- দেশকাল ২৪ ডটকম
আর্মেনিয়ার প্রেসিডেন্ট আরমেন সার্কসিয়ান পদত্যাগ করেছেন। জাতীয় দুর্যোগের মুহূর্তগুলোতে গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নেয়ার সময় তিনি সাংবিধানিক ক্ষমতার অভাব অনুভব করেন বলেই তার এই সরে যাওয়া।
পদত্যাগের কথা ঘোষণা করে তিনি জানিয়েছেন, আর্মেনিয়ায় প্রেসিডেন্টের কোনো ক্ষমতা নেই। তার কথা শোনাও হয় না। সে কারণেই পদত্যাগের সিদ্ধান্ত। বস্তুত, সরাসরি প্রধানমন্ত্রীর কথা না লিখলেও, বিশেষজ্ঞদের বক্তব্য, দীর্ঘদিন ধরেই প্রধানমন্ত্রী পাসিনইয়ানের সঙ্গে বিতর্ক চলছে প্রেসিডেন্টের।
কিছুদিন আগেই নাগর্নো-কারাবাখ নিয়ে আজারবাইজানের সঙ্গে তীব্র সংঘাত হয়েছে আর্মেনিয়ার। আজারি ফৌজ একের পর এক এলাকা দখল করেছে। যুদ্ধে কার্যত পর্যদস্তু হয়েছে আর্মেনিয়া। এরপরেই রাশিয়ার মধ্যস্থতায় একটি চুক্তি সই হয়। সেখানে স্টেটাস কো বা স্থিতাবস্থা রক্ষার আপস মীমাংসা হয়। আর্মেনিয়ার অধিকাংশ মানুষের বক্তব্য, ওই চুক্তির মাধ্যমে নাগর্নো-কারাবাখ কার্যত আজারবাইজানের হাতে তুলে দেয়া হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে প্রায় প্রতিদিন আর্মেনিয়ায় প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে বিক্ষোভ দেখানো হয়।
প্রেসিডেন্টের বক্তব্য, ওই বৈঠকে তাকে ডাকা হয়নি। এতবড় চুক্তিপত্রের কথা তাকে আগে জানানোও হয়নি। এর থেকেই প্রমাণিত হয়, তার কোনো ক্ষমতা নেই। এখানেই শেষ নয়। যুদ্ধ শেষ হওয়ার ঠিক পর পরই প্রধানমন্ত্রী সেনাবাহিনীর প্রধানকে বরখাস্ত করার সিদ্ধান্ত নেন। প্রেসিডেন্ট তার বিপক্ষে ছিলেন। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী প্রেসিডেন্টের কথা শোনেননি।
এই সমস্ত বিষয়গুলি উল্লেখ করে প্রেসিডেন্ট জানিয়েছেন, এই পরিস্থিতিতে আর ক্ষমতায় থাকতে চান না। কারণ, প্রেসিডেন্টের ক্ষমতার কোনো দাম নেই।
বিশেষজ্ঞদের বক্তব্য, গোটা দেশজুড়ে প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে বিক্ষোভ চলছে। এই পরিস্থিতিতে প্রেসিডেন্টের পদত্যাগ দেশের রাজনৈতিক পরিবেশে নতুন করে উত্তেজনা তৈরি করতে পারে।
এক বিবৃতিতে সার্কিসিয়ান বলেন, “দেশের প্রেসিডেন্ট হিসেবে চার বছর সক্রিয় দায়িত্ব পালনের পর আমি দীর্ঘ সময় ধরে ভেবেচিন্তে পদত্যাগের সিদ্ধান্ত নিয়েছি।”
বিবৃতিতে আরো বলা হয়, “জনসাধারণের এবং দেশের কঠিন সময়ে বিদেশ ও দেশের অভ্যন্তরীণ নীতিমালা প্রণয়নের গুরুত্বপূর্ণ প্রক্রিয়ায় প্রভাব খাটানোর ক্ষেত্রে প্রেসিডেন্টের কোন ভূমিকা নেই।”