কারামুক্ত হয়ে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, বিজয় না আসা পর্যন্ত গণতন্ত্র ফেরানোর চলমান আন্দোলন অব্যাহত থাকবে।
বৃহস্পতিবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) বিকেল ৩টা ৪৫ মিনিটে কেরানীগঞ্জে অবস্থিত ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে মুক্তি পান মির্জা ফখরুল। এরপর সেখানে উপস্থিত সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন তিনি।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, বাংলাদেশের জনগণ গণতন্ত্রের জন্য, ভোটের অধিকারের জন্য, ভাতের অধিকারের জন্য সবসময় সংগ্রাম করেছে, লড়াই করেছে। ইনশাআল্লাহ এই সংগ্রামে তারা জয়ী হবে।
মির্জা ফখরুলের মুক্তির ৪ মিনিট পর একই কারাগার থেকে ছাড়া পান দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরীও। তিনি বলেন, ভালো আছি, ভোলো থাকতে হবে। দেশের মানুষের ক্ষমতা দখল করে বিগত নির্বাচনে তারা (আওয়ামী লীগ) পরাজিত হয়েছে। বিএনপিসহ গণতন্ত্রকামী সবারই মনোবল অটুট আছে এবং শক্ত আছে।
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আসার জন্য সরকারের প্রস্তাবের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, যারা প্রস্তাব করেছে তারাই বলতে পারবে। আমাদের তো কোনো প্রস্তাবের কথা জানা নেই।
বিএনপির এই নেতা বলেন, সবচেয়ে বড় কথা, ‘মানুষের অধিকার কেড়ে নিয়ে জোর করে নির্বাচনের মাধ্যমে ক্ষমতা দখল করা হয়েছে। যা এরই মধ্যে জনগণ প্রত্যাখ্যান করেছে। তারা (আওয়ামী লীগ) নির্বাচনে নৈতিকভাবে জনগণের কাছে পরাজিত হয়েছে।
প্রধান বিচারপতির বাসভবনে হামলার ঘটনাসহ মির্জা ফখরুলের বিরুদ্ধে ১১টি এবং আমীর খসরুর বিরুদ্ধে ১০টি মামলা হয়। অন্য মামলায় জামিন পেলেও দীর্ঘদিন ধরে আটকে ছিল প্রধান বিচারপতির বাসভবনে হামলার মামলায় জামিন। অবশেষে বুধবার (১৪ ফেব্রুয়ারি) ওই মামলায়ও জামিন পেয়েছেন দুজন।
গত বছরের ২৮ অক্টোবর রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির মহাসমাবেশ শুরুর আগেই কাকরাইলে দুপুর থেকে বিএনপির নেতাকর্মীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষ হয়। এরপর পর্যায়ক্রমে বিজয়নগর পানির ট্যাংক ও শান্তিনগর এলাকায় সংঘর্ষ ছড়িয়ে পড়ে। একপর্যায়ে বিকেল ৩টার দিকে বিএনপির মহাসমাবেশ পণ্ড হয়ে যায়। ওই সংঘর্ষে পুলিশের এক সদস্য নিহত হন। আহত হন পুলিশের একাধিক সদস্য, এছাড়াও ২০ জন সাংবাদিক আহত হন।
এ ঘটনার পর গত বছরের ২৯ অক্টোবর মির্জা ফখরুলের গুলশানের নিজ বাসা থেকে তাকে আটক করে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) গোয়েন্দা বিভাগ (ডিবি)। এরপর তাকে প্রধান বিচারপতির বাসভবনে হামলা ও ভাঙচুরের মামলায় আদালতে হাজির করা হয়। আদালত তার জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
এদিকে গত ২ নভেম্বর দিবাগত রাত ১টার দিকে গুলশানের একটি বাসা থেকে আমীর খসরুকে আটক করে ডিবি। পরদিন ৩ নভেম্বর সমাবেশ চলাকালীন সংঘর্ষে পুলিশ সদস্য নিহতের ঘটনায় দায়ের করা মামলায় তাকে গ্রেফতার দেখানো হয়। মামলায় তার ৬ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত। রিমান্ড শেষে ৯ নভেম্বর তাকে কারাগারে পাঠানো হয়।