- চাঁদপুর প্রতিনিধি
চাঁদপুর দুইশ ৫০ শয্যার জেনারেল হাসপাতালে করোনার উপসর্গ নিয়ে ভর্তি হওয়া রোগীতে ভরপুর। রোগীর চাপ সামলাতে হাসপাতালের তৃতীয় তলায়ও নতুনভাবে চালু করা হয় করোনা ওয়ার্ড। সেখানেও কোনো শয্যা খালি নেই। শয্যার অভাবে রোগীকে ফ্লোরে রেখেই চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে।
এ অবস্থায় সদর হাসপাতালের আইসোলেশনের বেড ৬০ থেকে ১২০টিতে উন্নীত করা হয়েছে। তারপরও অতিরিক্ত রোগীর চাপে চিকিৎসক নার্স ও স্বাস্থ্য কর্মীদের গলদঘর্ম অবস্থা হয়ে দাঁড়িয়েছে।
হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, চাঁদপুর জেলায় এ পর্যন্ত করোনায় আক্রান্ত হয়েছে ৮ হাজার ১১৮ জন। করোনায় আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করেছে ১৫৮ জন। এছাড়া ঢাকা কুমিল্লাসহ বিভিন্ন হাসপাতালে চাঁদপুর জেলার করোনা রোগীর মৃতের সংখ্যা শতাধিক হবে।
এদিকে রোগীর অস্বাভাবিক চাপ বেড়ে যাওয়ায় চাঁদপুরে করোনা ওয়ার্ডে অক্সিজেন সংকট দেখা দিয়েছে। ঈদের দিন থেকে হঠাৎ করেই করোনা আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা কয়েকগুণ বেড়ে যাওয়ায় এ সংকট দেখা দিয়েছে বলে জানিয়েছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
চাঁদপুর সরকারি জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. হাবিব উল করিম সাংবাদিকদের বলেন, অক্সিজেন সংকট নাই, তবে মাঝে মাঝে সমস্যা হয়। রোগী বেড়ে যাওয়ার কারণে এ সমস্যা হচ্ছে।
অক্সিজেন সরবরাহ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, অক্সিজেন সরবরাহ সঠিক আছে। এছাড়া কুমিল্লা থেকে প্রতিদিনই অক্সিজেন সিলিন্ডার রিফিল করে আনা হচ্ছে। এরপরও সমস্যা হয়ে যাচ্ছে। অক্সিজেন সংকট কিছু সময়ের জন্য হলেও তা খুব বেশি না। হাসপাতালে বর্তমানে ২৪০টি অক্সিজেন সিলিন্ডার ব্যবহার করা হচ্ছে। যার মধ্যে ১৮০টি বড় এবং ৬০টি ছোট সিলিন্ডার।
তিনি আরও জানান, স্পেকট্রার মাধ্যমে নির্মিত চাঁদপুর সদর হাসপাতালের অক্সিজেন প্লান্ট পুরোপুরি প্রস্তুত রয়েছে। লিকুইড অক্সিজেন আসতে দেরি হওয়ার কারণে তা চালু করা যাচ্ছে না। অক্সিজেন পেলে দ্রুত এগুলো চালু হবে।
সদর হাসপাতালের আরএমও ডা. সুজাউদ্দৌলা রুবেল বলেন, করোনা উপসর্গ নিয়ে অনেক রোগী হাসপাতালের আইসোলেশন ওয়ার্ডে ভর্তি হচ্ছে। প্রতিদিন গড়ে ৪০ জন করোনা আক্রান্ত রোগী এখানে ভর্তি হচ্ছে। তাছাড়া করোনার উপসর্গ নিয়ে প্রতিদিন কমপক্ষে ৭০ জন রোগী এখানে আসছে। এ হাসপাতালে এখন ৪শ’র উপরে নমুনা নেওয়া হচ্ছে।
জানতে চাইলে, চাঁদপুরের সিভিল সার্জন ডা. মো. সাখাওয়াত উল্লাহ বলেন, উপজেলা হাসপাতালে করোনা বেড থাকার পরেও সেসব এলাকার রোগীরা জেলা সদরের হাসপাতালমুখী হচ্ছেন। অথচ প্রতিটি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে করোনা রোগীর যাবতীয় চিকিৎসা ব্যবস্থা রয়েছে। তারপরও মানুষজন বিভিন্ন উপজেলা থেকে জেলা হাসপাতালে করোনার নমুনা টেস্ট করতে আসছেন। প্রতিটি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে করোনা নমুনা টেস্টের ব্যবস্থা রয়েছে। যেখানে ৩০ মিনিটের মধ্যে তার রিপোর্টও পাওয়া যাচ্ছে।
তিনি আরও জানান, চাঁদপুরে করোনা পরিস্থিতি দিন দিন অবনতি হচ্ছে।