যুক্তরাষ্ট্রে সুইং স্টেট উইসকনসিনে জয় পেয়েছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। এর মাধ্যমে তার ২৭৯ টি ইলেক্টোরাল ভোট নিশ্চিত হয়েছে। সেই সঙ্গে মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচন জয়ের জন্য প্রয়োজনীয় ২৭০টি ইলেক্টোরাল কলেজ ভোট জিতে জয় নিশ্চিত করেছেন তিনি। বিবিসির সহযোগী সংবাদমাধ্যম সিবিএস এ তথ্য জানিয়েছে।
আর এর মাধ্যমেই ভাইস প্রেসিডেন্ট কমলা হ্যারিসকে পরাজিত করে ডোনাল্ড ট্রাম্প আমেরিকার ৪৭তম প্রেসিডেন্ট হিসেবে হোয়াইট হাউসে প্রত্যাবর্তন নিশ্চিত করলেন। এ ছাড়া ১০০ সদস্যের সিনেটেও রিপাবলিকানরা নিয়ন্ত্রণ নিয়েছেন। তবে কোন দল মার্কিন হাউস নিয়ন্ত্রণ করবে, তা এখনো জানা যায়নি।
এর আগে ডোনাল্ড ট্রাম্প নিজেকে মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে বিজয়ী ঘোষণা করেন এবং ফ্লোরিডায় তার ওয়াচ পার্টিতে সমর্থকদের উদ্দেশে দীর্ঘ এক ভাষণ দেন। ট্রাম্প তার বিজয়ী ভাষনে বলেন, একটি শক্তিশালী, নিরাপদ ও সমৃদ্ধ আমেরিকা তৈরি না হওয়া পর্যন্ত বিশ্রাম তিনি নেবেন না।ট্রাম্প ফ্লোরিডার পাম বিচ কনভেনশন সেন্টারে সমর্থকদের সামনে দেওয়া ভাষণে বলেন, ‘প্রতিটি দিন আমার শরীরের সব শক্তি দিয়ে আপনাদের জন্য লড়াই করব।’অন্যদিকে ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিজয় ভাষণের কিছুক্ষণ আগে ওয়াশিংটন ডিসিতে কমলা হ্যারিসের নির্বাচনী রাতের পার্টির জায়গায় একদম ভিন্ন দৃশ্য দেখা গেছে। হাওয়ার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে কমলা হ্যারিসের বক্তৃতা দেওয়ার কথা ছিল।
কিন্তু তিনি বক্তৃতা দেবেন না জানানোর পর উপস্থিত সবাই পরিত্যক্ত চেয়ার আর পতাকা ফেলে রেখে বাড়ি ফিরে যান।এদিকে আনুষ্ঠানিক ঘোষণার আগেই ট্রাম্পকে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন বিশ্বনেতারা। যার মধ্যে আছেন যুক্তরাজ্যর প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমার, ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি, ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু, ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাঁখো, ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভোলোদিমির জেলেনস্কিসহ আরো অনেকে।উইসকনসিনের আগে পেনসিলভানিয়া, নর্থ ক্যারোলাইনা ও জর্জিয়ায় ঘনিষ্ঠ লড়াইয়ের সুইং স্টেটগুলিতে ট্রাম্প জিতেছিলেন। ট্রাম্পই প্রথম দণ্ডিত অপরাধী যিনি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে জয়ী হয়েছেন।
যদিও বিশ্বজুড়ে রাজনৈতিক নেতারা নতুন প্রেসিডেন্ট-নির্বাচিতকে অভিনন্দন বার্তা পাঠিয়েছেন, তার প্রতিদ্বন্দ্বী হ্যারিস বা বর্তমান প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন কেউই ট্রাম্পের জয় নিয়ে মন্তব্য করেননি।ট্রাম্প উইসকনসিন, পেনসিলভানিয়া, নর্থ ক্যারোলাইনা, জর্জিয়া, ওহাইও ও টেক্সাসে জিতেছেন। ওহাইওতে ১৭টি ইলেকটোরাল কলেজ ভোট আছে। টেক্সাসে আছে ৪০টি। দুই রাজ্যেই গতবার ট্রাম্প জিতেছিলেন। তবে বারাক ওবামা ২০০৮ ও ২০১২ সালে ওহাইওতে জিততে পেরেছিলেন।ডেমোক্র্যাটদের আশা ছিল, তারা টেক্সাস ছিনিয়ে নিতে পারবে। কারণ সেখানে শহর ও আধাশহরের সংখ্যা বেশি। কিন্তু টেক্সাস রিপাবলিকান ট্রাম্পের সঙ্গেই থেকেছে। ট্রাম্প নর্থ ও সাউথ ডাকোটা, লুসিয়ানা, ওয়াইওমিংয়ে জিতেছেন। তিনি কানসাস ও আইওয়াতেও জিতেছেন।
অন্যদিকে কমলা হ্যারিস নিউ ইয়র্কে জিতেছেন। এই রাজ্য সাধারণত ডেমোক্র্যাটদের পক্ষে থাকে। তিনি ইলিনয়ে জিতেছেন। সেখানে প্রচুর গ্রামীণ এলাকা থাকলেও শিকাগোর মতো শহর আছে। ডেমোক্র্যাটরা তাই এই রাজ্য থেকে সচরাচর জিতে থাকেন। সেখানে ১৭টি ইলেকটোরাল কলেজ ভোট আছে।
বর্তমান প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের নিজের রাজ্য ডেলাওয়ারেও হ্যারিস জিতেছেন। ডেমোক্র্যাটদের পক্ষে থাকা আরেক রাজ্য নিউ জার্সিতেও হ্যারিস জিতেছেন।
হ্যারিস ক্যালিফোর্নিয়া ও ওয়াশিংটনে জিতেছেন। তিনি ম্যাসাচুসেটস, রোডস আইল্যান্ড, কানেকটিকাটে জিতেছেন। তিনি ওরেগন জিততে চলেছেন।