মঙ্গলবার, ২৪ ডিসেম্বর ২০২৪

সবুজ বাংলাদেশ গড়ে তোলার আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর

প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা দেশবাসীকে বেশি পরিমাণে গাছ লাগিয়ে ‘সবুজ বাংলাদেশ’ গড়ার আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘সবুজ বাংলাদেশ গড়তে সারা দেশে আমাদের সাধ্যমতো গাছ লাগাতে হবে।’

শেখ হাসিনা গতকাল শনিবার তাঁর সরকারি বাসভবন গণভবনে আষাঢ় মাসের প্রথম দিনে বাংলাদেশ কৃষক লীগের তিন মাসব্যাপী বৃক্ষরোপণ কর্মসূচির উদ্বোধনকালে দেওয়া ভাষণে এ কথা বলেন।

১৯৮৪ সাল থেকে বাংলাদেশ কৃষক লীগ আষাঢ়ের প্রথম দিনটি থেকে সারা দেশে বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি পালন করে আসছে।

একই অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী দেশব্যাপী বৃক্ষরোপণ অভিযানে অবদানের জন্য কৃষক লীগের বেশ কয়েকজন নেতাকে পুরস্কৃত করেন এবং নেতাকর্মীদের মধ্যে গাছের চারা বিতরণ করেন।

পরিবেশ রক্ষার আন্দোলন দেশে আওয়ামী লীগই প্রথম শুরু করে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, কৃষক ও কৃষি বাঁচলে বাংলাদেশ বাঁচবে। সে ক্ষেত্রে কৃষক লীগের দায়িত্ব অনেক বেশি।

সরকারপ্রধান বলেন, ‘গাছ আমাদের প্রাণ, এটি আমাদের শ্বাস-প্রশ্বাসের জন্য অক্সিজেন দেয়।

কাজেই আমরা যত বেশি বৃক্ষ লাগাতে পারব—এটি আপনাকে ফল দেবে, খাদ্য দেবে, আবার অর্থ উপার্জনের পথও সুগম করবে।’প্রধানমন্ত্রী প্রত্যেককে একটি করে ফলদ, বনজ ও ঔষধি গাছ লাগানোর ওপর গুরুত্বারোপ করে বলেন, ‘এভাবে আমাদের দেশকে যদি আমরা সব সময় সবুজ করে রাখতে পারি, তাহলে বাংলাদেশ আর পিছিয়ে থাকবে না।’

প্রধানমন্ত্রী সবাইকে আগাম ঈদুল আজহার শুভেচ্ছা জানিয়ে যত্রতত্র কোরবানির পশু জবাই করে জায়গা যাতে নষ্ট না হয়, সেদিকে লক্ষ রাখার জন্যও সবার প্রতি আহ্বান জানান।

অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন বাংলাদেশ কৃষক লীগ সভাপতি সমীর চন্দ ও ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক বিশ্বনাথ সরকার বিটু।

কৃষক লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শামীমা শাহরিয়ার অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন।

প্রধানমন্ত্রী অতীতের সরকারগুলোর নির্বিচারে গাছ কাটার কথা স্মরণ করিয়ে দিয়ে বলেন, ছোটবেলায় দেখেছেন—এয়ারপোর্ট থেকে বাংলা একাডেমি হয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় পর্যন্ত আইল্যান্ডে থাকা কৃষ্ণচূড়াগাছে যখন ফুল ফুটত, তখন অপরূপ রূপে এই শহরটা জেগে উঠত। জিয়াউর রহমান এক এক করে সব গাছ কেটে ফেলেন।

শেখ হাসিনা বলেন, বিএনপি শুধু ক্ষমতায় থাকাকালেই নয়, বিরোধী দলে থাকাকালেও আন্দোলনের নামে গাছ কেটেছে। বিএনপি-জামায়াত ২০১৩ সালে কেবল আগুন দিয়ে মানুষ পোড়ায়নি, আন্দোলনের নামে হাজার হাজার গাছ কেটে ফেলেছিল।

বৃক্ষ নিধন করাই বিএনপির চরিত্র।তিনি বলেন, ‘খালেদা জিয়া বিএডিসি প্রায় বন্ধই করে দিয়েছিলেন। কোনোমতে একটা অংশ বেঁচে ছিল। কারণ বীজ উত্পাদন বেসরকারি খাতে হবে এবং বিদেশ থেকে আমদানি করবে। ওদের কিছু লোক ব্যবসায় জড়িত ছিল। কিন্তু আমরা আমাদের বীজ উত্পাদনের জন্য বীজ গবেষণাগার গড়ে তোলায় দেশেই ভালো বীজ উত্পাদন হচ্ছে। এখন দেশে যে বিভিন্ন ধরনের ফলমূল হয় এবং সব ধরনের শাক-সবজি ও ফলমুল ১২ মাসই পাওয়া যাচ্ছে, সেটা আমাদের গবেষণারই ফসল।’

জাতির পিতার ‘সবুজ বিপ্লব’-এর ডাক, কক্সবাজারসহ উপকূলীয় অঞ্চলে বৃক্ষরোপণের মাধ্যমে পরিবেশ-প্রতিবেশকে রক্ষার কথা স্মরণ করে তাঁর কন্যা শেখ হাসিনা বলেন, বঙ্গবন্ধুর পদাঙ্ক অনুসরণ করে পরিবেশ রক্ষার জন্য আওয়ামী লীগ ১৯৮৪ সাল থেকে গাছ লাগানোর কর্মসূচি হাতে নেয়, যখন সমগ্র বিশ্বেও এভাবে পরিবেশের কথা আসেনি।

শেখ হাসিনা বলেন, আওয়ামী লীগ জনগণকে যে যে ওয়াদা দিয়েছিল, তার সবই পূরণ করেছে। ২০৪১ সাল পর্যন্ত প্রেক্ষিত পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি আগামী প্রজন্মের সুন্দর ভবিষ্যত্ নিশ্চিত করার জন্য ‘ডেল্টা পরিকল্পনা-২১০০’ বাস্তবায়নে নেদারল্যান্ডসের সঙ্গে চুক্তি করা হয়েছে।

সূত্র: বাসস

সম্পর্কিত পোস্ট