- মানিকগঞ্জ প্রতিনিধি
প্রমত্তা পদ্মার ভাঙনের কবলে পড়েছে মানিকগঞ্জের হরিরামপুর উপজেলার সুতালড়ী ৪১ নং রামচন্দ্রপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। ইতিমধ্যে বিদ্যালয়টির এক-তৃতীয়াংশের বেশি নদীগর্ভে বিলিন হয়ে গেছে। ভাঙন অব্যাহত থাকলে আগামী কয়েক দিনের মধ্যেই বিদ্যালয়টি সম্পূর্ণ বিলীন হয়ে যাওয়ার শঙ্কা রয়েছে।
শনিবার (৭ আগস্ট ২০২১) বালিয়াগোপা গ্রামের ইউনুস কাজী বলেন, ‘১৫ দিন আগেও বিদ্যালয় থেকে নদী ৫০ থেকে ৬০ ফুট দূরে ছিল। ভাঙন রোধে ১ তারিখ থেকে জিও ব্যাগ ডাম্পিং করে পানি উন্নয়ন বোর্ড। তাতেও বিদ্যালয় রক্ষা পেলো না।’
হরিরামপুর উপজেলার ধুলশুড়া এলাকায় ১৯৩৭ সালে বিদ্যালয়টি স্থাপিত হয়েছিল। ভাঙনের কবলে পড়ায় পরবর্তীতে সুতালড়ী ইউনিয়নে স্থানান্তর করা হয়। ২০০৭ সালে বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত প্রাথমিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান পুনর্বাসন/পুনঃনির্মাণ প্রকল্পের আওতায় বিদ্যালয়টির জন্য দুই তলা বিশিষ্ট পাকা ভবন নির্মাণ করা হয়।
সুতালড়ী ইউনিয়নের রামচন্দ্রপুর গ্রামের মো. নাজমুল হাসান বলেন, ‘পানি উন্নয়ন বোর্ড যদি কিছু দিন আগে বিদ্যালয়টি রক্ষার উদ্যোগ নিতো, তাহলে হয়তো বিদ্যালয়টি রক্ষা করা যেত।’
জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা তাপস কুমার অধিকারী বলেন, ‘বিদ্যালয়ের প্রায় এক তৃতীয়াংশ ইতিমধ্যেই নদীগর্ভে চলে গেছে। গত বছরও বিদ্যালয়ের সীমা থেকে নদী প্রায় আধা কিলোমিটার দূরে ছিল। এ বছর পাড় ভাঙতে ভাঙতে নদী কাছে চলে আসে। উপজেলা শিক্ষা অফিস থেকে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার মাধ্যমে পানি উন্নয়ন বোর্ডে লিখিতভাবে জানানো হয়েছিল। তারাও বালুভর্তি জিও ব্যাগ ফেলে ভাঙন ঠেকানোর চেষ্টা করেছে।’
মানিকগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. মাঈন উদ্দিন বলেন, ‘ভাঙন কবলিত চরাঞ্চলটি আমাদের কর্মপরীধির বাহিরে। তারপরও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার চিঠি পাওয়ার পরে ১ আগস্ট থেকে জরুরিভিত্তিতে ২০০ মিটার অংশে প্রায় নয় হাজার জিও ব্যাগ ডাম্পিং করা হয়। কিন্তু স্রোত এত বেশি যে, বিদ্যালয়টিকে ভাঙনের হাত থেকে রক্ষা করা গেল না।’
বিদ্যালয় ছাড়াও, নদী ভাঙনে গত এক মাসে ওই এলাকার শতাধিক পরিবার তাদের বসত-ভিটা হারিয়েছেন। নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে কৃষি জমি, বিভিন্ন ফলের বাগান ও স্থাপনা।