মঙ্গলবার, ২৪ ডিসেম্বর ২০২৪

ড্রোন হামলার পরিকল্পনা করেছিল নব্য জেএমবির সদস্য ফোরকান

  • নিজস্ব প্রতিবেদক

নব্য জেএমবির সদস্য ও অনলাইনে বোমা তৈরির প্রশিক্ষক এবং কারিগর জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র জাহিদ হাসান ওরফে বোমা জাহিদকে গ্রেফতারের পর চাঞ্চলকর তথ্য জানিয়েছে কাউন্টার টেররিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম ইউনিট (সিটিটিসি)। সিটিটিসি জানিয়েছে, ফোরকানের নির্দেশনায় গত কয়েক বছরে ১০-১২টি পুলিশ বক্সে বোমা হামলার চেষ্টা চালায় নব্য জেএমবির সদস্যরা।

বুধবার (১১ আগস্ট ২০২১) দুপুরে ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম ইউনিট (সিটিটিসি) প্রধান পুলিশের উপ-মহাপরিদর্শক মো. আসাদুজ্জামান। তিনি জানান, মঙ্গলবার রাতে রাজধানীর কাফরুল থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়।

সংবাদ সম্মেলনে মো. আসাদুজ্জামান জানান, অনলাইনে বিভিন্ন সিক্রেট অ্যাপ ব্যবহার করে বোমা তৈরির প্রশিক্ষণ দিতেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র জাহিদ হাসান ওরফে রাজু ওরফে ইসমাঈল হাসান ওরফে ফোরকান ভাই। তারই নির্দেশনায় গত কয়েক বছরে ১০-১২টি পুলিশ বক্সে বোমা হামলার চেষ্টা চালায় নব্য জেএমবির সদস্যরা।

সবশেষ এই ফোরকান ড্রোন বানানোর পরিকল্পনা করেছিলেন। ড্রোনের সঙ্গে বিস্ফোরক যুক্ত করে হামলার পরিকল্পনার পাশাপাশি নব্য জেএমবির সামরিক শাখার প্রধান নিযুক্ত হয়ে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা, পুলিশ বক্সে হামলার পরিকল্পনার সঙ্গেও তিনি জড়িত ছিলেন। আর সংগঠনের আমিরের নির্দেশে যেসব হামলার ঘটনা ঘটেছে সেসব হামলায় সমন্বয়কের ভূমিকা পালন করেন তিনি।

No description available.তিনি বলেন, ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের সিটিটিসির বোম ডিসপোজাল ইউনিটের একটি টিম বিশেষ অভিযান পরিচালনা করে নব্য জেএমবির সামরিক শাখার প্রধান প্রশিক্ষক ও বোমা প্রস্তুতকারকসহ তিন জনকে গ্রেফতার করে।

বুধবার রাতে রাজধানীর কাফরুল থানা এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদেরকে গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতাররা হলেন- জাহিদ হাসান ওরফে রাজু ওরফে ইসমাঈল হাসান ওরফে ফোরকান ভাই, সাইফুল ইসলাম মারুফ ওরফে বাসিরা ও মো. রুম্মান হোসেন ফাহাদ ওরফে আব্দুল্লাহ। এ সময় তাদের কাছ থেকে বিস্ফোরক পদার্থ, জিআই পাইপ, রিমোট কন্ট্রোল ডিভাইস, লোহার বল, সাংগঠনিক কাজে ব্যবহৃত তিনটি মোবাইল ফোন ও একটি ট্যাব উদ্ধার করা হয়।

সিটিটিসি প্রধান জানান, সর্বশেষ এই ফোরকান ড্রোন বানানোর পরিকল্পনা করেছিল। ড্রোনের সঙ্গে এক্সপ্লোসিভ যুক্ত করে কোনো জায়গায় আক্রমণের পরিকল্পনার পাশাপাশি নব্য জেএমবির সামরিক শাখার প্রধান নিযুক্ত হয়ে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা, পুলিশ বক্সে হামলার পরিকল্পনার সঙ্গেও সে জড়িত ছিল। আমিরের নির্দেশে যেসব হামলার ঘটনা ঘটেছে সেসব হামলায় সমন্বয়কের ভূমিকা পালন করে ফোরকান।

‘জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের মেধাবী ছাত্র ফোরকান পড়ছিলেন রসায়ন বিভাগে। তার সবচেয়ে বড় পরিচিতি ছিল নব্য জেএমবির বোমা তৈরির অন্যতম কারিগর হিসেবে। সে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় হতে রসায়নে অনার্স সম্পন্ন করেছে।’

তিনি বলেন, জঙ্গিবাদে সম্পৃক্ত হওয়ায় এবং হিজরত করায় মাস্টার্স সম্পন্ন করতে পারেনি ফোরকান। ২০১৬ সালে অনলাইনে ‘হোয়াইট হাউজের মুফতি’ নামে আইডির মাধ্যমে উগ্রবাদে উদ্বুদ্ধ হয়ে নব্য জেএমবির তৎকালীন আমির মুসার হাত ধরে সে এই সংগঠনে যোগদান করে। আমির মুসার সঙ্গে কাজ করার সুবাদে সংগঠনের ওই সময়ের শীর্ষস্থানীয় জঙ্গিদের নজরে আসে এবং তাদের সার্বক্ষণিক সঙ্গী হিসেবে কাজ করে।

সিটিটিসির স্পেশাল অ্যাকশন গ্রুপের উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিসি) আব্দুল মান্নানের তত্ত্বাবধানে অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার (এডিসি) রহমত উল্লাহ চৌধুরীর নির্দেশনায় এবং মো. মাহমুদুজ্জামানের নেতৃত্বে এই অভিযান পরিচালিত হয় বলেও জানান সিটিটিসি প্রধান আসাদুজ্জামান।

সম্পর্কিত পোস্ট