সরকারি চাকরিতে কোটা ব্যবস্থা নিয়ে হাইকোর্টের দেওয়া রায়ের ওপর এক মাসের স্থিতিবস্থার আদেশ দিয়েছেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ। এই এক মাসে কর্মসূচি দিয়ে জনদুর্ভোগ সৃষ্টি না করার অনুরোধ করেছে ডিএমপি।
বৃহস্পতিবার (১১ জুলাই) দুপুরে ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে আন্দোলকারীদের উদ্দেশ্যে এই অনুরোধ করেন অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ক্রাইম অ্যান্ড অপস) ড. খ. মহিদ উদ্দিন।
ড. খ. মহিদ উদ্দিন বলেন, শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের বিষয়ে হাইকোর্ট একটি নির্দেশনা দিয়েছেন। হাইকোর্ট চার সপ্তাহের জন্য স্থিতিবস্থার আদেশ দিয়েছেন আপিল বিভাগ। আজ থেকে শিক্ষার্থীদের আর জনদুর্ভোগ করার কোনো অবকাশ আছে বলে ঢাকা মহানগর পুলিশ মনে করে না। যারা আন্দোলন করছেন তাদের প্রতি পুলিশের অবশ্যই ভালোবাসা, সহমর্মিতা আছে। কিন্তু সেই সঙ্গে মনে রাখতে হবে দেশের প্রচলিত আইন ও দেশের সর্বোচ্চ আদালতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল থাকতে আমরা বাধ্য। সেই জায়গা থেকে যেহেতু শিক্ষার্থীরা শিক্ষিত, সেহেতু ডিএমপির পক্ষ থেকে আমি বিনীত অনুরোধ করছি তারা যেন মানুষের কোনো দুর্ভোগ দিয়ে কর্মসূচি না দেয় ৷
তিনি আরও বলেন, গত ১০ দিন ধরে শাহবাগ, সায়েন্সল্যাবসহ ঢাকার শহরের বিভিন্ন জায়গায় মানুষের গাড়ি, চলাফেরা ব্যহত হয়েছে। ডিএমপির পক্ষ থেকে চেষ্টা করা হয়েছে মানুষ যেন নিরাপদে চলাচল করতে পারে৷ পুলিশ সকলের অধিকারের বিষয়ে যেমন শ্রদ্ধাশীল সেই সঙ্গে সম্মানিত মহানগরবাসীর নিরাপত্তায় ও গমনাগমনের জন্য পুলিশ প্রাণান্ত চেষ্টা করে।
মহিদ উদ্দিন বলেন, বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ব্যানারে যে আন্দোলন চলে আসছিলো সেটি ৬ জুলাই থেকে ১০ জুলাই পর্যন্ত সারা বাংলাদেশে বিভিন্ন জায়গায় তারা অবস্থান নেয়। পুলিশ অত্যন্ত পেশাদারিত্বের সঙ্গে এবং ধৈর্যের সঙ্গে মোকাবিলা করেছে। আমরা আশা করি, আমাদের আবেদন এবং সর্বোচ্চ আদালতের নির্দেশনা শিক্ষার্থীদের পক্ষেই রয়েছে। তাই পরবর্তী কর্মসূচির কোনো যৌক্তিকতা নেই । শিক্ষার্থীদের প্রতি সহযোগিতা এবং ভালোবাসা অব্যাহত থাকবে।
এইচএসসি পরীক্ষা চলমান রয়েছে উল্লেখ করে ডিএমপির এই কর্মকর্তা বলেন, গত ৭ জুলাই রথযাত্রা হয়েছে। ডিএমপি প্রচণ্ড এক প্রেশার পুলিশ নিয়েছে। সামনে আশুরা ও উল্টো রথযাত্রা রয়েছে।
আজকেও শিক্ষার্থীরা ঢাকার বিভিন্ন পয়েন্টে আন্দোলন করার ঘোষণা দিয়েছে। পুলিশ কী ব্যবস্থা নেবে? এমন প্রশ্নের জবাবে জানতে চাইলে তিনি বলেন, সর্বোচ্চ আদালত থেকে যে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে তা শিক্ষার্থীদের পক্ষে রয়েছে। কাজেই আন্দোলন যদি যৌক্তিকতা না থাকে তবে আন্দোলনে আসা উচিত নয়। আন্দোলন না করার জন্য শিক্ষার্থীদের প্রতি অনুরোধ রইলো।
এরপরেও যদি নির্দেশনা না মেনে আন্দোলন করে তাহলে পুলিশের পক্ষ থেকে কী ব্যবস্থা নেওয়া হবে এমন প্রশ্নের জবাবে ডিএমপির এই কর্মকর্তা বলেন, বিষয়টি ঢাকা মহানগর পুলিশের আইন ও দেশের প্রচলিত আইনে ৩৬ অনুযায়ী অপরাধ। গত ১০ দিনে পুলিশের কোনো সদস্য শিক্ষার্থীদের সঙ্গে এমন আচরণ করেননি যাতে করে পুলিশের পেশাদারিত্ব নিয়ে কেউ প্রশ্ন তুলতে পারেন। আমি বিশ্বাস করি শিক্ষার্থীরা সেই সম্মানটুকু রাখবেন।