সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪

রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটিকে যুগোপযোগী গড়ে তোলা হবে: ডা. কবীর চৌধুরী

বাংলাদেশ রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটির সদ্য নিয়োগপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. মো. উবায়দুল কবীর চৌধুরী (ডা. এম. ইউ কবীর চৌধুরী) বলেছেন,  জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান আমাদের স্বাধীনতা দিয়েছেন। তার স্বপ্ন ছিল একটি সুখী সমৃদ্ধশালী উন্নত বাংলাদেশের। বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন বাস্তবায়নে নিরলস কাজ করে যাচ্ছেন তারই সুযোগ্য কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আমরা সবাই মিলে প্রধানমন্ত্রীর স্বপ্ন বাস্তবায়নে কাজ করব।
বুধবার (৮ মে) সকালে বাংলাদেশ রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটির জাতীয় সদর দফতরে “বিশ্ব রেড ক্রস ও রেড ক্রিসেন্ট দিবস” পালন উপলক্ষ্যে এক আলোচনা সভার প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, আমাদের লক্ষ্য স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণ। আমাদের স্বেচ্ছাসেবকরা বস্তি থেকে শুরু করে ঘূর্ণিঝড়, খরা, বন্যায়  বিপদে- আপদে প্রতিটি ঘরে ঘরে গিয়ে মানুষকে সাহায্য করে। কিন্তু যাদের রেডিও-টেলিভিশন  এবং স্মার্ট ফোন নেই তাদের অনেকেই বিপদের কথা জানতে পারে না। কিন্তু আমাদের কর্মী ও স্বেচ্ছাসেবকরা নিজ উদ্যোগ্যে এবং মাইকিং করে সেই কাজ করে যাচ্ছেন। এখানে আমরা সবাই দেওয়ার জন্য এসেছি কিছু নেওয়ার জন্য নয়। তাই বাংলাদেশ রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটিকে আধুনিক, দক্ষ ও যুগোপযোগী গড়ে তোলা হবে।
এর আগে জাতীয় পতাকা ও রেড ক্রিসেন্ট পতাকা উত্তোলনের মধ্য দিয়ে দিবসের কর্মসূচী শুরু হয়। বিশেষ এই দিবস উপলক্ষ্যে শান্তির প্রতীক পায়রা ও বেলুন উড়িয়ে সোসাইটির জাতীয় সদর দফতর থেকে বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা বের হয়। শোভাযাত্রাটি হলি ফ্যামিলি রেড ক্রিসেন্ট মেডিকেল কলেজ প্রাঙ্গণে শেষ হয়। সোসাইটির যুব স্বেচ্ছাসেবক ও সর্বস্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা এতে অংশ নেয়।
দিবস উপলক্ষ্যে সোসাইটির রক্তকেন্দ্রগুলোতে স্বেচ্ছায় রক্তদান কর্মসূচী ও আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়। ফুল ও খাবার বিতরণ করা হয় রাজধানীর হলি ফ্যমিলি রেড ক্রিসেন্ট হাসপাতালের রোগীদের মাঝে। জাতীয় সদর দফতরের পাশাপাশি সারাদেশে রেড ক্রিসেন্টের ৬৮টি ইউনিট তাদের নিজ নিজ আয়োজনে উদযাপন করে দিবসটি।
এসময় সোসাইটির ভাইস চেয়ারম্যান লুৎফুর রহমান চৌধুরী হেলাল, বোর্ড সদস্য মুন্সী কামরুজ্জামান কাজল, এ্যাড. সোহানা তাহমিনা, রাজিয়া সুলতানা লুনা, মহাসচিব কাজী শফিকুল আযম, উপ-মহাসচিব সুলতান আহমেদ, বিভিন্ন বিভাগের পরিচালকসহ সোসাইটির সকল স্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারী, যুব স্বেচ্ছাসেবকরা, আইএফআরসি, আইসিআরসি এবং পার্টনার ন্যাশনাল সোসাইটির প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।
দিবস উপলক্ষ্যে সংক্ষিপ্ত বক্তব্যে অধ্যাপক ডা. মো. উবায়দুল কবীর চৌধুরী বলেন, প্রতিটি দুর্যোগে আমাদের কর্মী ও স্বেচ্ছাসেবকরা আর্তমানবতার সেবায় উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত স্থাপন করে, যা সোসাইটিকে আরো গতিশীল করছে। মানবতাকে বাঁচিয়ে রাখতে জীন হেনরি ডুনান্টের প্রতিষ্ঠা করা এই সংগঠন আরো অগ্রণী ভূমিকা পালন করবে বলে আমার বিশ্বাস।
তিনি বলেন, আমাদের সাত লক্ষ স্বেচ্ছাসেবক রয়েছে। আমরা মানবতার সেবায় কাজ করছি। হয়তো আমাদের অনেক কিছুর অভাব আছে কিন্তু আমরা যে কার্যক্রমগুলো করছি তা হয়তো  সাংবাদিকসহ দেশের অনেক মানুষই জানেন না। তাদেরকে আমাদের কর্মকাণ্ড সর্ম্পকে জানাতে হবে। প্রচার ও প্রসার বাড়াতে হবে। কারণ প্রচারের প্রসার হবে আমাদের কাজ।
আয়োজকরা জানায়, যুদ্ধহীন মানবিক পৃথিবী প্রতিষ্ঠায় বিশ্বব্যাপী রেড ক্রস রেড ক্রিসেন্ট আন্দোলনের ৭টি মূলনীতি ও মানবসেবামূলক কার্যক্রমকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে এ বছর দিবসটির প্রতিপাদ্য নির্ধারণ করা হয়  “বাঁচিয়ে রাখি মানবতা”। বিশ্বের ১৯১টি দেশের ন্যায় বাংলাদেশেও যথাযোগ্য মর্যাদা ও গুরুত্বের সাথে পালিত হয় দিবসটি।
উল্লেখ্য, ১৯৭৩ সালের ৩১ মার্চ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বাংলাদেশ রেডক্রস সোসাইটি আদেশ (পিও-২৬) জারি করেন। এই আদেশের বলে, ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর থেকে বাংলাদেশ রেডক্রস সোসাইটি স্বীকৃতি লাভ করে। এরপর, ১৯৭৩ সালের ২০ সেপ্টেম্বর তেহরানে রেড ক্রসের ২২তম আন্তর্জাতিক সম্মেলনে বাংলাদেশ রেড ক্রস সোসাইটি আন্তর্জাতিকভাবে পূর্ণ স্বীকৃতি লাভ করে। ১৯৮৮ সালে সংগঠনটির নাম পরিবর্তন করে রাখা হয় বাংলাদেশ রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটি।

সম্পর্কিত পোস্ট