মঙ্গলবার, ২৪ ডিসেম্বর ২০২৪

ত্রাণ নিতে গিয়ে ৪৮ ঘণ্টায় হত্যার শিকার ৫৬ ফিলিস্তিনি

গাজা উপত্যকার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় গতকাল শুক্রবার জানিয়েছে, আগের ৪৮ ঘণ্টায় সেখানকার বিভিন্ন ত্রাণ সরবরাহ কেন্দ্রে অন্তত ৫টি হামলা চালানো হয়েছে। এসব হামলায় কমপক্ষে ৫৬ ফিলিস্তিনির মৃত্যু হয়েছে। আহত হয়েছেন আরও ৩ শতাধিক।
ঘটনাকে মানবতাবিরোধী অপরাধ আখ্যা দিয়েছে তারা। তবে এক বিবৃতিতে ইসরাইলের সামরিক বাহিনী ত্রাণ কেন্দ্রগুলোতে হামলার কথা অস্বীকার করে গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের প্রতিবেদনগুলোকে ‘মিথ্যা’ বলে দাবি করেছে।
বৃহস্পতিবার গাজায় ত্রাণের জন্য অপেক্ষারত ফিলিস্তিনিদের ওপর ইসরাইলি সেনাদের পৃথক দুটি হামলায় অন্তত ২৯ জন নিহত হয়েছে। গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, এদিনের প্রথম ঘটনায় গাজার মধ্যাংশের আল-নুসেইরাত শিবিরের একটি ত্রাণ বিতরণ কেন্দ্রে ইসরাইলের বিমান হামলায় আটজন নিহত হয়। পরে গাজার উত্তরাংশের একটি গোলচত্বরে ত্রাণবাহী ট্রাকবহরের জন্য অপেক্ষা করে থাকা ফিলিস্তিনিদের ওপর গুলিবর্ষণে অন্তত ২১ জন নিহত ও দেড়শ জনেরও বেশি আহত হয়।
গাজার স্থানীয় বাসিন্দা ও স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, বুধবার সন্ধ্যায় উত্তর গাজায় কুয়েত চত্বরে ত্রাণসামগ্রী সংগ্রহের জন্য জড়ো হয়েছিলেন ফিলিস্তিনিরা। সে সময় ফিলিস্তিনিদের ভিড় লক্ষ্য করে গুলিবর্ষণ করায় ৬ জনের মৃত্যু ও কমপক্ষে ৮৩ জন আহত হন।
এ বিষয়ে মন্তব্যের অনুরোধে ইসরাইলি সামরিক বাহিনী তাৎক্ষণিক সাড়া দেয়নি, জানিয়েছে রয়টার্স। বুধবারের ওই হামলার মাত্র কয়েক ঘণ্টা আগে রাফায় ইউএনআরডব্লিউএর এক খাবার সরবরাহ কেন্দ্রে ইসরাইলি বিমান হামলায় ৫ জনের মৃত্যু হয়। কয়েক দিন আগে সোমবার রাতে ত্রাণের জন্য অপেক্ষারত ১১ জনকে হত্যা করে ইসরাইল।
তারও আগে গত ২৯ ফেব্রুয়ারি ফিলিস্তিনি স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ জানায়, গাজা শহরের কাছের একটি ত্রাণ বিতরণ কেন্দ্রে অপেক্ষায় থাকা শতাধিক ফিলিস্তিনিকে গুলি চালিয়ে হত্যা করে ইসরাইলি বাহিনী।
পাঁচ মাসেরও বেশি সময় ধরে চলা ইসরাইলি হামলায় গাজা ভূখণ্ড প্রায় ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে, নিহত হয়েছে ৩১ হাজারেরও বেশি ফিলিস্তিনি আর আহত ৭১ হাজার ছাড়িয়ে গেছে। ঘরবাড়ি হারিয়ে গাজার ২৩ লাখ বাসিন্দার প্রায় সবাই উদ্বাস্তু হয়ে গেছে। কঠোর অবরোধ ও অবিরাম হামলার মধ্যে থাকা গাজাবাসীরা অনাহারে ভুগতে ভুগতে দুর্ভিক্ষের প্রান্তে চলে গেছে।
ইতিমধ্যেই অপুষ্টি ও পানিশূন্যতায় শিশুসহ অনেকের মৃত্যু হয়েছে। ক্ষুধায় বেপরোয়া হয়ে ওঠা লোকজন ত্রাণের জন্য হাহাকার করছে। ত্রাণবাহী ট্রাক দেখলেই ঝাঁপিয়ে পড়ছে, ত্রাণের জন্য হুড়োহুড়ি করছে।

সম্পর্কিত পোস্ট