মঙ্গলবার, ২৪ ডিসেম্বর ২০২৪

সিসিইউতেই আছেন খালেদা জিয়া

হাসপাতালের ক্রিটিক্যাল কেয়ার ইউনিট-সিসিইউতেই আছেন বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। তাকে চিকিৎসকরা নিবিড় পর্যবেক্ষণে রেখেছেন। শারীরিক অবস্থা নিয়ে রোববার রাতে দেশি-বিদেশি চিকিৎসকদের সমন্বয়ে মেডিকেল বোর্ডে বৈঠকও হয়েছে। তার ব্যক্তিগত চিকিৎসক এ জেড এম জাহিদ হোসেন সোমবার (১ এপ্রিল) দুপুরে এ তথ্য জানিয়েছেন।
এর আগে শনিবার মধ্যরাতে সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থার অবনতি হয়। তার মেডিকেল বোর্ডের সদস্যরা ওই রাতে গুলশানের বাসভবনে গিয়ে স্বাস্থ্যের পরীক্ষা-নিরীক্ষা করেন। মেডিকেল বোর্ডের পরামর্শে শনিবার রাতেই তাকে হাসপাতালে নেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়। এরপর খালেদা জিয়াকে শনিবার দিবাগত রাত তিনটার দিকে এভারকেয়ার হাসপাতালে নেওয়া হয়।
গত ২৭ মার্চও খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা কিছুটা খারাপ হয়েছিল। এরপর চিকিৎসকদের নিয়ে গঠিত মেডিকেল বোর্ডের সদস্যরা গুলশানে খালেদা জিয়ার বাসভবনে গিয়ে তার স্বাস্থ্যের কিছু পরীক্ষা-নিরীক্ষা করেছিলেন এবং তাকে বাসায় রেখেই চিকিৎসা দিয়ে আসছিলেন। শনিবার আবার তার শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে তাকে হাসপাতালের সিসিইউতে নিবিড় পর্যবেক্ষণে রেখে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।
এদিকে চিকিৎসাধীন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে দেখতে যান দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এবং স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস।
বেগম খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা ‘সংকটাপন্ন’ উল্লেখ করে গভীর উদ্বেগ, উৎকণ্ঠা প্রকাশ করে সুচিকিৎসার জন্য তাকে বিদেশ পাঠানোর জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে বাংলাদেশ ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি-বাংলাদেশ ন্যাপ। সোমবার গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে পার্টির চেয়ারম্যান জেবেল রহমান গানি ও মহাসচিব এম. গোলাম মোস্তফা ভুইয়া সাবেক প্রধানমন্ত্রী হিসেবে মানবিক বিবেচনায় বেগম খালেদা জিয়ার সর্বোচ্চ চিকিৎসার জন্য দ্রুত যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ ও বিদেশে যাওয়ার অনুমতি দেওয়ার জন্য সরকারের প্রতি এ আহ্বান জানিয়েছেন।
খালেদা জিয়ার চিকিৎসা প্রসঙ্গে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় সোমবার দুপুরে বলেন, দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে সরকার বিদেশে উন্নত চিকিৎসার সুযোগ না দিয়ে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করছে। দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার মৃত্যুসংবাদে সারাদেশে কান্নার রোল পড়লেও ক্ষমতাসীনরা খুশি হবে।
৭৯ বছর বয়সী খালেদা জিয়া আর্থ্রাইটিস, হৃদ্‌রোগ, ফুসফুস, লিভার, কিডনি, ডায়াবেটিসসহ বিভিন্ন জটিলতায় ভুগছেন। গত বছরের ৯ আগস্ট খালেদা জিয়াকে ঢাকার এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল। তখন পাঁচ মাসের বেশি সময় চিকিৎসা শেষে গত ১১ জানুয়ারি তার গুলশানের বাসায় ফেরেন বিএনপির চেয়ারপারসন।
সে সময় উন্নত চিকিৎসার জন্য খালেদা জিয়াকে বিদেশে নিতে তার পরিবার থেকে সরকারের কাছে আবেদন করা হলেও অনুমতি পাওয়া যায়নি। এমন পরিপ্রেক্ষিতে লিভার সিরোসিসে আক্রান্ত বিএনপির চেয়ারপারসনের রক্তনালিতে অস্ত্রোপচার করা হয় গত বছরের ২৭ অক্টোবর।
যুক্তরাষ্ট্র থেকে তিনজন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক এনে খালেদা জিয়ার রক্তনালিতে অস্ত্রোপচার করা হয়েছিল। তার স্বাস্থ্য কিছুটা স্থিতিশীল হলে সে দফায় পাঁচ মাসের বেশি সময় পর তাকে বাসায় নেওয়া হয়েছিল।
জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট ও জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতির মামলায় সাজাপ্রাপ্ত সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার সাজা ২০২০ সালের ২৫ মার্চ সরকার নির্বাহী আদেশে স্থগিত করে শর্ত সাপেক্ষে মুক্তি দিয়েছিল। তখন থেকে ছয় মাস পরপর তার সাজা স্থগিত করে মুক্তির মেয়াদ বাড়াচ্ছে সরকার।

সম্পর্কিত পোস্ট