মঙ্গলবার, ২৪ ডিসেম্বর ২০২৪

ঋণ পরিশোধের পরও টিএমএসএসের মামলায় থানায় মা, বাড়িতে কাঁদছে দুধের শিশু

  • গাজীপুর প্রতিনিধি

গাজীপুর জেলার শ্রীপুরের নুরুল আমীনের স্ত্রী শাহনাজ পারভীন স্বামীকে সহায়তার জন্য ঠেঙ্গামারা মহিলা সবুজ সংঘ (টিএমএসএস) নামক এনজিও থেকে এক লাখ টাকা ঋণ নিয়েছিলেন ২০১৭ সালে। প্রতিমাসে সাড়ে ৯ হাজার টাকা করে ১২ মাসে সুদসহ ১ লাখ ১৪ হাজার টাকা পরিশোধ করার কথা ছিল।

শাহনাজ পারভীন নিয়মিত ঋণের টাকা পরিশোধও করেছেন। মাঝে ২ কিস্তি দিতে দেরি হয়েছিল, কিন্তু পরে ২কিস্তিসহ পুরো টাকাই পরিশোধ করা হয়েছে। এরপরও সোমবার বিকেলে টিএমএসএসের মামলায় শাহনাজকে ধরে নিয়ে গেছে পুলিশ। তার ঘরে ৬ মাসের দুধের শিশু সন্তান আছে বলা হলেও পুলিশ তাতে কর্ণপাত করেনি। এরপর থেকে মায়ের জন্য কাঁদছে শিশুটি।

শাহনাজ পারভীনের স্বামী নুরুল আমীন গণমাধ্যমকে বলেন, টিএমএসএস নামক এনজিও আমাদের ঋণ পরিশোধের প্রত্যয়নপত্র দিয়েছে। তারপরও তারা আমার স্ত্রীর নামে মামলা করে। এ মামলার বিষয়ে আমরা কেউ কিছু জানতাম না। হঠাৎ করে আজ শ্রীপুর থানা পুলিশ গিয়ে আমার স্ত্রীকে গ্রেফতার করে থানায় নিয়ে গেছে।

তিনি আরও বলেন, আমাদের ৬মাসের দুধের শিশু ফাতেমার জন্য এখন সমস্যা হয়েছে। সে এখনো তার মায়ের দুধ ছাড়া কিছুই খায় না। বিকেল থেকেই মায়ের জন্য সে কান্নাকাটি করছে। করোনার মধ্যে এমন পরিস্থিতিতে পড়ব ভাবতেই পারিনি।

এ বিষয়ে শ্রীপুর থানার পরিদর্শক (অপারেশন) গোলাম সারোয়ার বলেন, টিএমএসএস নামক এনজিওর মামলায় আদালতের পরোয়ানা থাকায় ওই নারীকে গ্রেফতার করা হয়েছে।  তিনি অরো বলেন, আগামীকাল তাকে আদালতে পাঠানো হবে।

এ বিষয়ে টিএমএসএসের শ্রীপুর-১ শাখার ব্যবস্থাপক আব্দুল আলীম বলেন, শাহনাজ পারভীন নামে বর্তমানে আমাদের কোনো সদস্য নেই, তবে আগে ছিল। তার কাছে আমাদের কোনো দেনা-পাওনা নেই। তবে তার বিরুদ্ধে কেন মামলা হলো তা আমি বলতে পারব না। কেননা তখন আমি এ শাখায় ছিলাম না।

টিএমএসএসের গাজীপুর আঞ্চলিক কার্যালয়ের ব্যবস্থাপক আতাউর রহমান বলেন, মামলা এবং ওই নারীকে গ্রেফতারের বিষয়ে আমি কিছুই জানি না। জরুরিভাবে স্থানীয় ব্যবস্থাপকের সঙ্গে কথা বলে এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এ বিষয়ে গাজীপুরের জেলা প্রশাসক এসএম তরিকুল ইসলাম বলেন, ঋণের টাকা পরিশোধের পরও মামলা এবং দুধের শিশু রেখে একজন নারীকে গ্রেফতার সত্যিই দুর্ভাগ্যজনক। বিষয়টি খোঁজ নিয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

সম্পর্কিত পোস্ট