অলিম্পিক আসরের উদ্বোধন অনুষ্ঠান শুরুর কয়েক ঘণ্টা আগে ভয়াবহ হামলার শিকার হয়েছে ফ্রান্সের রেল নেটওয়ার্ক। রয়টার্স, বিবিসি ও দ্য গার্ডিয়ানের প্রতিবেদন থেকে জানা গেছে, সবচেয়ে বেশি ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে উচ্চগতির ট্রেন ও রেললাইনগুলোর।
প্রসঙ্গত, বৈশ্বিক অলিম্পিক আসর উপলক্ষে রাজধানী প্যারিসে নজিরবিহীন নিরাপত্তা জারি করে ফ্রান্স। সরকারের নির্দেশ অনুযায়ী ৪৫ হাজারেরও বেশি পুলিশ, ১০ হাজারেরও বেশি সেনা সদস্য এবং বিভিন্ন বেসরকারি নিরাপত্তা সংস্থার অন্তত ২ হাজার কর্মী অলিম্পিক আসরের সার্বক্ষণিক নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকবেন। তবে এত নিরাপত্তা সত্ত্বেও রেল নেটওয়ার্কের হামলা এড়ানো যায়নি।
ফ্রান্সের রাষ্ট্রায়ত্ত রেল নেটওয়ার্ক কর্তৃপক্ষ সংস্থা এসএনসিএফ। এই সংস্থার কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, বৃহস্পতিবার রাতে রাজধানী প্যারিসের সঙ্গে সংযুক্ত বিভিন্ন রুটের রেললাইন ও রেলগাড়ি লক্ষ্য করে হামলা চালায় দুষ্কৃতকারীরা। উচ্চগতির ট্রেনগুলো ছিল তাদের মূল লক্ষ্য।
এসএনসিফের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কর্মকর্তা রয়টার্সকে বলেন, বিভিন্ন স্থানে রেললাইন উপড়ে ফেলা হয়েছে। অনেক জায়গায় ট্রেনের বগি ও স্টেশনে আগুন দেওয়া হয়েছে। এক কথায় বলতে গেলে, ফ্রান্সের পুরো রেল নেটওয়ার্ক লন্ডভন্ড করে ফেলেছে হামলাকারীরা।
শুক্রবার (২৬ জুলাই) ফ্রান্সের স্থানীয় সময় সকালে এএসএনসিফের পক্ষ থেকে বিবৃতিটি দেওয়া হয়। এতে বলা হয়, ‘সিএনএসএফ সন্ত্রাসী হামলার শিকার।’ গত বৃহস্পতিবার রাতে আটলান্টিক, উত্তরাঞ্চল ও পূর্বাঞ্চলের লাইনের অনেক রেলগাড়ি ও স্টেশনে আগুন দিয়েছে দুর্বৃত্তরা, অনেক জায়গায় রেললাইন উপড়ে ফেলা হয়েছে। বিবৃতিতে বলা হয়, ‘আমাদের মেরামতের কাজ ইতিমধ্যে শুরু হয়েছে। এতে কিছু সময় ব্যয় হবে। যাত্রী সাধারণকে ধৈর্য ধারণের জন্য অনুরোধ করা হচ্ছে।’
ফ্রান্সের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর এক কর্মকর্তার মতে এটি বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়। হামলার ধরন ও আলামত দেখে তারা ধারণা করছেন, এটি পূর্বপরিকল্পিত সহিংসতা। অলিম্পিকের আসরকে বাধাগ্রস্ত করতে এ ধরনের হামলা চালানো হয়েছে বলে মনে করছেন তারা।
বৃহস্পতিবার রাতে রেল নেটওয়ার্কে যে নাশকতা হলো, তার দায় এখন পর্যন্ত কোনো ব্যক্তি বা গোষ্ঠী স্বীকার করেনি। পরিবহনমন্ত্রী প্যাট্রিস ভারগ্রিয়েট এই ঘটনাকে অপরাধী তৎপরতা আখ্যা দিয়েছেন। প্যারিসের পুলিশপ্রধান জানিয়েছেন, রাজধানীসহ দেশজুড়ে রেল স্টেশনগুলোতে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে।
ফ্রান্সের ক্রীড়ামন্ত্রী অ্যামেলি ওউদেয়া-ক্যাস্তেরা দেশটির টেলিভিশন চ্যানেল বিএফএম টিভিকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে রেল নেটওয়ার্কে হামলার এই ঘটনাকে ‘ধ্বংসাত্মক’ উল্লেখ করেন। বলেন, ‘আমরা হতবাক হয়ে গেছি।’