সৌদি আরবের পবিত্র মক্কা নগরীতে শুরু হয়েছে হজের আনুষ্ঠানিকতা। আজ সূর্যোদয় থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত আরাফাতের ময়দানে অবস্থান করে পবিত্র হজ পালন করবেন হাজিরা। এর আগে শুক্রবার (১৪ জুন) ভোর থেকে ইহরাম বেঁধে মিনা প্রান্তরে উপস্থিত হয়ে হজের আনুষ্ঠানিকতা শুরু করেন তারা। এ বছর বিশ্বের ২০ লাখেরও বেশি মুসলমান হজ পালন করছেন। বাংলাদেশ থেকে হজে গেছেন ৮২ হাজার ৭৭২ জন। হজযাত্রীদের স্বাগত জানাতে এবার ব্যাপক প্রস্তুতি নিয়েছে সৌদি কর্তৃপক্ষ।
স্থানীয় সময় ৯ জিলহজ আরাফাতের ময়দানে অবস্থান করাকেই হজের দিন বলা হয়। এখানেই দেওয়া হবে হজের মূল খুতবা। খুতবা দেবেন মক্কার পবিত্র মাসজিদুল হারামের ইমাম শায়খ মাহের বিন হামাদ আল-মুয়াইকিলি। এ তথ্য নিশ্চিত করেছে মক্কা ও মদিনার পবিত্র দুই মসজিদের ধর্ম বিষয়ক পরিচালনা পর্ষদ।
দুই মাইল দৈর্ঘ্য ও দুই মাইল প্রস্থের বিরাট সমতল ময়দানের নাম আরাফাত। এর তিন দিকে রয়েছে জাবাল বা পাহাড়। জাবালে রহমত হলো রহমতের পাহাড়। বলা হয়ে থাকে, পৃথিবীতে এসে হজরত আদম (আ.) ও হজরত হাওয়া (আ.)-এর পুনর্মিলনও হয়েছিল এ ময়দানে।
সাড়ে চৌদ্দশত বছর পূর্বে হজরত মুহাম্মদ (সা.) জাবালে রহমত পাহাড়ের কাছে দাঁড়িয়ে বিদায় হজের ঐতিহাসিক ভাষণ দিয়েছিলেন। লাখো মানুষের উদ্দেশে প্রদত্ত এই ভাষণের পর আল্লাহর পক্ষ থেকে ঘোষণা এসেছিল দ্বীনের পরিপূর্ণতা লাভের। আজও সেই ধারাবাহিকতা বজায় রেখে ভাষণ দেওয়া হয়। ভাষণে গোটা বিশ্বের সার্বিক পরিস্থিতি তুলে ধরা হয়। এ দিন হাজিরা এক আবেগঘন পরিবেশে মহান আল্লাহর জন্য নিজের জীবন উৎসর্গ করে কান্নাকাটি করতে থাকেন। কৃত পাপের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করেন; নিজের পরিবার পরিজন, সমাজ ও রাষ্ট্রের সুখ শান্তির জন্য আল্লাহর কাছে দোয়া করেন।
১০ জিলহজ ফজরের নামাজ আদায় করে মুজদালিফা থেকে আবার মিনায় ফিরে আসবেন হাজিরা। এরপর বড় শয়তানকে পাথর নিক্ষেপ, কুরবানি ও মাথা মুণ্ডন বা চুল ছেঁটে স্বাভাবিক পোশাকে মক্কায় কাবা শরিফ তাওয়াফ করবেন। তাওয়াফ, সাঈ শেষে মিনায় ফিরে গিয়ে ১১ ও ১২ জিলহজ অবস্থান এবং প্রতিদিন তিনটি শয়তানকে পাথর নিক্ষেপ করবেন। শয়তানকে পাথর নিক্ষেপের সময় যাতে কোনো দুর্ঘটনা না ঘটে, সে জন্য সৌদি হজ কর্তৃপক্ষ প্রতিবারের মতো বিশেষ ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে।