মঙ্গলবার, ২৪ ডিসেম্বর ২০২৪

আওয়ামী লীগ সরকার ব্যবসাবান্ধব সরকার: প্রধানমন্ত্রী

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, আওয়ামী লীগ সরকার ব্যবসাবান্ধব সরকার। ব্যবসা-বাণিজ্য যাতে সহজ হয়, উদ্যোক্তাগণ যাতে উৎসাহ পায়, আমরা সর্বদা সেই কাজই করছি। আমাদের সরকার ব্যবসায় নানা ধরনের প্রণোদনা প্রদান করে আসছে।
শনিবার (১৩ জুলাই) ‘জাতীয় রফতানি ট্রফি’ প্রদান উপলক্ষ্যে দেওয়া এক বাণীতে তিনি এসব কথা বলেন। রোববার (১৪ জুলাই) এই রফতানি ট্রফি প্রদান করা হবে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, রফতানি বাণিজ্যের মাধ্যমে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করে দেশের অর্থনীতিতে অসামান্য অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ ২০২১-২২ অর্থবছরের জাতীয় রফতানি ট্রফি প্রদান করা হচ্ছে জেনে আমি আনন্দিত। এ উপলক্ষ্যে সফল রফতানিকারককৃন্দকে আমি আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানাই।
শেখ হাসিনা বলেন, সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্নের সোনার বাংলাদেশ বিনির্মাণে আওয়ামী লীগ সরকার ব্যবসা বান্ধব পরিবেশ বজায় রাখতে বদ্ধপরিকর। ২০০৯ সাল থেকে ধারাবাহিকভাবে সরকার পরিচালনা করে আমরা বাংলাদেশকে অর্থনৈতিকভাবে শক্তিশালী রাষ্ট্র হিসেবে পরিণত করতে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ ও বাস্তবায়ন করে যাচ্ছি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, একটি দেশের সামগ্রিক অর্থনৈতিক অগ্রগতি ও উন্নয়নে রফতানি বাণিজ্যের অবদান অনস্বীকার্য। বাংলাদেশের রফতানিকারকগণ বিশ্ব বাজারে দেশীয় উৎপাদিত মানসম্পন্ন পণ্য রফতানি করে দেশের অর্থনীতিতে অবদান রাখছেন। বিশ্ব অর্থনীতির এ কঠিন সময়েও পণ্য ও সেবাখাতে ২০২২-২৩ অর্থবছরে ৩ দশমিক ৪২ শতাংশ প্রবৃদ্ধিতে ৬৩ দশমিক ৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার রফতানি আয় অর্জিত হয়েছে।
২০২৭ সালে রফতানির লক্ষ্যমাত্রা ১১০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার নির্ধারণ করা হয়েছে জানিয়ে তিনি আরও বলেন, এ লক্ষ্য অর্জনে সরকার এবং রফতানিকারকবৃন্দসহ সংশ্লিষ্ট সকল অংশীজনকে সমন্বিতভাবে কাজ করতে হবে। পণ্য রফতানির পাশাপাশি সেবা খাতের সম্প্রসারণ ও রফতানিতে বাংলাদেশের সক্ষমতা বৃদ্ধির লক্ষে আমাদের সরকার ব্যবসায়ীদের সাথে নিবিড়ভাবে কাজ করে যাচ্ছে। তিনি দৃঢ়ভাবে আস্থা প্রকাশ করেন, পণ্য খাতের মতো সেবা খাতেও আমরা সফলতা অর্জন করতে সক্ষম হবো।
শেখ হাসিনা বলেন, আওয়ামী লীগ সরকার ব্যবসা বান্ধব সরকার। ব্যবসা-বাণিজ্য যাতে সহজ হয়, উদ্যোক্তাগণ যাতে উৎসাহ পায়, আমরা সর্বদা সেই কাজই করছি। আমাদের সরকার ব্যবসায় নানা ধরনের প্রণোদনা প্রদান করে আসছে।
তিনি বলেন, কোভিড-১৯ অতিমারি এবং পরবর্তী ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধের ক্ষতিকর প্রভাবের মধ্যেও আমরা আমাদের অর্থনৈতিক অগ্রযাত্রাকে অব্যাহত রেখেছি। মহামারির প্রকোপে অনেক দেশের প্রবৃদ্ধি নেতিবাচক হলেও ২০১৯-২০ অর্থবছরে আমাদের জিডিপিতে ৩ দশমিক ৪৫শতাংশ প্রবৃদ্ধি বজায় ছিল। আর এসবই সম্ভব হচ্ছে- দূরদর্শী ৮ম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা, এসডিজি-২০৩০, প্রেক্ষিত পরিকল্পনা-২০৪১ এর কর্মকৌশল সফলভাবে বাস্তবায়নের ফলে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, সরকার প্রদত্ত সুযোগ-সুবিধা কাজে লাগিয়ে আমাদের বেসরকারি খাত অর্থনৈতিক উন্নয়নকে যেমন ত্বরাদ্বিত করেছে, তেমনি তাদের যেকোনো সমস্যা সমাধানে সরকার ত্বরিত পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে।
তিনি বলেন, সরকারের অব্যাহত উন্নয়ন কৌশল সফলভাবে বাস্তবায়নের ফলে বিশ্ব দরবারে আমাদের সম্মান বৃদ্ধি পেয়েছে, সেই সাথে আমরা স্বীকৃতিও লাভ করেছি। ২০২৬ সালে আমরা স্বল্পোন্নত দেশের তালিকা থেকে উন্নীত হবো। এলডিসি থেকে উত্তোরনকে সামনে রেখে এবং স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণের প্রত্যয়ে ব্যবসা বাণিজ্য সম্প্রসারণ ও রফতানি খাতের বিকাশে বিভিন্ন প্রকার সহায়ক নীতিমালা প্রণয়ন করা হচ্ছে। পাশাপাশি বিভিন্ন রফতানি সম্ভাবনাময় দেশ এবং অঞ্চলের সাথে দ্বিপাক্ষিক ও আঞ্চলিক মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি বা ইকোনমিক পার্টনারশিপ এগ্রিমেন্ট সম্পাদনের উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। রফতানি বাণিজ্য সামষ্টিক অর্থনীতিতে স্থিতিশীলতা আনে। এর সকল চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করে যে সকল প্রতিষ্ঠান উল্লেখযোগ্য সফলতার সাথে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করছে তাদের স্বীকৃতি প্রদান রাষ্ট্রের দায়িত্ব বলে তিনি মনে করেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, জাতীয় রফতানি ট্রফি প্রদান কার্যক্রম দেশের রফতানিকারকবৃন্দকে উৎসাহ প্রদানসহ রফতানি বাণিজ্য সম্প্রসারণে বিশেষ ভূমিকা রাখছে। রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ পর্যায় হতে প্রদত্ত এ ধরনের স্বীকৃতি দেশের শিল্পায়ন ত্বরান্বিত করার মাধ্যমে রফতানির চলমান প্রবৃদ্ধির ধারা অব্যাহত রাখার পাশাপাশি দেশের সামগ্রিক অর্থনীতিতে গতি সঞ্চার করবে বলে তিনি দৃঢ় আস্থা প্রকাশ করেন।
প্রধানমন্ত্রী জাতীয় রফতানি ট্রফি ২০২১-২২ প্রদান অনুষ্ঠানের সার্বিক সাফল্য কামনা করেন।

সম্পর্কিত পোস্ট