংযুক্ত নয়। তবে তাদের সঙ্গে মার্কিন রাজনীতিবিদরা যোগাযোগ করেন।
গত ৯ অক্টোবর নীতিমালা পরিবর্তন করে এক্স। নতুন নীতিমালা অনুসারে, যাতে যোগ্য অ্যাকাউন্টগুলোর প্রদত্ত অর্থ প্রিমিয়াম ব্যবহারকারীদের থেকে আসা লাইক, শেয়ার এবং মন্তব্যের ভিত্তিতে হিসাব করা হয়, পোস্টের নিচে বিজ্ঞাপনের সংখ্যার ভিত্তিতে নয়।
বহু সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম ব্যবহারকারীকে পোস্ট থেকে অর্থ উপার্জন বা স্পন্সর করা কনটেন্ট শেয়ারের সুযোগ দেয়। তবে মিথ্যা তথ্য পোস্ট করা প্রোফাইলগুলোকে ডি-মনিটাইজ বা স্থগিত করার বিধানও এসব প্ল্যাটফর্মে রয়েছে। কিন্তু ভুয়া তথ্য শেয়ারের ক্ষেত্রে এ ধরনের কোনো নির্দেশনা এক্সে নেই।
যদিও এক্সের সক্রিয় ব্যবহারকারীর সংখ্যা অন্যগুলোর তুলনায় কম। তবে রাজনৈতিক আলাপচারিতায় এক্স বেশ প্রভাবশালী। মার্কিন রাজনীতির এই সংবেদনশীল মুহূর্তে ব্যবহারকারীদের উসকানিমূলক কনটেন্ট পোস্ট করতে এক্স উৎসাহিত করছে কি না, তা এখন মূল প্রশ্ন।
ব্যবহারকারীর প্রদর্শিত আয়ের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট অ্যাকাউন্টটির দর্শক, ফলোয়ার ও অন্যদের সঙ্গে যোগাযোগের ভিত্তিতে তারা কতটা টাকা উপার্জন করতে সক্ষম-তার তুলনা করেছেন বিবিসির প্রতিবেদক। তাদের প্রতীয়মান হয়েছে, ব্যবহারকারীদের প্রদর্শিত তথ্যের সত্যতা রয়েছে।
কিছু বিভ্রান্তিকর পোস্টে ভোট জালিয়াতির দাবি করা হয়েছে। যদিও এই অভিযোগ অস্বীকার করে কর্তৃপক্ষ। এ ছাড়া প্রেসিডেন্ট ও ভাইস প্রেসিডেন্ট প্রার্থীদের বিরুদ্ধে ভিত্তিহীন অভিযোগ-সংক্রান্ত পোস্টও রয়েছে।
এক্সের পোস্টগুলো পরবর্তীকালে ফেসবুক ও টিকটকের মতো বড় প্ল্যাটফর্মেও ছড়িয়ে পড়েছে।