মঙ্গলবার, ২৪ ডিসেম্বর ২০২৪

কেরানীগঞ্জে ‘বিনা লাভের বাজার’ শুরু করেছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন

ঢাকার কেরানীগঞ্জে ‘বিনা লাভের বাজার’ কার্যক্রম শুরু করেছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন।
শুক্রবার (৮ নভেম্বর) সকাল ৭টা থেকে উপজেলার কদমতলী গোলচত্বর ও আগানগর এলাকায় এই বাজার বসে। কেজি প্রতি মাত্র ২ টাকা লাভে এসব পণ্য তারা ভোক্তার কাছে বিক্রি করছেন। দুপুর পর্যন্ত বাজারে চলে এই বেচাকেনা।
সরেজমিন দেখা যায়, বাজারটিতে আকারভেদে লাউ ৩০-৪০ টাকা, প্রতি কেজি আলু ৫০, পেঁয়াজ ১০০, কাঁচা মরিচ ১২০, শসা ৫০, একটি লেবু ৫ ও প্রতি আটি মুলাশাক ও ডাঁটাশাক ১০ টাকায় বিক্রি হয়।
ক্রেতাদের যতটুকু প্রয়োজন তারা ততটুকুই কিনতে পারছেন, যা নিয়ে ভীষণ খুশি তারা। ক্রেতা মোশাররফ হোসেন বলেন, এই বাজারে এসে দেখলাম, যে পুঁইশাক বাজারে ৫০ টাকায় কিনতে হয়, এখানে তা ২০ টাকায় পাচ্ছি। পুঁইশাকের পাশাপাশি আলু পেঁয়াজ-মরিচ কিনলাম। সবকিছুর দাম একেবারেই কম। কেরানীগঞ্জের শিক্ষার্থীরা ভালো একটি উদ্যোগ নিয়েছেন।
গোলাম বাজার রোডের গৃহিণী সেতেরা বেগম বলেন, বাজারে এখন ১০০ টাকার নিচে কোনো সবজি মিলছে না। কয়েক বছর আগে ৩০০ টাকায় ব্যাগ ভর্তি হলেও এখন হাজার টাকাতেও হচ্ছে না। প্রত্যেকটা পণ্যের মূল্য কয়েকগুণ বেড়েছে। দাম কমার তো কোনো সম্ভাবনা নেই বললেই চলে। নিয়মিত বাজার তদারকি করে যেন দামটা মানুষের ক্রয়ক্ষমতার মধ্যে আনা হয় সেই দাবি করি।
বাজারে আসা মিরাজ আহমেদ বলেন, আমি কদমতলি খালপাড় থাকি। আমার বাবা গ্রামে সবজি আবাদ করেন। এত শ্রম ও কষ্ট করার পর বাবা যে দামে সবজি বিক্রি করে, বাজারে এসে দাম কখনও কখনও দ্বিগুণেরও বেশি হয়ে যায়। এটা সম্পূর্ণ নজরদারির ব্যর্থতা। আর এই ব্যর্থতা আমাদের মতো নিম্নআয়ের মানুষের জীবনকে কষ্টের করে তুলছে।
তিনি বলেন, বৈষম্যবিরোধী শিক্ষার্থীদের এই ব্যতিক্রমী উদ্যোগের কারণে কিছু মানুষ কেজিপ্রতি প্রায় ২০-৩০ টাকা কম দরে সবজি কিনতে পারছেন।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের প্রতিনিধি আল আমিন মিনহাজ বলেন, আমরা ছাত্র আন্দোলন থেকে ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণ, বাজার মনিটরিং সর্বশেষ বিনা লাভের বাজারের কার্যক্রম হাতে নিয়েছি। বাজার মনিটরিং করতে গেলেই অনেক ক্রেতা ক্ষোভ নিয়ে আমাদের বলেন, আমাদের কারণে জিনিসপত্রের দাম বৃদ্ধি পেয়েছে। এসব কথা শুনে নিজের বিবেকে বাধা দেয়। এ থেকেই আমাদের ছোট্ট প্রয়াস।
শিক্ষার্থী আসাদ নূর সাব্বির বলেন, প্রতি শুক্রবার এটি পরিচালনা করা হবে। মানুষের রেসপন্স এবং ভলান্টিয়ারের আগ্রহ অনুযায়ী এবং বাজার পরিস্থিতি যতক্ষণ স্বাভাবিক না হচ্ছে, ততক্ষণ এই কার্যক্রম আরও বাড়ানো হবে। সপ্তাহের অন্য দিনগুলোতেও যেন করা যায় এবং আরও কিছু পণ্য বাড়ানো যায়, সেই বিষয়ে আমাদের পরিকল্পনা আছে। শুধু একটি স্পটই নয়, কেরানীগঞ্জে প্রতিটি ওয়ার্ডে ‘বিনা লাভের দোকান’ ছড়িয়ে দেওয়ার পরিকল্পনার কথা জানিয়েছেন এই শিক্ষার্থী।
এদিকে এমন উদ্যোগকে সাধুবাদ জানিয়েছেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রিনাত ফৌজিয়া।

সম্পর্কিত পোস্ট