মঙ্গলবার, ২৪ ডিসেম্বর ২০২৪

অভিষ্ট লক্ষ্যে পৌঁছতে ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করতে হবে: শিক্ষামন্ত্রী

  • নিজস্ব প্রতিবেদক

শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি বলেছেন, অভীষ্ট লক্ষ্যে পৌঁছতে আমাদের হয়তো আর রক্ত দিতে হবে না। লক্ষ্য বাস্তবায়নে আমাদের শুধু যার যার জায়গা থেকে নিজের দায়িত্বটি সঠিকভাবে পালন করতে হবে।

শুক্রবার (১৭ নভেম্বর ২০২১) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মার্কেটিং বিভাগের এলামনাই অ্যাসোসিয়েশনের সিলভার জুবিলি অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন তিনি।

শিক্ষামন্ত্রী বলেন, আমরা এমন একটা সময়ে এসে পৌঁছেছি, যখন দেশের জন্য সবারই কিছু না কিছু করণীয় আছে। দেশের ব্র্যান্ডিং আমাদের করতে হবে। সারা বিশ্বে দেশটি কী পরিচয়ে পরিচিত হবে, তা নির্ভর করবে আমরা আমাদের কাজটা কতটা এগিয়ে নিতে পারছি তার ওপর।

মন্ত্রী বলেন, আমাদের পূর্বসূরিরা স্বদেশি আন্দোলন করেছেন, মাতৃভাষাকে রাষ্ট্রভাষার মর্যাদায় প্রতিষ্ঠিত করতে রক্ত দিয়েছেন, ত্যাগ স্বীকার করেছেন। আমাদের দেশের স্বাধীনতার জন্য অনেক রক্ত দিতে হয়েছে, মা-বোনকে নির্যাতনের শিকার হতে হয়েছে। সামরিক শাসনের বিরুদ্ধে আমাদের আন্দোলন করতে হয়েছে। গণতন্ত্রের জন্য সামরিক স্বৈরশাসন, অসামরিক স্বৈরশাসনসহ নানা রকম স্বৈরশাসনের জাঁতাকলে পিষ্ট হতে হয়েছে আমাদের। গণতন্ত্র আনতে গিয়ে আমাদের সতীর্থরা অনেক রক্ত দিয়েছেন। কিন্তু এখন এমন একটি জায়গায় আমরা পৌঁছেছি, হয়তো বা আমাদের আর রক্ত দেওয়ার প্রয়োজন নেই, কারাবরণ করারও হয়তো প্রয়োজন হবে না। কিন্তু অনেক অভীষ্ট লক্ষ্য আমাদের রয়েছে, যা পূরণ করতে হবে।

শিক্ষামন্ত্রী সবার প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন, ২০২১ সালের অভীষ্ট লক্ষ্যে আমরা পৌঁছতে পেরেছি। কিন্তু ২০৩০ সালের আন্তর্জাতিক প্রতিশ্রুতি টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্য আমাদের রয়েছে, তা পূরণ করতে হবে। ডেমোগ্রাফিক ডিবিডেন্ট অর্জন করার জন্য আমাদের সামনে ২০৩১ সাল পর্যন্ত সময় রয়েছে মাত্র ১০ বছর। জাতীয় ও আন্তর্জাতিক যেসব অভীষ্ট লক্ষ্য আছে, সেগুলো অর্জন করতে রক্ত দেওয়ার প্রয়োজন নেই। আমাদের এখন প্রয়োজন, আমাদের যে যেখানে আছি সেখানে সততা, আন্তরিকতা, মানবিকতা নিয়ে নিজের দায়িত্ব যথাযথভাবে পালন করা। তাহলেই বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলার অভীষ্ট লক্ষ্যে আমরা পৌঁছে যাব। পথ দেখানোই আছে, সেই পথেই যেন হাঁটি। নিজের সঙ্গে, দেশের সঙ্গে যেন বিশ্বস্ত থাকি।

প্রবাসীদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে দীপু মনি বলেন, যারা বিদেশে রয়েছেন, তাদের আচরণ, চলন-বলন, কথা দিয়ে যেন বাংলাদেশকে চেনা যায়। আমরা কোন বাংলাদেশ দেখতে চাই, সেই স্বপ্নটাকে সামনে রেখে যেন আমরা তা করি। আমরা যেন কাঙ্ক্ষিত বাংলাদেশের প্রতিচ্ছবি হয়ে উঠতে পারি।

শিক্ষামন্ত্রী বলেন, আমি শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে আসার আগে আরেকটি মন্ত্রণালয়ে ছিলাম। পররাষ্ট্রমন্ত্রী থাকাকালে কিছু হলেই বিরোধী দল বলত দেশ বিক্রি করে দিয়েছি। তখন নিজেদের মধ্যে হাসি-ঠাট্টা হতো, আচ্ছা এ যে এত বলছে বিরোধী দল- দেশ বিক্রি করে দিয়েছি। কত পয়সায় বিক্রি হলো? আমার একসময় মনে হলো- পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে আমার কাজই দেশটাকে বিক্রি করা। আমাদের দেশের যা কিছু আছে সবচাইতে কী করে ভালোভাবে তুলে ধরতে পারি বিশ্বের কাছে। আই উইশ- আমার যদি মার্কেটিংয়ের একটি ডিগ্রি থাকত। মার্কেটিং বিভাগের ছাত্র থাকলে ওই কাজটা হয়তো ভালোভাবে করতে পারতাম। মার্কেটিং সবারই লাগে। আমাদের রাজনীতিবিদদেরও নিজেদের মার্কেটিংয়ের প্রয়োজন হয়।

অনুষ্ঠানে আওয়ামী লীগের ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ বিষয়ক সম্পাদক সুজিত রায় নন্দী, এলামনাই অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য ড. মিজানুর রহমান, সাধারণ সম্পাদক ফারুক আহমেদ তালুকদার, সংগীতশিল্পী ফাহিম হোসেন চৌধুরী প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

সম্পর্কিত পোস্ট