- নিজস্ব প্রতিবেদক
আলোচিত ব্যবসায়ী হেলেনা জাহাঙ্গীরের অন্যতম দুই সহযোগী হাজেরা খাতুন এবং সানাউল্ল্যাহ নূরীকে গ্রেফতার করেছে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব)।
মঙ্গলবার (৩ আগস্ট ২০২১) ভোরে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে রাজধানীর গাবতলী এলাকা থেকে র্যাব-৪ এর অভিযানে হেলেনা জাহাঙ্গীর এর অন্যতম এই দুই সহযোগীকে গ্রেফতার করেন।
দুপুরে রাজধানীর কাওরান বাজারে র্যাবের মিডিয়া সেন্টারে সংবাদ সম্মেলনে মুখপাত্র খন্দকার আল মঈন গ্রেফতারকৃতদের বিস্তারিত তথ্য তুলে ধরে বলেন, হাজেরা খাতুন ২০০৯ সালে মাস্টার্স পাশের পর হেলেনা জাহাঙ্গীরের মিরপুরে একটি গার্মেন্টস এ্যাডমিন এন্ড এইচ আর বিভাগে চাকুরি শুরু করেন। তিনি হেলেনা জাহাঙ্গীরের নিকট আত্মীয় এবং কর্মদক্ষতা গুনে অত্যন্ত আস্থাভাজন হয়ে উঠেন।
জিজ্ঞাসাবাদে হাজেরা খাতুন র্যাবকে জানিয়েছেন, ‘তিনি ২০১৬ সালে ‘জয়যাত্রা ফাউন্ডেশন’ এর ডিজিএম এবং জয়যাত্রা টিভির জিএম (এ্যাডমিন) পদে নিযুক্ত হন। তিনি মূলত দুটি প্রতিষ্ঠানের প্রশাসনিক কার্যক্রমসহ হেলেনা জাহাঙ্গীরের আর্থিক বিষয়াদি দেখভাল করতেন।’
র্যাবের মুখপাত্র আরও বলেন, জয়যাত্রা টিভি ২০১৮ সাল হতে হংকং এর একটি ডাউন লিংক চ্যানেল হিসেবে সম্প্রচার হয়ে আসছে। যার ফ্রিকুয়েন্সি হংকং হতে বরাদ্দ করা হয়েছে। উক্ত ফ্রিকুয়েন্সির জন্য হংকংকে প্রতি মাসে প্রায় ছয় লক্ষ টাকা পরিশোধ করতে হয়।
গ্রেফতারকৃত সানাউল্ল্যা নুরী (৪৮) জয়যাত্রা টিভির প্রতিনিধি সমন্বয়ক ছিলেন। প্রতিনিধিদের কেহ মাসিক টাকা দিতে ব্যর্থ হলে বা গড়িমসি করলে তিনি ভয় ভীতি প্রদর্শন করতেন।
তিনি গাজীপুর গার্মেন্টস সেক্টরে ব্যাপক চাঁদাবাজি করে তার একটি অংশও জয়যাত্রা টিভিতে প্রদান করতেন বলে জানান। এছাড়াও তিনি গাজীপুর ও তৎসংলগ্ন এলাকার অনুমোদনহীন জয়যাত্রা টিভির সম্প্রচার নিশ্চিত করতেন।
জিজ্ঞাসাবাদে আরও জানা যায়, এই টিভি বাংলাদেশের প্রায় ৫০টি জেলায় সম্প্রচারিত হয়ে থাকে। টিভি চ্যানেলটি রাজধানী ও জেলা পর্যায়ের পাশাপাশি মফস্বল ও প্রত্যন্ত অঞ্চলে জনপ্রিয় করার লক্ষে ব্যাপক উদ্দেশ্য প্রণোদিত পরিকল্পনা নেওয়া হয়।
প্রত্যন্ত অঞ্চল হতে অধিক সংখ্যক প্রতিনিধি নিয়োগের মাধ্যমে বিপুল পরিমাণ অর্থ আত্মসাৎ করা যায়। গুরুত্ব বিবেচনায় জেলা প্রতিনিধি ৩০ থেকে ৫০ হাজার টাকা, উপজেলা প্রতিনিধি ১০ থেকে ২০ হাজার টাকা এককালীন প্রদান করতে হয়।
জয়যাত্রা আইপি টিভি বিশ্বের প্রায় ৩৪টি দেশে সম্প্রচারিত হতো ফলে গুরুত্ব বিবেচনায় এক থেকে পাঁচ লক্ষ টাকার বিনিময়ে প্রবাসী প্রতিনিধি নিয়োগ দেওয়া হতো। যারা প্রতি মাসে ২০ থেকে ৫০ হাজার টাকা প্রদান করে থাকেন। নিয়োগ বাণিজ্য, অর্থ সংগ্রহ ও যাবতীয় হিসাবপত্র গ্রেফতারকৃত হাজেরা খাতুন এর উপর ন্যস্ত বলে তিনি জানান।
গ্রেফতারকৃত হাজেরা খাতুনের তথ্যমতে, অর্থ বাণিজ্যের মাধ্যমে নিয়োগ প্রক্রিয়ায় অনেক বিতর্কিত ব্যক্তিরা নিয়োগ পেয়েছেন। এছাড়া প্রত্যন্ত অঞ্চলে ব্যক্তি প্রচার, প্রার্থিতা প্রচার, সাক্ষাতকার ইত্যাদির মাধ্যমে অর্জিত অর্থের একটি অংশ গ্রেফতারকৃতদের মাধ্যমে হেলেনা জাহাঙ্গীর গ্রহণ করতেন।