মঙ্গলবার, ২৪ ডিসেম্বর ২০২৪

বাংলাদেশকে বিশ্বব্যাংক দিচ্ছে ৫ হাজার কোটি টাকা

 

 

বাংলাদেশকে বিশ্বব্যাংক দিচ্ছে ৫ হাজার কোটি টাকা

 

তরুণ, নারী ও সুবিধাবঞ্চিত মানুষের কর্মসংস্থান এবং জীবিকার সুযোগ তৈরিতে নেয়া দুই প্রকল্পের বিপরীতে এ অর্থ দেয়া হবে। প্রায় সাড়ে ১৭ লাখ দরিদ্র ও ঝুঁকিপূর্ণ মানুষ এর সুবিধা পাবে। ৬০ কোটি ডলারের এই ঋণ পাঁচ বছর গ্রেস পিরিয়ডসহ ৩০ বছরে শোধ করতে হবে।

করোনাভাইরাস মহামারিতে ক্ষতিগ্রস্ত দরিদ্র ও ঝুঁকিপূর্ণ জনগোষ্ঠীর জীবিকা উন্নয়নে ৬০ কোটি ডলার বা প্রায় পাঁচ হাজার কোটি টাকা ঋণ দিচ্ছে উন্নয়ন সহযোগী সংস্থা বিশ্বব্যাংক। বৃহস্পতিবার বিশ্বব্যাংকের বোর্ডসভায় এই ঋণ অনুমোদন পেয়েছে। শুক্রবার সংস্থাটির ঢাকা অফিস থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

 

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, তরুণ, নারী ও সুবিধাবঞ্চিত মানুষের কর্মসংস্থান এবং জীবিকার সুযোগ তৈরিতে নেয়া দুই প্রকল্পের বিপরীতে এ অর্থ দেয়া হবে। প্রায় সাড়ে ১৭ লাখ দরিদ্র ও ঝুঁকিপূর্ণ মানুষ এর সুবিধা পাবে। একই সঙ্গে এই অর্থ করোনা মহামারির বর্তমান ও ভবিষ্যৎ ধাক্কা সামলাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।

 

বিশ্বব্যাংকের বাংলাদেশ ও ভুটানের ভারপ্রাপ্ত কান্ট্রি ডিরেক্টর দনদন চেন বলেন, ‘করোনা মহামারি বাংলাদেশের হাজার হাজার মানুষের জীবনে নেতিবাচক প্রভাব ফেলেছে। নারী ও তরুণ শ্রমিক, প্রবাসফেরত জনগোষ্ঠীর ওপর এটি বেশি প্রভাব ফেলেছে।’

 

তিনি বলেন, ‘এই সহায়তা গ্রামীণ দরিদ্র মানুষের ভবিষ্যৎ চাকরির জন্য প্রস্তুত করা ও উদ্যোক্তা হিসেবে দাঁড়াতে সাহায্য করবে।’ তিনি জানান, ‘অ্যাকসিলারেটিং অ্যান্ড স্ট্রেনদেনিং স্কিলস ফর ইকোনমিক ট্রান্সফরমেশন (এএসএসইটি)’ প্রকল্পে ৩০ কোটি ডলার ঋণ দেয়া হবে। এ প্রকল্পের মাধ্যমে ১০ লাখের বেশি তরুণ এবং শ্রমিককে ভবিষ্যতের জন্য দক্ষ করে গড়ে তোলা হবে। প্রকল্পটি মহামারির সময় ও তার পরের সময়ে শ্রমিকদের প্রশিক্ষিত করে অর্থনৈতিক গতি পুনরুদ্ধারের শিল্পগুলোকে সহায়তা করবে।

 

দনদন চেন আরও জানান, ‘রেসিলিয়েন্স, এন্টারপ্রেনারশিপ অ্যান্ড লাইভলিভ ইমপ্রুভমেন্ট (আরইএলআই)’ প্রকল্পেও ৩০ কোটি ডলার ঋণ দেবে বিশ্বব্যাংক। এর মাধ্যমে ২০টি জেলার ৩ হাজার ২০০ গ্রামের ৭ লাখ ৫০ হাজার দরিদ্র ও দুর্বল গ্রামীণ মানুষের জীবন-জীবিকা উন্নয়নে সহায়তা করা হবে। দুটি প্রকল্পে দেয়া এই ঋণ পাঁচ বছর গ্রেস পিরিয়ডসহ ৩০ বছরে শোধ করতে হবে।

 

এপ্রিলে এক সেমিনারে গবেষণা সংস্থা সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি) জানিয়েছে, করোনা মহামারির সময় দেশে কাজ হারিয়ে গরিব মানুষের সংখ্যা ২০ থেকে বেড়ে ৩৩ শতাংশে দাঁড়িয়েছে। দরিদ্র হয়েছে ১ কোটি ৬৮ লাখ মানুষ। দেশের ২০ শতাংশ পরিবারের আয় কমে গছে। এ অবস্থার কিছুটা উন্নতি হওয়ার পথে থাকলেও নতুন সংক্রমণ তা বিলম্বিত করছে। নতুন করে আরও দরিদ্র হওয়া ও কর্মহীন হওয়ার ঝুঁকি রয়েছে।

 

করোনায় প্রচুর মানুষ কাজ হারিয়েছে। বিভিন্ন স্তরের হিসাব করলে এ সংখ্যা ১ কোটি ১১ লাখ থেকে সর্বোচ্চ ২ কোটি ৫ লাখ হতে পারে। কর্মহীন হওয়াদের মধ্যে প্রচুর অপ্রাতিষ্ঠানিক খাতের শ্রমিক রয়েছে।

 

করোনা সংক্রমণের প্রধম ধাপে সারা দেশে শ্রমজীবী মানুষের বেতন কমেছে ৩৭ শতাংশ, ঢাকায় ৪২ ও চট্টগ্রামে ৩৩ শতাংশ। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পের ৬৬ শতাংশ প্রতিষ্ঠান। শহর এলাকায় অপ্রাতিষ্ঠানিক খাতে কাজ করে এমন ১০০ জনের মধ্যে ৬৯ জন এখনো চাকরি হারানোর ঝুঁকির মধ্যে আছে।

###

সম্পর্কিত পোস্ট