মঙ্গলবার, ২৪ ডিসেম্বর ২০২৪

সংরক্ষিত নারী আসনে এমপি হতে দৌড়ঝাঁপ শুরু

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সম্পন্নের পর ৫০টি সংরক্ষিত নারী আসনের নির্বাচন প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। ফেব্রুয়ারি ২০২৪ এ ভোট করার লক্ষ্যে জানুয়ারি মাসের শেষ দিকে তফসিল ঘোষণা করা হতে পারে বলে নির্বাচন কমিশন সূত্রে জানা গেছে।

সংরক্ষিত নারী আসনে এমপি হতে দলীয় মনোনয়ন পেতে দৌড়ঝাঁপ শুরু করেছেন আওয়ামী লীগের শতাধিক নেত্রী। দৌড়ে রয়েছে মহিলা লীগ ও যুব মহিলা লীগসহ ছাত্রলীগের সাবেক নেত্রীরা।

এ নিয়ে দলের সিনিয়র নেতাদের সঙ্গে যোগাযোগ করছেন অনেকেই। এছাড়া বিভিন্ন পেশাজীবী সংগঠনের নারীনেত্রী, সংস্কৃতি অঙ্গনের তারকা শিল্পীরাও রয়েছেন সংরক্ষিত নারী আসনে এমপি হওয়ার দৌড়ে।

বাংলাদেশ সংবিধান অনুযায়ী যেকোন রাজনৈতিক দলের ৬ জন সংসদ সদস্য থাকলে ওই দল থেকে একজন সংরক্ষিত নারী সংসদ সদস্য হবেন। সে হিসেবে আওয়ামী লীগ ৩৭টি, জাতীয় পার্টি ২টি সংরক্ষিত নারী সদস্য পাবেন। এছাড়া ৬২ জন স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য একত্রে জোট বাঁধলে ১০টি কিংবা ৬ জন করে জোটবদ্ধ বাঁধলে ১ টি স্বতন্ত্র মহিলা সংসদ সদস্য নির্বাচিত করার সুযোগ পাবেন।

নির্বাচন কমিশনের অতিরিক্ত সচিব অশোক কুমার দেবনাথ সাংবাদিকদের জানান, সংরক্ষিত নারী আসনের ভোটের জন্য সংসদ সচিবালয় থেকে সংসদ সদস্যদের তালিকা কমিশন পেয়েছে। কয়েক দিনের মধ্যেই ভোটার তালিকার খসড়া প্রকাশ করা হবে। এরপর যদি কোনো আপত্তি না থাকে, তবে এটিই হবে চূড়ান্ত ভোটার তালিকা। পরবর্তীতে কমিশনের অনুমোদনক্রমে তফসিল ঘোষণা হবে।

সংরক্ষিত নারী আসনের এমপি নির্বাচিত হন জাতীয় নির্বাচনে ৩০০ আসনে বিজয়ী এমপিদের ভোটের মাধ্যমে।

সংরক্ষিত আসনের এমপি কারা হচ্ছেন তা নিয়ে ইতিমধ্যে শুরু হয়েছে আলোচনা। জাতীয় পার্টি সূত্রে জানা যায়, জাতীয় পার্টি দুটি আসনে মনোনয়ন পাচ্ছেন দলের চেয়ারম্যানের স্ত্রী ও কো-চেয়ারম্যান শেরীফা কাদের এবং কো-চেয়ারম্যান ও সাবেক এমপি অ্যাডভোকেট সালমা ইসলাম। তারা দুজনই দ্বাদশ সংসদ সদস্য নির্বাচনে পরাজিত হয়েছেন।

আওয়ামী লীগ সূত্রে জানা যায়, সংরক্ষিত আসনে কেন্দ্রীয় নেত্রীদের পাশাপাশি জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে আন্দোলন সংগ্রামে সম্পৃক্ত নারীদের মূল্যায়ন করা হতে পারে। এ ছাড়া জোটের কারনে মনোনয়ন পেয়েও ছেড়ে দেওয়া এমন নারী নেত্রীরা মনোনয়নে পেতে পারেন। এ ছাড়া বিভিন্ন পেশাজীবী সংগঠনে মুক্তিযুদ্ধের সপক্ষের নেত্রী ও বিশিষ্টজনসহ দলের দুর্দিনে ত্যাগী ও নিবেদিত প্রয়াত নেতাদের স্ত্রী বা কন্যারা মনোনয়ন পেতে পারেন।

আওয়ামী লীগের দৌড়ে এগিয়ে রয়েছেন শরিকদের জন্য ছেড়ে দেওয়া তিন জন প্রার্থী গাইবান্ধা-১ আসনে আফরুজা বারী, গাইবান্ধা-২ আসনের মাহবুব আরা গিনি ও লক্ষ্মীপুর-৪ আসনে ফরিদুন্নাহার লাইলী।

এ ছাড়া সাবেক এমপি অভিনেত্রী তারানা হালিম, যুব মহিলা লীগের সাবেক সভাপতি নাজমা আক্তার ও সাবেক সাধারণ সম্পাদক অপু উকিল, যুব মহিলা লীগের সভাপতি ডেইজী সারোয়ার ও সাধারণ সম্পাদক শারমিন সুলতানা লিলি, যুব মহিলা লীগ ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সভাপতি ফারজানা ইয়াসমিন উত্তরের সভাপতি তাহেরা খাতুন লুৎফা, দক্ষিণের সাধারণ সম্পাদক নিলুফা রহমান উত্তরের সাধারণ সম্পাদক শামীমা রহমান।

এছাড়া বর্তমান সংরক্ষিত এমপি মহিলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শবনম জাহান শিলা, ঢাকা থেকে ফজিলাতুন নেসা ইন্দিরা, নাহিদ ইজহার খান, সুবর্ণা মুস্তাফা, চট্টগ্রাম থেকে ওয়াসিকা আয়শা খান, খুলনা থেকে অ্যাডভোকেট গ্লোরিয়া ঝর্না সরকার, নরসিংদী থেকে তামান্না নুসরাত বুবলী, কুমিল্লা থেকে আরমা দত্ত, গোপালগঞ্জ থেকে নার্গিস রহমান ও খাগড়াছড়ি থেকে বাসন্তী চাকমা।

শহিদ পরিবার থেকে শহিদ আলতাফ মাহমুদের মেয়ে শাওন মাহমুদ ও শহিদুল্লাহ কায়সারের মেয়ে এফবিসিসিআইর পরিচালক শমী কায়সার। এ ছাড়া নাটোর-৪র সাবেক এমপি আবদুল কুদ্দুসের মেয়ে কুহেলী কুদ্দুস মুক্তি, আওয়ামী লীগের আন্তর্জাতিকবিষয়ক উপ-কমিটির সদস্য নেহরিন মোস্তফা দিশি, ছাত্রলীগের সাবেক ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মারুফা আক্তার পপি, অভিনেত্রী রোকেয়া প্রাচী, তারিন জাহান, নুসরাত ফারিয়া, অরুণা বিশ্বাস, নুসরাত ইমরোজ তিশা, তানভীন সুইটি, অপু বিশ্বাস, নিপুণ আক্তারসহ চলচ্চিত্র অঙ্গনের বেশ ক’জন আলোচনায় রয়েছেন।

 

সম্পর্কিত পোস্ট