সমস্ত জল্পনার অবসান ঘটিয়ে আরও একটি কেন্দ্র থেকে প্রার্থী হলেন রাহুল গান্ধী। তবে নিজের পুরনো কেন্দ্র অমেঠী থেকে নয়, উত্তরপ্রদেশে কংগ্রেসের অন্যতম ‘গড়’ রায়বরেলী থেকে প্রার্থী হচ্ছেন রাহুল গান্ধী।
শুক্রবার (৩ মে) সকালে কংগ্রেসের তরফে এই ঘোষণা করা হয়। গত লোকসভা ভোটে অমেঠীর সঙ্গে কেরালার ওয়েনাড় কেন্দ্র থেকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিলেন রাহুল গান্ধী। কিন্ত সেবার ওয়েনাড়ে জিতলেও অমেঠীতে হেরে যান তিনি। এবারও অবশ্য ওয়েনাড় থেকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছেন রাহুল গান্ধী। গত ২৬ এপ্রিল ওই কেন্দ্রে ভোট হয়ে গিয়েছে।
শুক্রবার সকালে রাহুলের পুরনো কেন্দ্র অমেঠীতেও দলের প্রার্থীর নাম ঘোষণা করেছে কংগ্রেস। সেখানে গান্ধী পরিবারের ‘আস্থাভাজন’ কিশোরীলাল শর্মাকে টিকিট দেওয়া হয়েছে। আগামী ২০ মে পঞ্চম দফায় ভোট অমেঠী এবং রায়বরেলীতে। ইতিমধ্যেই অমেঠী থেকে বিজেপির বিদায়ী সাংসদ স্মৃতি ইরানি মনোনয়ন জমা দিয়ে দিয়েছেন। রায়বরেলীতে বিজেপি প্রার্থী করেছে উত্তরপ্রদেশের মন্ত্রী দীনেশপ্রতাপ সিংহকে। ২০০৪ থেকে ২০১৯ পর্যন্ত দীর্ঘ ১৫ বছর অমেঠীর সাংসদ ছিলেন রাহুল। কিন্তু গত লোকসভা ভোটে তিনি স্মৃতির কাছে হেরে যান।
অন্যদিকে, রায়বরেলীতে এবারের বিজেপি প্রার্থী দীনেশকে হারিয়েই ২০১৯ এ জয়ী হন সোনিয়া গান্ধী। কিন্তু সনিয়া রাজস্থান থেকে রাজ্যসভার সাংসদ হিসাবে নির্বাচিত হওয়ায় তার এবার লোকসভা ভোটে দাঁড়াননি তিনি।
রায়বরেলী সেই জহরলাল নেহরুর আমল থেকে কংগ্রেসের ঘর হিসাবে পরিচিত। ১৯৬২ এবং ১৯৯৯ সাল বাদ দিয়ে এই কেন্দ্রে সব সময়ই নেহরু-গান্ধী পরিবারের কেউ প্রার্থী হয়েছেন। প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী এই কেন্দ্র থেকে তিনবার জয়ী হয়েছেন। সোনিয়া টানা পাঁচ বার এই কেন্দ্রে জিতে লোকসভায় গিয়েছেন। ১৯৫২ সালের পর বিজেপি মাত্র দু’বার এই কেন্দ্রে জয়ী হয়েছে। আর সমাজবাদী পার্টি এবং বহুজন সমাজবাদী পার্টি কখনও এই কেন্দ্রে জয়ের মুখ দেখেনি। এই পরিসংখ্যান মাথায় রেখে রায়বরেলী কেন্দ্রটিকে রাহুলের জন্য ‘নিরাপদ’ বলে মনে করছেন অনেকে।
কংগ্রেস সূত্রে জানা যায়, রায়বরেলীতে প্রার্থী হতে পারেন প্রিয়ঙ্কা গান্ধী। অমেঠী, রায়বরেলীর প্রার্থী কারা হবেন, তা নিয়ে জল্পনা বাড়ছিলো। কিন্ত প্রিয়াঙ্কা গান্ধী জানিয়ে দেন, তিনি গোটা দেশে প্রচারে মন দিতে চান। শুধু রায়বরেলী বা অমেঠীতে লড়তে গেলে তিনি একটি আসনে আটকে যাবেন।
এদিকে, রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের একাংশ মনে করছেন, উত্তরপ্রদেশে দুই আসন থেকেই গান্ধী পরিবারের কেউ না লড়লে কংগ্রেস নির্বাচনী ময়দানের জমি ছেড়ে পালাচ্ছে বলে বার্তা যেত। তাই রাহুলকে রায়বরেলীতে প্রার্থী করে উত্তরপ্রদেশের দলীয় কর্মীদের কংগ্রেস ইতিবাচক বার্তা দিল বলেই মনে করা হচ্ছে।