মঙ্গলবার, ২৪ ডিসেম্বর ২০২৪

আমি শারীরিক নির্যাতনের শিকার হয়েছি : পরীমণি

ঢাকাই সিনেমার জনপ্রিয় নায়িকা পরীমণিকে ধর্ষণ ও হত্যাচেষ্টার অভিযোগ করা হয়েছে। রোববার রাত ৮টায় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে নিজের ভেরিফায়েড পেজে তিনি এই অভিযোগ করেন। মুহূর্তেই অভিনেত্রীর পোস্টটি ভাইরাল হয়ে যায়। শোবিজ তোলপাড় করে দেয় পরীমণির ফেসবুক পোস্টটি। এদিন রাতে নিজ বাসায় গণমাধ্যমকর্মীদের কাছে পরীমণি অভিযোগ করেন, তাকে ধর্ষণ ও হত্যার চেষ্টা করা হয়েছে। পরীমণি জানান, নাসির উদ্দিন নামে এক ব্যক্তি তাকে শারীরিকভাবে হেনস্থা করার চেষ্টা করেন। পরীমণি বলেন, এভাবে মানুষ বেঁচে থাকতে পারে না। আমি থানায় অভিযোগ দিলেও কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।

পরীমণি আরও জানান, তিন-চার দিন আগে রাত ১২টায় ব্যক্তিগত রূপসজ্জাশিল্পী জিমি ও তার পারিবারিক বন্ধু অমির সঙ্গে বাইরে বের হয়েছিলেন তিনি। অমি তাদের উত্তরার একটি ক্লাবে নিয়ে যান। সেখানে পরীমণির সঙ্গে কয়েকজনের পরিচয় করিয়ে দেন বন্ধুটি। সেখানকার একজন হঠাৎ জোর করে তার মুখে পানীয়র গ্লাস চেপে ধরে এবং শ্লীলতাহানির চেষ্টা করে। এ সময় পরীর সঙ্গে থাকা জিমি ভিডিও করতে চাইলে তাকে মারধর করা হয়।

এ সময় তিনি বলেন, আমি সুইসাইড করার মতো মেয়ে না। আমি যদি মারা যাই, আপনারা বিচার করবেন। বলতে বলতে কান্নায় ভেঙে পড়েন নায়িকা পরীমনি।

সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হওয়া পোস্টটিতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে বিচার চেয়ে পরীমণি লিখেছেন, ‘মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আমি পরীমণি। এই দেশের একজন বাধ্যগত নাগরিক। আমার পেশা চলচ্চিত্র। আমি শারীরিক নির্যাতনের শিকার হয়েছি। আমাকে রেপ এবং হত্যা করার চেষ্টা করা হয়েছে। আমি এর বিচার চাই। এই বিচার কই চাইবো আমি? কোথায় চাইবো? কে করবে সঠিক বিচার? আমি খুঁজে পাইনি গত চার দিন ধরে। থানা থেকে শুরু করে আমাদের চলচ্চিত্রবন্ধু বেনজীর আহমেদ আইজিপি স্যার! আমি কাউকে পাই না মা। যাদেরকে পেয়েছি সবাই শুধু ঘটনা বিস্তারিত জেনে, দেখছি বলে চুপ হয়ে যায়! আমি মেয়ে, আমি নায়িকা, তার আগে আমি মানুষ। আমি চুপ করে থাকতে পারি না। আজ আমার সাথে যা হয়েছে তা যদি আমি কেবল মেয়ে বলে, লোকে কী বলবে এই গিলানো বাক্য মেনে নিয়ে চুপ হয়ে যাই, তাহলে অনেকের মতো (যাদের অনেক নাম এক্ষুনি মনে পড়ে গেল) তাদের মতো আমিও কেবল তাদের দল ভারী করতে চলেছি হয়তো। আফসোস ছাড়া কারোর কি করবার থাকবে তখন! আমি তাদের মতো চুপ কি করে থাকতে পারি মা? আমি তো আপনাকে দেখিনি চুপ থেকে কোনো অন্যায় মেনে নিতে! আমার মা যখন মারা যান তখন আমার বয়স আড়াই বছর। এতদিনে কখনো আমার এক মুহূর্ত মাকে খুব দরকার এখন, মনে হয়নি এটা। আজ মনে হচ্ছে, ভীষণ রকম মনে হচ্ছে মাকে দরকার, একটু শক্ত করে জড়িয়ে ধরার জন্য দরকার।

আমার আপনাকে দরকার মা। আমার এখন বেঁচে থাকার জন্য আপনাকে দরকার মা। মা আমি বাঁচতে চাই। আমাকে বাঁচিয়ে নাও মা।’

সম্পর্কিত পোস্ট